ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ঈদে জমজমাট অনলাইন কেনাকাটা

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫২ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৯
ঈদে জমজমাট অনলাইন কেনাকাটা

ঢাকা: ঈদ উপলক্ষে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত পুরো দেশবাসী। ছোট-বড় বিপণিবিতানগুলোর পাশাপাশি ঈদের জমজমাট কেনাকাটা চলছে অনলাইন ভিত্তিক ই-কমার্স এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এফ-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোতেও।

অন্য যেকোন সময়ে অনলাইনে ঈদ কেনাকাটার তুলনায় এবার সবথেকে বেশি লেনদেন হওয়ার আশা করছেন দেশীয় বাজারের ই-কমার্স খাত সংশ্লিষ্টরা। রাজধানী ঢাকা এবং বিভাগীয় শহরগুলোর বাইরের এলাকার মানুষেরা অনলাইনে সেরে নিচ্ছেন ঈদ কেনাকাটা।

পিকাবু, দারাজ, অথবা ডট কম, বাগদুম, আজকের ডিল, ইভ্যালি’র মতো অনলাইন মার্কেট প্লেসগুলোর প্রতি আস্থা রাখছেন ক্রেতারা। এছাড়াও গ্রাহকদের অর্ডারে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে এফ-কমার্সের বহুল জনপ্রিয় পেজ ও গ্রুপ পরিচালনাকারীদের।  
 
অনলাইনে নিয়মিত কেনাকাটা করেন এমন বেশ কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সড়কে যানজট এবং শপিং সেন্টারগুলোর ভিড়ের যন্ত্রণায় অনলাইনই হয়ে উঠছে অনেকের কেনাকাটার প্রথম পছন্দ। অনলাইন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের অথেনটিক শপ, পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখার প্রতি ব্র্যান্ডগুলোর প্রতিশ্রুতি এবং উন্নত গ্রাহক সেবার কারণে গ্রাহকেরাও আকৃষ্ট হচ্ছেন কেনাকাটার আধুনিকতম এ মাধ্যমে। কেনাকাটায় সাধারণ দামের ওপর মূল্যছাড় এবং সর্বোপরি অনলাইনে মূল্য পরিশোধ করলে ক্যাশব্যাকের অফার লুফে নিচ্ছেন গ্রাহকেরা। নারী ও পুরুষ সবধরনের ক্রেতারাই কিনছেন ঈদের নানান পণ্য। নারী ও পুরুষদের পোশাক, জুতা, কসমেটিকস, ইলেকট্রনিক্স ও গ্যাজেটস, ফ্যাশন আইটেম সহ প্রায় সবধরনের পণ্যই অনলাইনে কিনছেন গ্রাহকেরা।
 
রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা কাশফিয়া শ্রাবন্তী শান্তা অনলাইনে কেনাকাটার অভিজ্ঞতা দিতে গিয়ে বলেন, সড়কে এমনিতেই অনেক জ্যাম। আর শপিং মলগুলোতে মানুষের অনেক ভিড়। সত্যি কথা বলতে এমন অবস্থায় একটি পণ্য কেনার সময় যাচাই করে দেখারও সুযোগ পাওয়া যায় না। তার থেকে ভালো ইন্টারনেট থেকে কেনা। পণ্যের বিস্তারিত দেখা যায়। ক্যাশ অন ডেলিভারিতে বাসায় বসে পণ্য যাচাই করে তারপর দাম পরিশোধ করারও সুযোগ থাকছে। আর অনলাইনে মূল্য পরিশোধ করলে তো আরও ক্যাশব্যাক পাওয়া যায়। তাই অনলাইনই ভালো।
 
ঈদের কেনাকাটায় ঠিক কতো টাকার লেনদেন অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে হয় তার সঠিক হিসাবে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ই-ক্যাবের কাছে না থাকলেও যেকোন বারের থেকে এবার অন্তত ৫০ শতাংশের বেশি আর্থিক লেনদেন হবে বলে আশা সংগঠনটির।

ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বাংলানিউজকে বলেন, এখন আমাদের দেশে ই-কমার্সে বার্ষিক এক হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়, যার বড় অংশই দুই ঈদের সময়ে। আর ঈদ উল ফিতরের সময় এই কেনাকাটার চাপ থাকে সবথেকে বেশি। আমরা আশা করছি এবারের ঈদে লেনদেন অন্যান্য সময়ের থেকে ৫০ শতাংশ বেড়ে যাবে। আমাদের সংগঠনে ৯৫০টিরও বেশি সদস্য প্রতিষ্ঠান আছে যারা এখন প্রতিদিন প্রায় ৪০ হাজার অর্ডার গ্রাহকদের কাছে সরবরাহ করছেন। অন্যান্য সময়ে এর পরিমাণ ২০ হাজারের কিছু বেশি থাকে। ই-কমার্সগুলোও গ্রাহকদের সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও গ্রাহকদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের সংখ্যাও বেড়েছে এখানে। যার কারণে গ্রাহকেরা নানাবিধ পণ্যের সমাহার ঘরে বসে এক জায়গাতেই খুব সহজে পাচ্ছেন। ফলে ই-কমার্সের পুরো ইকো-সিস্টেমেই একটা বড় ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। এসব কিছুরই ফলাফল ই-কমার্সে গ্রাহকদের এ আস্থা।
 
দেশের অন্যতম বৃহৎ ই-কমার্স ভিত্তিক মার্কেটপ্লেস দারাজ বাংলাদেশের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান সায়ন্তনী ত্বিষা বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ই-কমার্স শপিং ট্রেন্ডের ইতিহাসে একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে বাংলাদেশ। এটি উভয় ভোক্তাদের এবং ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বিশাল সুযোগ তৈরি করেছে। আমরা সবসময়ই দেখি ঈদের বাজার মানেই ভিড়-ভাট্টা, এর মধ্যে খুব সহজেই ক্রেতাদের স্বস্তির ব্যবস্থা করছে অনলাইন শপিং। আজকাল সময় ও শক্তি বাঁচাতে সবচেয়ে সহজ উপায় হিসেবে ক্রেতাগণ অনলাইন শপিংকেই বেশি প্রাধান্যদিচ্ছে, সর্বোপরি, বলা চলে যে অনলাইন শপিং ডিজিটাল ব্যবস্থায় সুবিধা গ্রহণে মানুষকে আগ্রহী করে তুলছে এবং ডিজিটালবাংলাদেশ গঠনেও কার্যকরী ভূমিকা রাখছে। অনলাইন কেনাকাটায় গ্রাহকদের আগ্রহ এবং আস্থার একটি উদাহরণ নিজেদের দিয়েই দেওয়া যায়। এবারের ঈদে আমাদের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ঈদ ক্যাম্পেইন শেষ হওয়ার আগেই সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এ খাত যে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তারই একটি নমুনার চিত্র এটি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৯
এসএইচএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।