ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

নর্থ-ইস্ট করিডোরে দরকার লাখ কোটি টাকা, প্রস্তুত এডিবি

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৯
নর্থ-ইস্ট করিডোরে দরকার লাখ কোটি টাকা, প্রস্তুত এডিবি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ

ঢাকা: বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) পণ্য পরিবহনের সুবিধার জন্য মহাসড়কের দুই পাশে শিল্প করিডোর স্থাপন করতে চলেছে। সম্ভাব্য কয়েকটি রুট বিবেচনায় নিয়ে ইতোমধ্যে এ পরিকল্পনার অনুমোদনও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিকল্পনার মধ্যে অন্যতম নর্থ-ইস্ট শিল্প করিডোর। এটি মূলত সিলেট, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ জেলাকে নিয়ে গঠিত হবে। নর্থ-ইস্ট শিল্প করিডোরের জন্য এ জেলাগুলো এক করা হয়েছে। তবে এগুলো নিয়ে আরও অনেক কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে বেশকিছু বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে। কোনদিক দিয়ে পথ নিলে বেশি সুবিধা হবে- তা বিবেচনায় নিতে হবে। ভারত এবং মালয়েশিয়ার অভিজ্ঞতা নিয়েই এ করিডোর করা হবে।

ইতোমধেই নর্থ-ইস্ট করিডোর নিয়ে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রাথমিক কাজসহ পরামর্শক নিয়োগের কাজ শুরু হয়েছে।  ৯টি জেলাকে নিয়ে কীভাবে শিল্প করিডোর গড়া যায় এ বিষয়ে খসড়াসহ ফাইনাল রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে ২০২০ সালের মার্চ মাসে।

শিল্প করিডোর স্থাপন কাজ প্রাথমিক পর্যায়ে আছে।  বিডা সরেজমিনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রাথমিক ধারণা নিয়েছে নর্থ-ইস্ট করিডোরের বিষয়ে।  রেল, সড়ক, নৌ ও আকাশপথের সমন্বয়ে কীভাবে একটা উন্নত শিল্প করিডোর গড়া যায় এ বিষয়ে প্রাথমিক ব্যয়ও প্রাক্কলন করা হয়েছে।  বিশাল কর্মযজ্ঞের জন্য কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো।  

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) সূত্র জানায়, বাংলাদেশ নর্থ-ইস্ট ইকোনোমিক করিডোর বাস্তবায়নে ১ লাখ কোটি টাকা লাগবে।  এক্ষেত্রে একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে।

এসব জেলায় শিল্প উন্নয়ন, অবকাঠামোগত কাজের আধুনিকায়ন, নগরায়নের পাশাপাশি সমন্বিত সামাজিক নিরাপত্তার কাজও করতে হবে।  এ করিডোরে একটি ফোরলেন সড়ক হবে তামাবিল স্থলবন্দর হয়ে সিলেট-হবিগঞ্জ-ব্রাহ্মণবাড়িয়া- নরসিংদী-নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত।  অপরটি হবে শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দর হয়ে নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ-গাজীপুর হয়ে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত।  নর্থ-ইস্ট করিডোরে সড়কের পাশে সিলেট, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, নরসিংদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্ভাবনাময় আধুনিক শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে নতুন করে।

সমন্বিত রেল, নদী, সমুদ্র, বিমানবন্দরগুলোর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট জেলার মানুষের মধ্যে সেতু বন্ধন গড়তে হবে।  এসব প্রকল্পে অর্থায়ন করতে প্রস্তুত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)।  করিডোর বাস্তবায়নে প্রাথমিক টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিয়েছে এডিবি।

এডিবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেন, নর্থ-ইস্ট করিডোর নিয়ে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে।  এর ফাইনাল রিপোর্ট সাবমিশন হবে ২০২০ সালের মার্চ মাসে।  নর্থ-ইস্ট করিডোরের জন্য একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে।  নৌ-সড়ক-রেল-আকাশপথের সমন্বিত উন্নয়ন করতে হবে।  নর্থ-ইস্ট করিডোরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রকল্পে অর্থায়ন করতে প্রস্তুত এডিবি।

যশোর, মাগুরা, ফরিদপুর, ঢাকা, নড়াইল, খুলনা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ নিয়ে সাউথ-ইস্ট করিডোর গঠিত হয়েছে। এ করিডোরের আউটপুটও বের করা হয়েছে।  এটি বাস্তবায়িত হলে ২০২২ সালে ২১ থেকে ২৪ এবং ২০৫০ সালে ১৪৮ বিলিয়ন ডলারের আউটপুট পাবে বাংলাদেশ।  কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।  ২০২৫ সালে ৫ মিলিয়ন এবং ২০৫০ সালে ২৫ মিলিয়ন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।  একইভাবে মাথাপিছু আয় ও প্রবৃদ্ধি অর্জনে সরাসরি অবদান রাখবে বাংলাদেশ ইকোনোমিক করিডোর।  সাউথ-ইস্টের মতোই অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নর্থ-ইস্ট করিডোরও অবদান রাখবে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট সূত্র।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমাদের বসে থাকলে হবে না।  এখনই নর্থ-ইস্ট করিডোর নিয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের প্রধান সমস্যা দারিদ্র্য।  আমি মনে করি নর্থ-ইস্ট করিডোর বাস্তবায়নে দারিদ্র্য নির্মূল হবে।  এ করিডোরকে কেন্দ্র করে একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে।  এডিবি টাকা দেওয়ার জন্য বসে আছে।  আপনাদের বলবো, সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে প্রকল্প নিয়ে আসেন।  আমরা সবাই মিলে করিডোরগুলো বাস্তবায়ন করি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৯
এমআইএস/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।