দেশের উন্নতির জন্য কর দেওয়ার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, সহজে কর আদায় করতে হলে মানুষের মধ্যে থেকে ভীতি কাটাতে হবে। আয়কর বিষয়ে এখনো মানুষের মধ্যে পুরনো সেই ভীতির ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে।
বুধবার (৩১ জুলাই) নগরের পাঠানটুলায় একটি অভিজাত কমিউনিটি সেন্টারে সিলেট সিটি করপোরেশনের ৭, ৮, ৯ ও ১০ নং ওয়ার্ডে আয়কর জরিপ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মেয়র বলেন, সিলেটে শতকরা ৭০ ভাগ বাড়িঘর প্রবাসের টাকায় নির্মিত। প্রবাসীরা তাদের কষ্টার্জিত অর্থ দেশে পাঠান। প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের টাকা দেশের ব্যবসা বাণিজ্যে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তাই প্রবাসীদের আইনগতভাবে সহায়তার বিষয়টি বিবেচনায় আনা দরকার।
তিনি বলেন, অনেকে পরিবার নিয়ে অভিজাত রেস্টুরেন্টে গিয়ে হাজার হাজার টাকা খরচ করেন। অথচ সিসিকের হোল্ডিং ট্যাক্স ও ২০০ টাকা পানির বিল কমাতেও দৌড়ঝাপ শুরু করেন। আসলে ট্যাক্স না দেওয়া অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। বুঝতে হবে ট্যাক্সের টাকা রাষ্ট্রের উন্নয়নে জনগণের জন্যই সরকার ব্যয় করে থাকে।
নিজেকে সরকারের একজন ট্যাক্স কালেক্টর দাবি করে মেয়র বলেন, এখনো সিসিকের ৬০ ভাগ ট্যাক্স পাওয়া রয়েছে। অনেকে ১৬ বছর ধরেও ট্যাক্স দেয় না। এটা সহজ করার প্রক্রিয়ায় আদায় করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
আয়কর আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আয়কর সম্পর্কে সরকারের যে প্রক্রিয়া রয়েছে, বুঝিয়ে বললে হয়তো মানুষ এতো ভয় পেতো না। যে কারণে কর দিতে মানুষের অনীহা থাকে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সিলেট কর অঞ্চলের কর কমিশনার রনজীত কুমার সাহা বলেন, জরিপ কার্যক্রম চলাকালে কেউ তথ্য দিয়ে সহায়তা না করলে আমরা ধরে নেবো এই লোকের কোনো ট্যাক্স ফাইল নেই। তাই জরিপ চলার সময় সবাইকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া কেউ বাসা-বাড়িতে অনুপস্থিত থাকলে প্রয়োজনে আয়কর জরিপের লোকজন আবার যাবে। এক্ষেত্রে সহায়তা না পেলে কাউন্সিলরদের দ্বারস্থ হবো।
তিনি বলেন, সম্প্রতি যেমন অপ্রদর্শিত স্বর্ণ বৈধ করতে সরকার সুযোগ দিয়েছে। তেমনি অর্থ আইন পরিবর্তনের ফলে রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে বাধা দূর করে দিয়েছে। কেউ যদি রেমিট্যান্সের টাকা আগে প্রদর্শন করে না থাকেন, এখন করে ফেলতে পারবেন। এতে বিনাবাক্যে তা গ্রহণ করা হবে। কেবল একটিমাত্র প্রমাণ দিতে হবে, এটা রেমিট্যান্সের টাকা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিসিকের ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খান, ৮ নং ওর্য়াড কাউন্সিলর মো. ইলিয়াছুর রহমান, ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান, ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তারেক উদ্দিন তাজ, আয়কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল ফজল, সাবেক সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় ধর ভুলা, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবীর, প্রবীণ সাংবাদিক আফতাব চৌধুরী, অনলাইন প্রেসক্লাব সভাপতি মুহিত চৌধুরী ও করদাতা স্বপন বর্মন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সিলেটে রাজস্ব ভবনের দাবি তোলেন আয়কর কর আইনজীবীরা।
সহকারী কর কমিশনার মো. নাসির উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বগত বক্তব্য দেন সিলেট কর অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার পঙ্কজ লাল সরকার। উপস্থিত ছিলেন, যুগ্ম কর কমিশনার সাহেদ আহমদ চৌধুরী ও উপ-কর কমিশনার (সদর ও প্রশাসন) কাজল সিংহ।
অনুষ্ঠান শেষে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে আয়কর জরিপ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ অতিথিরা।
বাংলাদেশ সময়: ২৩২০ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৯
এনইউ/জেডএস