ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কানসাটে আম বেচাকেনা বন্ধ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৮ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৯
কানসাটে আম বেচাকেনা বন্ধ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের সবচেয়ে ‘বড় আম বাজার’ কানসাটে হঠাৎ করে আম কেনাবেচা বন্ধ করে দিয়েছে আড়ৎদার সমিতি। 

শনিবার (১৫ জুন) দুপুর থেকে হঠাৎ করেই আম কেনাবেচা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

সকালে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ৪০ কেজিতে মণ ধরে আড়ৎগুলোতে আম বেচাকেনা করতে হবে এমন নিয়মে ব্যবসায়ীরা আম কেনা বন্ধ করে দেয়।

এতে করে দুপুর থেকে আমের ওজন ও দাম সংক্রান্ত সমস্যার কারণে হঠাৎ করে কানসাটের কেনাবেচা বন্ধ করে দেয় আম আড়ৎদার সমিতি। এতে করে কানসাট মোড়ে আম নিয়ে আসা আম চাষিরা বিপাকে পড়েন। কানসাট-সোনামজিদ মহাসড়কের ১ কিলোমিটার জুড়ে আম চাষিদের দীর্ঘ লাইন লক্ষ্য করা গেছে।  

এ ব্যাপারে মোবারকপুর আম চাষি সেলিম রেজা বাংলানিউজকে জানান, শনিবার আমরা কোনো আম বিক্রি করতে পারিনি, কোনো ক্রেতা নাই। শুক্রবার যে আম ২৮শ টাকা মণ বিক্রি করেছি, সে আম আজকে ১২শ টাকা। এজন্য আমরা কোনো আম বিক্রি করতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, আম আড়ৎদাররা চাঁপাইনবাবগঞ্জের অন্য উপজেলায় ৪০ কেজিতে মণ করে আম কিনবে না।  

অন্যদিকে আম আড়ৎদার সোলেয়মান টানু বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের  ভোলাহাটে ৫০, রহনপুর ৪৮ কেজিতে মণ হলেও শুধু কানসাটে ৪০ কেজিতে মণ আম বিক্রি করতে বাধ্য করছে প্রশাসন। একই জেলায় কিভাবে ভিন্ন ভিন্ন ওজনে আম বিক্রি হয়। সব জায়গায় একই ওজন হতে হবে।

মাদারীপুর এলাকার আম বেপারী নিয়ামতুল্লাহ জানান, তারা ১৫ জন কানসাটে আম কিনতে এসেছিলেন। শুক্রবার তিনি ৪৬ কেজিতে মণ ধরে ২শ মণ আম কিনেন। তার অন্যান্য সহযোগিরাও শুক্রবার প্রচুর পরিমাণে কিনেন, কিন্তু শনিবার হঠাৎ করে ৪০ কেজিতে মণ ধরে আম কেনার নির্দেশের পর তিনিসহ তার সহযোগিরা আম কেনা বন্ধ করে দেন।

তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন আম ব্যবসায়ী ভোলাহাট ও রহনপুর আম কেনার জন্য চলে গেছে। তিনিও রোববার (১৬ জুন) রহনপুরে চলে যাবেন।

কানসাট আম আড়ৎদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক উমর ফারুক (টিপু) বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার রহনপুর, ভোলাহাট সহ বিভিন্ন জায়গায় আম ৫০ কেজিতে মণ ধরে কেনাবেচা করে। কিন্তু শুধু কানসাট ৪০ কেজিতে মণ ধরে আম কিনতে নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। এমতাবস্থায় বাইরের আম বেপারীরা শনিবার সকাল থেকে আম কেনাবেচা করেননি। প্রশাসনের দ্বিমুখী আচরণের কারণে বেপারিরা অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছেন। এতে করে কানসাট ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছে।  

এ প্রসঙ্গে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৌধুরী রওশন ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, গত ২ বছর আগে প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী সারা জেলায় একই নিয়মে আম বেচাকেনার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তিনিও শিবগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি বাজারে ৪০ কেজিতে মণ ধরে আম কেনাবেচার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে অন্য উপজেলায় কি হচ্ছে এটা তার এখতিয়ার বহির্ভূত। অবশ্য তিনি অন্য উপজেলায় আম ওজনে বেশি দেওয়া হলে তার জেলা প্রশাসককে জানাবেন বলে এ প্রতিবেদককে আশ্বস্ত করেন।

২০১৭ সালে আমের ওজন নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হলে কানসাটে তৎকালীন সংসদ সদস্য, পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসক আম সংশ্লিষ্টদের নিয়ে ওজন, ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহার, নগদ টাকায় আম কেনাবেচাসহ ৭ দফা নির্দেশনা জারি করেন। যেটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার প্রতিটি উপজেলায় মেনে চলার নির্দেশনার কথা থাকলে শিবগঞ্জ ছাড়া অন্যান্য উপজেলায় মানা হচ্ছে না।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।