শনিবার (১৫ জুন) দুপুরে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পরবর্তী আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
এফবিসিসিআই'র সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।
এফবিসিসিআই মনে করে এ বাজেট ব্যবসা বান্ধব এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে। এ ধরনের একটি জনমুখী ও ব্যবসা সহায়ক বাজেট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী এবং বাজেট প্রণয়নে সঙ্গে সংশ্লিষ্টকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
এফবিসিসিআই'র সভাপতি বলেন, বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, আর অ্যান্ড ডি, ইনোভেশন ও আইসিটি, অবকাঠামো, আর্থ-সামাজিক, দরিদ্র বিমোচন, মানবসম্পদ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ায় বাজেট যুগোপযোগী। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় মুক্তিযোদ্ধা, বয়স্ক-বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠী, চা শ্রমিকসহ সব উপকারভোগীর সংখ্যা ও আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধি করা মানবিক পদক্ষেপ। এছাড়া যুবকদের মধ্যে ব্যবসা উদ্যোগ সৃষ্টির জন্য একশো কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে যা কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক হবে। মানসম্পন্ন কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সম্প্রসারণের উদ্যোগ আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।
কোনো প্রতিষ্ঠান ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধীদের নিয়োগ দিলে কর রেয়াতের সুবিধা সামাজিক দায়িত্বশীল চর্চাকে উৎসাহিত করবে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে বাজেটে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা বিনিয়োগ, শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থান প্রক্রিয়াকে গতিশীল করবে। এ ধরনের অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) আরো ভূমিকা রাখবে।
নতুন বাজেটে ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাতের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে বৈদেশিক উৎস ইনফ্রাস্ট্রাকচারাল ফান্ডস ও অন্যান্য ফিনান্সিয়াল টুলস’র উপর জোর দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, শিল্পখাতে বিনিয়োগ, উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি, রপ্তানিমুখী শিল্পের বহুমুখী প্রসার, প্রণোদনা ও অধিক প্রতিযোগিতা সক্ষম করাকে উন্নয়ন কৌশল হিসেবে নেওয়া হয়েছে যা ইতিবাচক। বিভিন্ন ডাবল গুডস এবং হোম অ্যাপ্লায়েন্স সেক্টরে শুল্ক সুবিধা দেওয়ার লোকাল ইন্ডাস্ট্রি উৎসাহিত হবে।
বাজেটের কৃষকের স্বার্থে শস্য বিমা চালু একটি প্রগতিশীল উদ্যোগ বছরব্যাপী কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে স্থানীয় পর্যায়ে পর্যাপ্ত গুদাম নির্মাণ উন্নয়নের উদ্যোগ সময়োপযোগী পদক্ষেপ বলে এফবিসিসিআই মনে করে।
শেখ ফাহিম বলেন, ২০২৪ সাল পর্যন্ত কর অবকাশ সুবিধা শিল্পকে উৎসাহিত করবে। তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে এক শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া এবং হ্রাস করা করের হার বহাল রাখার সিদ্ধান্ত রপ্তানি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিশেষ সহায়ক হবে। এছাড়া ক্যান্সারের ওষুধ ও চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত গ্যাস তৈরির কাঁচামালের শুল্ক হার কমানো হয়েছে যা স্বাস্থ্য খাতের জন্য ইতিবাচক।
শেখ ফাহিম আরও বলেন, আমাদের প্রত্যাশা, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি থেকে বৃহৎ সব পর্যায়ে ব্যবসার ক্ষেত্রে কোনো হয়রানি থাকবে না, ভোক্তা পর্যায়ে কোনো খরচ বাড়বে না, ব্যবসা সহজীকরণে ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকবে না, ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত হবে ও করের আওতা বাড়বে।
এ বিষয়ে এফবিসিসিআই’র অধিভুক্ত সব বাণিজ্যিক সংগঠন প্রয়োজনীয় সহায়তা করবে প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নে শুরু থেকেই, সুষ্ঠু মনিটরিং জোরদার করা হলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৪ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৯/আপডেট: ১৫৫৫ ঘণ্টা
এসএমএকে/এএটি