শনিবার (০৮ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর ১০ নম্বর এলাকার বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র।
ঈদের আগে যেসব সবজির দাম বেড়েছিল তার মধ্যে ছিল বেগুন, শশা, পেঁপে; আর মাংস, মশলা থেকে শুরু করে রমজান ও ঈদে বাড়তি চাহিদায় থাকা বিভিন্ন পণ্যের দামও বৃদ্ধি পায়।
এছাড়া রাজধানীর বাজারগুলোতে আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মুরগির মাংস। ব্রয়লার মুরগি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়, লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২২৫ থেকে ২৩০ টাকা কেজি, প্রতি পিচ কক বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২৮০ টাকা। আর দেশি মুরগি প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা দরে। এছাড়া তুলনামূলক চাহিদা কম থাকায় খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি।
এদিকে রাজধানীর বাজারগুলোতে সবজির ঘাটতি দেখা গেছে। খুব অল্প পরিমাণে ও কম ধরনের সবজি দেখা গেছে বিক্রেতাদের কাছে। বাজারগুলোতে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, আলু ২০ টাকা, কচুরলতি ৪০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, পটল ৩০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৪০ টাকা, ধুন্দুল ৪০ টাকা, ঝিঙা, চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, শশা ৩০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, লেবু হালি মানভেদে ২০ থেকে ৪০ টাকায়।
সজনে ডাটা ৪০ টাকা কেজি, লাউ প্রতি পিচ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি আঁটি লাউ শাক ২০ থেকে ৩০ টাকা, লাল শাক, পালং শাক ১০ থেকে ২০ টাকা, পুঁই শাক ও ডাটা শাক ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আগের দামেই প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজি দরে। আর আদা ও রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি দরে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১২০ টাকা দরে।
এ বিষয়ে মিরপুরের শেওড়াপাড়া এলাকার এক সবজি বিক্রেতা বাংলানিউজকে জানান, বাজারে এখন সবজির চাহিদা খুব কম। বাজারে মূলত ক্রেতার সংখ্যাই কম। তাই সবজিও কম উঠছে। আর দাম নিয়ে তেমন কোনো দামাদামিও হচ্ছে না ক্রেতাদের সঙ্গে। কারণ দাম তাদের হাতের নাগালেই রয়েছে। আর যেহেতু বিক্রি নেই তাই সবজি কম আনছি পাইকারদের কাছ থেকে।
মাছের চাহিদা কমায় প্রায় সব ধরনের মাছের দাম কেজিতে গড়ে ১০০ টাকা কমে স্থিতিশীল রয়েছে। তবে দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে ব্যবসায়ীদের। বাজারগুলোতে তুলনামূলক ইলিশের দাম বেশি কমেছে। ঈদের আগে বাজারে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের প্রতি পিচ ইলিশ বিক্রি হতো ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায়। যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। আর এর থেকে বড় ইলিশ ঈদের আগে বিক্রি হতো ১৫০০ থেকে ৩০০০ টাকায় প্রতি পিচ। যা এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ২০০০ টাকায়।
এছাড়া রুই কাতলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। তেলাপিয়া কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়, আইড় ৭০০ টাকা, মেনি মাছ ৪০০, বেলে মাছ প্রকারভেদে ৬০০ টাকা, বাইন মাছ ৭০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৭০০ টাকা, পুঁটি ২০০ টাকা, পোয়া ৫০০ টাকা, মলা ৪৫০ টাকা, পাবদা ৭০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ টাকা, শিং ৮০০, দেশি মাগুর ৮০০ টাকা, চাষের পাঙ্গাস ২০০ টাকা, চাষের কৈ ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কাজীপাড়া এলাকায় সুজন নামের এক ক্রেতা বলেন, বাসায় এখনো মাছের চাহিদা দেখিনি। ঈদে মাংসটাই বেশি চলে। তবে ঈদ শেষ হয়েছে, এখন মাছের চাহিদা বাড়বে। কারণ টানা মাংস খেয়ে এখন সবার মাছ খেতে বেশি ভালো লাগবে। আমিও এসেছি এই কারণে মাছ কিনতে।
আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল ও অন্যান্য মুদিপণ্য। বাজারে প্রতি কেজি নাজিরশাইল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, মিনিকেট চাল ৫৫ থেকে ৫২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। স্বর্ণা ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা, বিআর ২৮নম্বর ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ২৬টাকা, প্যাকেট ৩২টাকা, লবণ ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, পোলাউর চাল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা, প্রতি কেজি খোলা আটা ২৭ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা, খোলা ময়দা ২৮ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, খেসারি ডাল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, মসুর ডাল ১০০ থেকে ১১০ টাকা, বুট ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৯
এমএএম/জেডএস