রোববার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘দ্য মেকিং অব এ ব্লু রেভ্যুলেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এই বইয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের মাছ চাষের সফলতাকে ‘ব্লু রেভ্যুলেশন’ বলে দাবি করা হয়।
এদিন মোড়ক উন্মোচনের আগে ইফ্রি পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণার উদৃতি দিয়ে শহীদুর রশীদ এবং জিয়াবো জ্যাং এক যৌথ উপস্থাপনায় জানান, বিগত চার বছরে সাতটি গবেষণা করে ইফ্রি। এতে দেখা যায়, বাংলাদেশে উৎপাদিত মাছের ৫৬ শতাংশই আসছে পুকুর থেকে। পুকুরে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষের ফলে বিগত ৩৪ বছরে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ছয় গুণ। আর শুধু পুকুরে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ১২ গুণের বেশি। দেশের প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ মানুষ মাছ চাষ ও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। দেশে দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে এই খাতের অবদান শীর্ষ তিনের মধ্যে। দেশের কর্মক্ষম মানুষের ২৩ শতাংশই কোনো না কোনোভাবে এই খাতের সঙ্গে যুক্ত। দেশের মানুষের মাথাপিছু মাছ খাওয়ার পরিমাণ ১৯৯০ সালে ছিল প্রতি বছর গড়ে সাড়ে সাত কেজি। আর এখন তা ৩০ কেজি।
গবেষকদের দাবি, বর্তমানে ধানের চেয়েও মাছ চাষ বেশি লাভজনক। এক একর জমিতে ধান হয় দুই থেকে তিন টন। আর এক একর পুকুরে মাছ হয় ৪০ টন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, মাছ চাষ আমাদের অর্থনীতির পাশাপাশি এর সঙ্গে জড়িত সবার জীবনযাত্রাই পাল্টে দিচ্ছে। এই খাতে আমাদের আরও জোর দিতে হবে। ভাত যদি খাবারের রাজা হয়, তাহলে মাছ রানি। আর ইলিশ হচ্ছে রানিদের রানি। তবে পৃথিবীতে সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার হার দিন দিন বাড়ছে। আমাদেরও সেদিকে নজর দেওয়া উচিত। আমাদের প্রতিবেশী দেশ, যেমন- থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম সামুদ্রিক মাছে জোর দিয়ে আসছে। আমরাও যদি এমনটা করতে পারি তাহলে আমাদের মিঠা পানির মাছের ওপর চাপ কমবে।
অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী। তিনি বলেন, এই যে আমরা বিপ্লবের কথা বলছি, এর আসল কৃতিত্বের দাবিদার আমাদের কৃষকেরা। এর জন্য আমি তাদের সাধুবাদ জানাই। তারা বেশ উদ্ভাবনী ও সৃজনশীল উপায়ে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রেখে চলেছে।
গবেষণায় পুকুরে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার এবং মাছের খাবার হিসেবে শিল্পবর্জ্য ব্যবহারে সতর্কতা প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৯
এসএইচএস/এসএ