অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, পিডিদের পুরস্কৃত করার জন্য আগামী বুধবার ও বৃহস্পতিবার (২৪ ও ২৫ জুলাই) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এসময় দক্ষ পিডিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
জানা যায়, মোট ১১টি বিষয় বিবেচনা করে পিডিদের পুরস্কৃত করবে এডিবি। যেসব পিডির কোনো অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই, যারা প্রকল্প এলাকায় থেকে কাজ বাস্তবায়ন করছেন, সরকারের টাকা অপচয় করেননি, স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকল্পের কাজের গতি বাড়িয়েছেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে গুণগতমান বজায় রেখেছেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বরাদ্দ ঠিকভাবে খরচ করেছেন, তাদেরই নির্বাচিত করা হবে। তবে, এক্ষেত্রে এডিপি বাস্তবায়নে স্বচ্ছতার দিকে বেশি নজর দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইআরডি।
ইআরডির অতিরিক্ত সচিব (এডিবি) ফরিদা নাসরিন বাংলানিউজকে বলেন, এডিবির ঋণে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পে যেসব পিডি ভালো পারফর্ম করছেন, তাদের আমরা পুরস্কৃত করবো। এ ঘটনা বাংলাদেশে এবারই প্রথম। এর মাধ্যমে দেশে উন্নয়ন কাজের গতি বাড়বে। আমাদের দেখাদেখি বিশ্বব্যাংকসহ কয়েকটি উন্নয়ন সহযোগীও এ ধরনের অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা নিয়েছে।
আগামী পাঁচ বছরে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে সাড়ে আট বিলিয়ন ডলার বা ৭০ হাজার কোটি টাকার ঋণ সহায়তা পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কর্মসংস্থান বাড়াতে অবকাঠামো খাতে এ অর্থ ব্যয় করবে সরকার। এছাড়া দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি ও সামাজিক সুরক্ষার মতো বড় প্রকল্পগুলোতে এডিবির অর্থ ব্যয় করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সংস্থাটির পক্ষ থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় দ্বিতীয় পদ্মা সেতু প্রকল্পতে অর্থায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, এডিবির ঋণে বাস্তবায়নাধীন ৫৩টি প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ’ প্রকল্প। কয়েক ধাপে এ প্রকল্পে দেড় বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে সংস্থাটি। ‘সাসেক চিটাগং-কক্সবাজার রেলওয়ে প্রকল্প’র প্রথম পর্যায়ে এ অর্থ ব্যয় করা হবে। ২০২২ সালের ৩০ জুনের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ করবে বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ রেলওয়ে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার হয়ে মিয়ানমারের কাছে ঘুনধুম পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। ‘দোহাজারি থেকে রামু হয়ে ঘুনধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল ট্র্যাক নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় এটা বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার ও রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে ঘুনধুম পর্যন্ত ২৮ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পের আওতায় দুই ধাপে ১২৯ দশমিক ৫৮৩ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের পিডি মফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন বলেন, এডিবি আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। শুনেছি, যারা ভালো করছে, তাদের পুরস্কৃত করা হবে। কাকে পুরস্কার দেবে, এ বিষয়ে কিছু বলেনি। তারা প্রকল্পের সর্বশেষ তথ্য নিয়েছে। এডিবি যেহেতু প্রকল্পে ঋণ দিচ্ছে, তারা ‘ডে টু ডে মনিটরিং’ করে। পিডিদের নিয়ে এমন অনুষ্ঠান প্রথমবার হচ্ছে। যারা পুরস্কৃত হবেন, নিশ্চয় তাদের জন্য এটা গর্বের বিষয়।
বিশ্বব্যাংকের পরেই বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এডিবি। এশীয় উন্নয়ন তহবিল থেকে রেয়াতি সুবিধায় সর্বাধিক ঋণ গ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এডিবি বাংলাদেশকে দুই ধরনের আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে- ঋণ ও অনুদান। বিনিময়ে তাদের দুই শতাংশ সুদ দিতে হয়। এডিবির ঋণ পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ২৫ বছরে পরিশোধযোগ্য।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৯
এমআইএস/একে