নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সিলেট ইউনাইটেড সেন্টারে ব্যবসায়ীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। কর্মজীবনের শত ব্যস্ততাকে পেছনে ঠেলে নগর, জেলা উপজেলা থেকেও ব্যবসায়ীরা এসেছেন ভোট প্রয়োগ করতে।
সিলেট চেম্বারের ভোটার মনজুর আহমদ খান বলেন, নির্বাচনে প্রার্থীরা অনেকে যোগাযোগ করেছেন। তারা সবাই পরিচিত। কাকে ভোট দেবো, এ নিয়ে দ্বিধায় রয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ভোট যাকেই দেই, সেটা মূখ্য নয়। সম্পর্কটা হচ্ছে আসল। এখানে এসে ব্যবসায়ী অনেক বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়েছে। কর্মব্যস্ততায় তাদের অনেকের সঙ্গে দেখা হয়ে ওঠে না।
সিলেট চেম্বারের পরিচালক পদপ্রার্থী তাহমিন আহমদ বলেন, নির্বাচন কেবল প্রতিযোগিতা নয়, ব্যবসায়ীদের পরস্পরের মধ্যে সুনিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিশেষ করে, প্রার্থী হওয়ার সুবাধে সব ভোটারের সঙ্গে আলাদা একটা সম্পর্ক গড়ে উঠে। সরেজমিন দেখা গেছে, সিলেট চেম্বার অব কমার্স নির্বাচনের অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র ইউনাইটেড কমিউনিটি সেন্টারে মানুষের ঢল। প্রখর রোদে দাঁড়িয়ে প্রার্থীদের পক্ষের লোকজন ভোট দিতে আসা ব্যবসায়ীদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন। তাদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে প্রার্থীর ব্যালট নম্বর। ২০১৯-২০ সাল মেয়াদের নির্বাচনে কেন্দ্রের সামনে ব্যবসায়ীদের অভ্যর্থনা জানিয়ে সিলেট চেম্বারের প্রশাসক আসাদে উদ্দিন আহমদের পক্ষে ছবি যুক্ত তোরণ স্থাপন করা হয়েছে।
এই নির্বাচনে মোট ২ হাজার ৪৬৫ জন ভোটার আগামী ২ বছরের জন্য তাদের প্রতিনিধি করবেন। এরমধ্যে অর্ডিনারি ক্যাটাগরিতে ভোট দেবেন ১ হাজার ৪১৩ জন, অ্যাসোসিয়েট ১ হাজার ৪০ জন, ট্রেড গ্রুপ ১১ ও টাউন অ্যাসোসিয়েশন ১ জন। প্রত্যেক ভোটার অর্ডিনারি শ্রেণীতে ১২টি ভোট, অ্যাসোসিয়েট শ্রেণীতে ৬টি এবং ট্রেড গ্রুপে ৩টি করে ভোট দেবেন। নির্ধারিত সংখ্যার চাইতে ভোট বেশি বা কম হলে ব্যালট পেপার বাতিল বলে গণ্য হবে।
দুইটি প্যানেলে বিভক্ত প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৪ জন। অ্যাসোসিয়েট শ্রেণীতে ১০ জন এবং ট্রেড গ্রুপে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। টাউন অ্যাসোসিয়েশন শ্রেণীতে একক প্রার্থী হিসেবে শমশের জামাল এরই মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
সিলেট চেম্বারের নির্বাচনী বোর্ড সূত্র জানায়, ২২টি ক্যাটাগরিতে ৪ পদে মোট ৪১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী অর্ডিনারি শ্রেণীর প্রার্থীরা- আবু তাহের, মো. শোয়েব, মো. মামকিবরিয়া সুমন, এনামুল কুদ্দুছ চৌধুরী, মুকির হোসেন চৌধুরী, হুমায়ুন আহমদ, মো. ফারুক আহমদ, মো. নজরুল ইসলাম, জুবায়ের রকিব চৌধুরী, আক্তার হোসেন খান, আব্দুল হাদী পাবেল, শহিদ আহমদ চৌধুরী ও মোহাম্মদ আব্দুস সালাম, এহতেশামুল হক চৌধুরী, মো. সাহিদুর রহমান, ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, মুশফিক জায়গীরদার, মো. আব্দুর রহমান (জামিল), খন্দকার ইসরার আহমদ রকি, মো. শফিকুল ইসলাম, শান্ত দেব, মো. আব্দুস সামাদ, খলিলুর রহমান চৌধুরী, ফখর উস সালেহীন নাহিয়ান, আলীমুল এহছান চৌধুরী। অ্যাসোসিয়েট শ্রেণীতে প্রার্থীরা- মাসুদ আহমদ চৌধুরী (মাকুম), মো. এমদাদ হোসেন, পিন্টু চক্রবর্তী, আব্দুর রহমান, চন্দন সাহা, মো. আতিক হোসেন, ইলিয়াছ উদ্দিন লিপু, কাজী মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আবুল কালাম ও মনোরঞ্জন চক্রবর্তী সবুজ।
ট্রেড গ্রুপের প্রার্থীরা- মো. সিরাজুল ইসলাম, মো. মাহবুবুল হাফিজ চৌধুরী (মসফিক), মো. নুরুল ইসলাম, তাহমিন আহমদ, মো. আমিনুজ্জামান জোয়াহির ও ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী।
নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন খান বাংলানিউজকে বলেন, কেন্দ্রে ১৩টি বুথে ভোট গ্রহণ চলছে। বুথ প্রতি একজন করে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা রয়েছেন। আরও একজন রাখা হয়েছে অতিরিক্ত। এছাড়া সহকারী প্রিজাইডিং ও পুলিশ কর্মকর্তা ১৬ জন ভোটগ্রহণের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।
তিনি বলেন, সকাল থেকে নির্বাচন খুব শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছেন বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯
এনইউ/এএটি