ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রুপালি ইলিশের অপেক্ষায় জেলেরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২০ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০১৯
রুপালি ইলিশের অপেক্ষায় জেলেরা

চাঁদপুর: চাঁদপুর পদ্মা-মেঘনা নদীর উপকূলীয় এলাকায় ৫১ হাজার ১৯০ নিবন্ধিত জেলে পরিবার রয়েছে। বছরের অধিকাংশ সময় তারা নদীতে মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে।

জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় সরকার চলিত বছরের মার্চ-এপ্রিল দুই মাস পদ্মা-মেঘনা নদীতে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করে। কিন্তু এ বছর নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে নেমে ইলিশ না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন জেলেরা।

এদিকে, মা ইলিশ রক্ষায় আগামী আগস্ট মাসের ২২ দিন মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে। অর্থাৎ কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পেতে জেলেদের অপেক্ষায় থাকতে হবে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

সরেজমিনে চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও সদর উপজেলায় জেলে পাড়াগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ জেলেই বেকার সময় পার করছেন। কেউ নৌকা মেরামত, আবার কেউ জাল মেরামত করছেন। নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও মাছ না ধরে বেকার সময় কাটাচ্ছেন তারা।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের মৎস্যজীবী নেতা তছলিম বেপারী বাংলানিউজকে বলেন, ইলিশ আমাদের জেলার ব্র্যান্ডিং পণ্য। ইলিশ রক্ষায় আমরা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা করি। কিন্তু বিশাল নদী এলাকায় হাজার হাজার জেলে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। আমাদের জেলায় জেলেরা নিষেধাজ্ঞার সময় মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকলেও বাইরের জেলার জেলেরা এসে মাছ আহরণ করে।

রুপালি ইলিশ।  ছবি: বাংলানিউজ

তিনি আরও বলেন, নদীর পানি দূষণ, চর জেগে ওঠাসহ বিভিন্ন কারণে নদীতে ইলিশের বিচরণ কমেছে। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার এগিয়ে আসলে আমাদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা থাকবে। ইলিশের উৎপাদন বাড়লে বছর জুড়ে রুপালি ইলিশের স্বাদ গ্রহণ করা যাবে।

মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর এলাকার জেলে মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সাগর থেকে মেঘনা নদীতে ইলিশ আসার পথে বিভিন্ন বাধার সৃষ্টি হয়। চর জেগে ওঠা পানি দূষণের কারণে আমার আগের মত রুপালি ইলিশ পাচ্ছি না। এ কারণে আমাদের উপজেলার অনেক জেলে এখন বেকার রয়েছে।

সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের জেলে শাহজাহান বাংলানিউজকে বলেন, ইলিশ পাওয়ার আশায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে নতুন জাল তৈরি করেছে। কিন্তু ইলিশের দেখা মিলছে না। আমরা অন্য কাজ করেও অভ্যস্ত নই। তাই ইলিশ পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি। নদীতে ইলিশের বিচরণ শুরু হলে আহরণে নামবো।

জাল মেরামত করছেন জেলেরা।  ছবি: বাংলানিউজ

সদরের হানারচর ইউনিয়নের মৎস্য ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান সৈয়াল বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এলাকায় প্রায় ১০০ জেলে পরিবার রয়েছে। প্রতিদিনই ইলিশ পাওয়ার আশায় নদীতে নামেন। এক নৌকায় কমপক্ষে ৭-৯ জন জেলে থাকেন। জ্বালানি খরচসহ যে পরিমাণ খরচ হয়, তাতে যে ইলিশ পাওয়া যায় তাতে জনপ্রতি ২০০ টাকা করেও পায় না। বৃষ্টি ও পাহাড়ি পানি নামলে ইলিশের দেখা মিলবে বলে আশা করছি।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী বাংলানিউজকে বলেন, মে-জুন মাসে ইলিশ একটু কমই থাকে। কারণ মিঠা পানিতে আসা ছোট ইলিশগুলো এ সময়ে সাগরের দিকে চলে যায়। আবার জুলাই আগস্ট মাসের দিকে ডিম ছাড়ার জন্য মিঠা পানিতে আসে। আশাকরি ওই সময় জেলেরা ইলিশ পাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।