তিনি বলেছেন, ভারত অক্টোবরের শেষে পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারে। ফলে আশা করা যাচ্ছে শিগগির পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারে দুইদিন তাদের ধর্মীয় একটি বড় উৎসব যাওয়ায় পেঁয়াজের সাপ্লাই বন্ধ ছিল। আর ভারত থেকে তো বন্ধই। আমি দেশে ছিলাম না। আজ সকালে দেশে ফিরেছি। তবে সচিব ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। পেঁয়াজ আমদানির চেষ্টা করা হচ্ছে। সমস্যাটা সাময়িক। আমাদের নিজেদের যে সোর্স ছিল, সেটা বন্ধ হওয়ার কারণে অনেক চাপ পড়ে গেছে। যাদের ওপর নির্ভর করতে হয়, সেখান থেকে বন্ধ হলে সমস্যায় তো পড়তে হয়। ভারতেও পেঁয়াজ ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিনি বলেন, এখন মিয়ানমারের ঝামেলা মিটে গেছে। এখন সাপ্লাই শুরু হয়ে যাবে। অন্য জায়গা থেকেও আমদানির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সমস্যা বেশি দিন থাকবে না। এ মাসের শেষের দিকে ভারত হয়তো তাদের পেঁয়াজ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারে। তবে তা না হলে নভেম্বরে নিজেদের নতুন পেঁয়াজ না ওঠা পর্যন্ত সমস্যাটা থাকবে। এজন্য বিভিন্ন বাজার থেকে পেঁয়াজ আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ সমস্যাটা আরও কয়েকদিন থাকতে পারে।
গুদামে পেঁয়াজ পচে যাচ্ছে এ বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি কমিটি রয়েছে। তাদের নিয়ে আজ আবার বসব।
পেঁয়াজ বাজার নিয়ন্ত্রণে গঠিত ১০ কমিটি কী করেছে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তারা বিভিন্ন বাজারে ও গোডাউনে গিয়েছে। সেখানে তারা দেখেছে কোথাও কোনো মজুদ আছে কি-না। এছাড়া কেউ অবৈধভাবে মজুদ করার চেষ্টা করেছে কি-না। এছাড়া টেকনাফে যেখানে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আসছে, সেখানেও মনিটরিং করছে।
মাঝে কিছুদিন দাম কমে আবার কেন পেঁযাজের দাম বাড়ল এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমাদের পেঁয়াজ আমদানির বড় অংশ আসে ভারত থেকে। সেখানে বন্ধ হওয়ার কারণে এক জায়গায় চাপ পড়ে। যারা ব্যবসায়ী তারা এ সুযোগটা নিয়েছেন। পুরানো এলসির পণ্য বাজারে ঢুকেছে। এ বিষয়ে মিয়ানমারের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, তারা সব এলসি পণ্য ছেড়ে দেবে।
‘আমরা দেখি শক্ত ব্যবস্থা নেব। আমাদের সমস্যা আছে। সমাধানের চেষ্টাও করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা দেওয়া দরকার। এছাড়া সিটি গ্রুপের মতো বড় গ্রুপগুলোর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, তারা বড় আকারে আমদানি করবে। ’
শক্ত অবস্থানটা কী হবে এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, কোথাও কেউ যদি মজুদ করে রাখে বা আটকে রাখে, সেটা বাজারে কী পরিমাণ আছে, কেন দাম বাড়াচ্ছে, এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে জরিমানাসহ নানা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৫ দিন আগে বলেছিলেন শিগগির পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে, সেরকম কোন পরিস্থিতি দেখা যায় নি, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন আমাদের একটু সইতে হবে। কিছুদিন কষ্ট করতে হবে। যেহেতু আমাদের উৎপাদনের ঘাটতি রয়েছে। অন্যের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
টিপু মুনশি বলেন, ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি আমাদের জানিয়েছেন এ মাসের শেষের দিকে তিনি আশা করছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব, চেষ্টা করব এ মাসের শেষ নাগাদ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে। আসছে ২১ অক্টোবর মহারাষ্ট্রে একটা নির্বাচন রয়েছে। তারপর আশা করা যাচ্ছে একটা মুভমেন্ট হবে।
দেশের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কিছু করার আছে কি না প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, বন্যা হলে আমি কি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো? পারবো না। আমি চেষ্টা করতে পারি সমস্যা থেকে বের হয়ে আসার জন্য। সে চেষ্টা আমরা করছি।
মায়ানমারের সঙ্গে আমাদের উত্তেজনা চলছে, এর প্রভাব কৃষি পণ্য আমদানি-রফতানিতে পড়ছে কি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে রোহিঙ্গা নিয়ে সমস্যা তাই বলে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়নি। আমরা কিন্তু বাণিজ্যের দুয়ার বন্ধ করিনি। তাদের সঙ্গে সমস্যা হয়েছে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে। তাই বলে সব কিছু বন্ধ হয়ে যাবে তা তো নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৯ (আপডেট ২০২১ ঘণ্টা)
জিসিজি/টিএ/এইচএডি