বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) এ বিষয়ে পাঁচটি আইআইজি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছে বিটিআরসি।
জানা যায়, গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসির রাজস্ব পাওনা ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ও রবির কাছে পাওনা ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
ব্যান্ডউইথ কমিয়ে দেওয়ার নির্দেশনায় চিঠিতে বলা হয়েছে, বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও অডিট আপত্তিতে চূড়ান্ত দাবিকৃত অর্থ পরিশোধ না করায় গ্রামীণফোন ও রবির ব্যান্ডউইথ ক্যাপাসিটি সীমিত করার নির্দেশনা দেওয়া হলো।
অবিলম্বে এ আদেশ কার্যকর করতে নির্দেশ দিয়ে চিঠিতে আরও বলা হয়, পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান দু’টিকে নতুন করে ব্যান্ডউইথ বরাদ্দ ও বৃদ্ধি করা থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
এদিকে, দেশের শীর্ষ দুই মোবাইল ফোন অপারেটরের ব্যান্ডউইথ কমিয়ে দিলে গ্রাহকরা ইন্টারনেট সমস্যায় পড়বেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিনের পাওনা আদায়ের জন্য বিটিআরসি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়ে নির্দেশনা জারি করেছিল। এ সময়ের মধ্যে পাওনা আদায় না হলে প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
পাওনা আদায়ের জন্য গত ২ এপ্রিল, ১২ মে ও ১৩ জুন দুই অপারেটরকে তাগাদাপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু অডিট আপত্তির বকেয়া অর্থ পরিশোধ না করায় ব্যান্ডউইথ ক্যাপাসিটি গ্রামীণফোনের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ ও রবির ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হবে।
বিটিআরসির এক কর্মকর্তা জানান, অডিটের পরও পাওনা টাকা না দেওয়ায় সব ধরনের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শেষে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে।
বিটিআরসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া উইং) মো. জাকির হোসেন খান এক বিবৃতিতে জানান, গ্রামীণফোন ও রবির কাছে অডিট আপত্তির বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কমিশন আশা করছে, শিগগিরই এ পাওনা পরিশোধ করে অপারেটর দু’টি স্বাভাবিক গতিতে গ্রাহকদের সেবা দিতে সচেষ্ট হবে।
এ বিষয়ে রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স সাহেদ আলম এক বিবৃতিতে বলেন, বিটিআরসির এ সিদ্ধান্তে সাধারণ মোবাইল গ্রাহক নানা সমস্যার সম্মুখীন হবেন। প্রশ্নবিদ্ধ নিরীক্ষার উপর ভিত্তি করে মোবাইল গ্রাহকদের জন্য এ ধরনের ক্ষতিকর সিদ্ধান্ত দিয়ে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো বিটিআরসি।
তিনি বলেন, আইনের ওপর শ্রদ্ধাশীল থেকে সালিশের মাধ্যমে নিরীক্ষার বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য রবি বিটিআরসি’কে চিঠি দিয়েছিল। আমাদের চিঠির জবাব দেওয়ার পরিবর্তে গ্রাহকদের জন্য সমস্যা সৃষ্টিকারী এ ধরনের সিদ্ধান্ত আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হলো। আমরা সীমিত ব্যান্ডউইথ দিয়ে গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে পারবো বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
গ্রামীণফোনের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (পিআর) মো. হাসান এক বিবৃতিতে জানান, নিরীক্ষা প্রতিবেদন নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে বিটিআরসির প্রতি আমাদের আইনগত সালিশি প্রক্রিয়ার যে আহ্বান ছিল, তার প্রতি এটা রীতিমতো অবজ্ঞাসূচক একটি নির্দেশনা।
তিনি বলেন, ব্যান্ডউইথ কমিয়ে আনার এ ধরনের জবরদস্তিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রাহক স্বার্থের পরিপন্থি। এ ধরনের সিদ্ধান্ত আমাদের গেটওয়ে পার্টনারদের জন্যে একটি শাস্তিস্বরূপ সিদ্ধান্ত। এটি দেশের লাখো ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সেবা পাওয়ার অধিকারের পথে অন্তরায়। এ ধরনের নির্দেশনায় আমরা বিস্মিত ও এর আইনগত বৈধতা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০১৯
এমআইএইচ/একে