ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ভরা মৌসুমেও খুলনায় ইলিশের দাম আকাশচুম্বী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪২ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৯
ভরা মৌসুমেও খুলনায় ইলিশের দাম আকাশচুম্বী ইলিশ। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: ভরা মৌসুমেও মাছের রাজা ইলিশের দাম খুলনার ক্রেতাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেলো। এই সময় প্রতিবছর মহানগরীর মাছের বাজারগুলোতে রূপালি ইলিশের ঝিলিকে ভরে উঠলেও এবার পর্যাপ্ত মাছ না থাকায় কমছে না মাছের দাম।

বিক্রেতাদের দাবি, ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা বন্ধ রাখার বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা জারি রয়েছে। যে কারণে সমুদ্রে মাছ শিকারের যেতে পারছেন না জেলেরা।

এতে বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশ আসছে না। দামও কমছে না।

তারা বলছেন, চাহিদার সঙ্গে ভারসাম্য রেখে জোগান না হওয়ায় বাজারে ভরা মৌসুমেও ইলিশের দাম চড়া।

রূপালি ইলিশের ভরা মৌসুমেও খুলনায় ইলিশের দাম নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছেন স্থানীয় ক্রেতারা।

শনিবার (১৩ জুলাই) খুলনার সবচেয়ে বড় ইলিশের পাইকারি বাজার কেসিসি রূপসা পাইকারি মৎস্য আড়তে গিয়ে ইলিশের দাম নিয়ে ক্রেতাদের অস্বস্তি প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

ট্রাক ও ট্রলার থেকে নামানো টাটকা ইলিশ পাওয়া যায় বিভাগের সবচেয়ে বড় এ আড়তে। একটু দামাদামি করে পাইকারদের পাশাপাশি খুচরা বিক্রেতারাও কিনে নেন ইলিশ। টাটকা ইলিশের স্বাদ নিতে মাছ কিনতে এসে অনেক ভোজন বিলাসীকে দামের কারণে ফিরে যেতে হচ্ছে।

বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা শেখ রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সিন্ডিকেটের কারণে ইলিশের কেজি ২০০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন বাজার নিয়ন্ত্রণ করলে দাম কমতো। ইলিশ।  ছবি: বাংলানিউজআক্ষেপ করে তিনি বলেন, নামেই যেন বর্ষা মৌসুম। বাজারে ইলিশ মাছের তেমন আনাগোনা দেখা যাচ্ছে না। যাও আছে দামের তাপে ক্রেতা ভিড়ছে না কাছে।

খালিদ হোসেন রাজন নামে এক ক্রেতা বলেন, ইলিশ এখন দুর্নীতিবাজদের খাবারে পরিণত হয়েছে। অনেকটা ৫ তারকা হোটেলের মতো। দূর থেকে আমরা সেই হোটেলের আলো দেখি আর ভাবি এর ভেতরে কী হয়।

হেলাল হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, আষাঢ়, শ্রাবণ-ভাদ্র ও আশ্বিন এই চার মাস ইলিশ মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এখন আষাঢ় মাস শেষের দিকে হলেও ইলিশ মিলছে খুবই কম। যা মিলছে তার যা দাম আমরা কিনতে পারছি না।

আড়তদাররা জানান, উপকূলীয় নদ-নদীতে এখন আর আগের মতো মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। ভরা মৌসুম চললেও জেলেদের জালে ইলিশ তেমন ধরা পড়ছে না।  

তাদের দাবি, চাহিদার তুলনায় চলতি মৌসুমে ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় মাছ কিনতে গুণতে হচ্ছে বাড়তি দাম, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে।

বাজারের মদিনা ফিসের মালিক আবু মুসা বলেন, বাজারে এখন যা আছে তা নদীর মাছ। ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় জেলেরা নদী থেকে মাছ ধরছেন। নদীতে পর্যান্ত মাছ না থাকায় ইলিশের মৌসুম চললেও সরবরাহ কম। যে কারণে দাম বেশি।

তিনি জানান, শনিবার সকালে দেড় কেজি ওজনের ইলিশের পাইকারি মূল্য ২৫শ-২৬শ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা গত বছর ছিল ১৫শ। এক কেজি সাইজের ইলিশের পাইকারি দাম ১৭শ-১৮শ টাকা। যা গত বছর ছিল ১ হাজার থেকে ১১শ।   ৭-৮শ গ্রাম সাইজের ইলিশের দাম ১৪শ-১৫শ টাকা। যা গত বছর ৭শ-৮শ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ৫শ গ্রাম সাইজের ইলিশের দাম পাইকারি ১১শ-১২শ টাকা। যা গতবছর ছিল ৫শ টাকা।

তিনি বলেন, খুচরা বাজারে ইলিশের দাম প্রতিকেজিতে ১শ-২শ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।

আকাশ ফিসের ইলিশ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, এ বাজারে ভোলা, বরগুনা ও বরিশাল থেকে ইলিশ আসে। এখন প্রতিদিন বাজারে ১০ থেকে ২০ মণ মাছ আসছে। যা গত বছর এই সময়ে ১০০ থেকে ১১০/১২০ মণ করে আসতো। মাছের সরবরাহ কম থাকায় দাম বেশি চড়া।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪১ ঘণ্টা,  জুলাই ১৩, ২০১৯
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।