একটু বাড়তি আয়ের জন্য কতোই না খাটুনি খাটতে হয় এসব নারীদের। সবকিছুর ঊর্ধ্বমুখী বাজারে তাদের মতো অভাবী সংসারের মানুষদের বেঁচে থাকাটা যেন দিন দিন কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
জমিজমাও নেই তেমন একটা। সহায় সম্পদ বলতে শরীরটাই আছে তাদের। আছে মাথা গোঁজার সামান্য ঠাঁই। কারও আবার সেইটুকুও নেই। অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের কারও স্বামী দিনমজুরের কাজ করেন। আবার কারও স্বামী ভ্যান-রিকশা চালান। অনেকেই আবার বাড়িতে স্ত্রীর সঙ্গে বাঁশ শিল্পের কাজ করেন। সবমিলে বাঁশ শিল্পেই বাড়তি আয়ের স্বপ্ন বুনছেন গ্রামীণ নারীরা।
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার বীরগ্রামে দেখা যায়, বাঁশের চাটাই তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বেশ কয়েকজন নারীরা। পুরুষরা দা দিয়ে বাঁশ কাটাকাটি করছিলেন। এছাড়া বাঁশ কিনে আনা, তৈরি করা পণ্য বাজারে বিক্রি এসব কাজ পুরুষরাই করে থাকেন। সাংসারিক কাজের ফাঁকে ফাঁকে চাটাই তৈরির কাজটি করেন নারীরা। প্রত্যহ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে তাদের এ কর্মযজ্ঞতা।
রাণী বালা নামের এক নারী বাংলানিউজকে জানান, স্বামীর বয়স হয়েছে। তেমন একটা কাজ করতে পারে না। শরীর ভালো থাকলে দিনমজুরের কাজ করেন। অভাবী সংসার। তার একার আয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই পেটের তাগিদে এ বয়সেও বাঁশের কাজ হাতে তুলে নিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
কিশোরী লায়লা জানান, অভারের সংসারে ছোট কাল থেকেই বাঁশের কাজ করে আসছেন তিনি। বিয়ের পর স্বামীর সংসারে এসে মুখোমুখি হন অভাবের। তাই সেখানেও বাঁশ শিল্পের কাজ করছেন।
তিনি জানান, স্বামী কোনো রিকশা আবার কোনো দিন ভ্যান চালান। মাঝে মধ্যে আবার দিনমজুরের কাজও করেন। তাই তার একার আয়ে সংসার চালানো দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছিলো। তাই স্বামীর ঘরে এসেও বাঁশের কাজ শুরু করেন। তিনি চাটাই তৈরি করেন। আর স্বামী অন্য কাজ করেন। এভাবে দু’জনের আয়ে চলছে তাদের সংসার।
সুকুমার নামের এক ব্যক্তি জানান, আধুনিকতার ছোঁয়ায় বাঁশের তৈরি চাটাইয়ের চাহিদা আগের মতো নেই। তবু অভাবী সংসারে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে তো আর পেটে ভাত যাবে না। তাই স্ত্রী চাটাই তৈরি করেন আর তিনি যখন যে কাজ পান তা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৩ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৯
এমবিএইচ/ওএইচ/