বিক্রেতাদের দাবি অন্য বছরের তুলনায় এবার ইলিশ কম ধরা পড়ছে, তাই বাজারেও কম আসছে। সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে বলে জানান তারা।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়।
এসব বাজারে এক কেজি থেকে ১১০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের প্রতি হালি ৩ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। যেগুলো দুই সপ্তাহ আগে সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। ২ কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিকেজি বিক্রি করতে দেখা গেছে ১৮০০ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে যা এর আগে বিক্রি হয়েছে ২৫০০ থেকে ২৮০০ টাকার মধ্যে। আড়াই থেকে ৩ কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিকেজি ২৮০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে, যা এর আগে ৩৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে বড় ইলিশের সরবরাহ কম।
বাজারে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে, ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে। ৬০০ গ্রাম সাইজের প্রতি হালি ইলিশ বিক্রি করতে দেখা গেছে ১২০০ টাকায়। প্রতি তিন পিসে কেজি এমন ইলিশ প্রতিকেজি সাড়ে ৩০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে, ছোট জাটকা প্রতিকেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
এসব ইলিশের দাম কমলেও তা পর্যাপ্ত না বলে মনে করছেন ক্রেতারা। তাদের মতে, এসব ইলিশ অন্য বছরের তুলনায় এবার দামে চড়া। ইলিশের মৌসুমে দাম আরও কম হওয়া উচিৎ। ক্রেতাদের সঙ্গে বিক্রেতাদেরও একই মত। তবে এ বছর নদীতে তুলনামূলক ইলিশ কম ধরা পড়ছে বলে জানান তারা। তবে ইলিশের সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে বলেও জানান তারা।
কারওয়ান বাজারের ব্রাদার্স মৎস্য ভান্ডারের ইলিশ বিক্রেতা কেএম ওলিউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, এক/দুই সপ্তাহ আগে যে ইলিশ ৩ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, এখন সেগুলোর হালি ২ হাজারের কম। তার মতে, বাজারে ইলিশের সরবরাহ থাকায় দাম কমেছে। ইলিশ মাছের সরবরাহ আরও বেশি হলে সব ক্রেতার সাধ্যের মধ্যে থাকতো।
বাড্ডা বাজারের ইলিশ বিক্রেতা হাবিবুর জানান, ইলিশের মৌসুম হলেও অন্য বছরের তুলনায় এ সময় ইলিশ ধরা পড়ছে কম। এ কারণে বাজারে ইলিশের দাম কমলেও অন্য বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি।
নিলুফা ইয়াসমিন নামে এক ক্রেতা বলেন, ইলিশের মৌসুম হওয়ায় এখন ইলিশের দাম হওয়া দরকার ৩০০ টাকা কেজি। কিন্তু এ বছর অন্য বছরের তুলনায় দাম কমেনি। দাম কমলে আমাদের সাধ্যের মধ্যে থাকতো। সব ধরনের ক্রেতারা ইলিশের স্বাদ নিতে পারতেন।
তবে বাজারে ইলিশের আগমনে অন্য মাছের দাম কিছুটা নিম্নমুখী। এসব বাজারে পাইকারি চাপিলা প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) ৭০০ টাকা, কাচকি প্রতি পাল্লা ৯০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। ব্যবসায়ীদের মতে, এর আগে চাপিলা প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা, কাচকি প্রতি পাল্লা ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতিকেজি রূপচাঁদা বিক্রি করতে দেখা গেছে ৭০০ থেকে ৮৬০ টাকায়, আকারভেদে রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা, মিরকা ১৬০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে। বাইলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে, চিংড়ি হরিণা ৩৮০ থেকে ৩২০ টাকা, গলদা ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, বাগদা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি তেলাপিয়া ১০০ থেকে ১৩০ টাকা, টাকি ১০০ থেকে ১৮০ টাকা, পাঙ্গাস ১০০ থেকে ১৩০ টাকা, শিং ২৮০ থেকে ৪২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
যাত্রাবাড়ী বাজারের পাইকারি মাছ বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, এখন বাজারে ইলিশ মাছ বেশি হওয়ায় দেশি সাদা মাছের দাম কিছুটা কমেছে। তবে ইলিশের সরবরাহ কমলে অন্যান্য মাছের দাম ফের বাড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৯
ইএআর/ওএইচ/