ঈদ সামনে রেখে ফেনীর শপিংমলগুলো সাজানো হয়েছে আকর্ষণীয়ভাবে। সুদৃশ্য তোরণ, আলোকসজ্জাসহ নানা ভাবে সাজানো হয়েছে শহরের প্রায় সব শপিংমল।
শহরের শপিংমলগুলোর মধ্যে গ্র্যান্ড হক টাওয়ার, ফেনী সেন্টার, তমিজিয়া শপিং কমপ্লেক্স, জুম্মা শপিং সেন্টার, শহীদ হোসেন উদ্দিন বিপণি বিতান, এফ রহমান এসি মার্কেট, ফেনী সুপার মার্কেট, জহিরিয়া টাওয়ার, গ্রিন টাওয়ার, আপ্যায়ন আফরোজ, আলী আহাম্মদ টাওয়ারসহ ফেনী বড় বাজারের আশপাশের শপিংমলগুলোতে ক্রেতা সমাগম বেশি। শহরের বড় বাজারের দোকানগুলোতেও জমে উঠেছে বেচাকেনা। এছাড়া, শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কে বেশ কিছু নামি-দামি ব্র্যান্ডের পোশাকের দোকান গড়ে উঠেছে। এরমধ্যে রয়েছে নকশা, নন্দন, নন্দন প্লাস, টুয়েলভ, ইনফিনিটি, জেন্টেল পার্ক, ফ্যাশন ওয়ার্ল্ড, ট্রেক্স পয়েন্ট, ফলো ফ্যাশন, ইজি ফ্যাশন প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এ দোকানগুলোতে উচ্চ মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত মানুষদের আনাগোনা বেশি।
শহরের কুমিল্লা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি দৃষ্টিনন্দন বাচ্চাদের পোশাকের দোকান। এসব দোকানে দেশি-বিদেশি উন্নতমানের পোশাকের সংগ্রহ রয়েছে।
‘ঘাস ফডিং’-এর স্বত্ত্বাধিকারী আরাফাত খান বাংলানিউজকে বলেন, চীন, ভারত, জাপানসহ নানা দেশের পোশাক আনা হয়েছে বাচ্চাদের জন্য। এবার গরম বেশি ও চীনের কাপড়গুলো ভারতীয় কাপড়ের চেয়ে পাতলা হওয়ায় সেগুলোর চাহিদা বেশি।
নন্দনের বিক্রেতা সাদ্দাম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এবারের ঈদে তরুণীদের পছন্দের তালিকায় কটি, ফোর-পিস, ভারতীয় বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক ও চীনের থ্রি-পিসের চাহিদা বেশি।
শহীদ হোসেন উদ্দিন বিপনী বিতানে শাপলা বস্ত্র বিতানের স্বত্ত্বাধিকারী দাউদুল ইসলাম মাসুদ বাংলানিউজকে বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এবার সুতি থ্রি-পিস ও গোল জামার চাহিদাই বেশি দেখা যাচ্ছে। শাড়ির মধ্যে জর্জেট ও কাতান শাড়ি বেশি বিক্রি হচ্ছে।
তমিজিয়া শপিং কমপ্লেক্সকে পাঞ্জাবি মার্কেট বলা চলে। এ মার্কেটের প্রায় প্রতিটি দোকানেই পাঞ্জাবির কাপড় বিক্রি ও সেলাইয়ের কাজ করা হয়। দোকানগুলোতে রীতিমতো বেচাকেনার ধুম পড়েছে। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা ছুটে আসছেন এখানে।
মার্কেটের একাধিক দোকান মালিক বলেন, কাজের চাপ এতো বেশি যে, চলতি সপ্তাহের পরে আর নতুন অর্ডার নেওয়া হবে না।
নিম্নবিত্তদের ঈদের কেনাকাটার জনপ্রিয় জায়গা ফেনীর রাজাঝির দীঘির পাড়। কিন্তু এবার সে চিত্র নেই। সংস্কারের কারণে দীঘির পাড়ের ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করায় সেখানে প্রতিবারের মতো গরিবের ঈদবাজার জমেনি। দীঘির দক্ষিণ পাড়ে কিছু দোকান থাকলেও লোকজনের ভিড় আগের মতো নেই।
দর্জি দোকানগুলোতে নির্ঘুম রাত কাটছে কর্মচারীদের। সকাল থেকে ভোর রাত পর্যন্ত সেলাই কাজ করে যাচ্ছেন সবাই। অন্য সময়ের তুলনায় আয় বেশি হওয়ায় কষ্ট হলেও তা হাসি মুখে মেনে নিয়েছেন সেলাইকর্মীরা।
জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে ঈদবাজার মনিটরিং ও বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, সেজন্য প্রতিটি শপিংমলের সামনে রয়েছে পুলিশ পাহারা। বাজার দর সহনীয় পর্যায়ে রাখতে চলছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান।
ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজুল ইসলাম হাজারী বাংলানিউজকে বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এবার শহরের শপিংমলগুলোতে বেচাকেনা কিছুটা কম। প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাজারগুলোতে বড় বড় শপিংমল গড়ে ওঠায় গ্রাম বা উপজেলা পর্যায়ের ক্রেতারা আর শহরে আসছেন না। তাছাড়া, জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যাওয়ায় মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রবাসীরা দেশে ফেরত আসার কারণেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ঈদবাজারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৯
এসএইচডি/একে