সোমবারর (২৮ অক্টোবর) বাণিজ্যমন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বাজারে প্রচুর পেঁয়াজ রয়েছে, প্রতিদিন আমদানি করা পেঁয়াজ আসছে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ভারত কর্তৃপক্ষ পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে। বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে এলসি (আমদানি ঋণপত্র) এবং বর্ডার ট্রেডের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ আমদানি করছে। পাশাপাশি মিশর ও তুরস্ক থেকেও এলসি’র মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করা হয়। সম্প্রতি মিয়ানমারও পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে। ফলে বাংলাদেশের বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বাণিজ্যমন্ত্রণালয় পেঁয়াজ আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে অনেকবার সভা করেছে, নিয়মিতভাবে আমদানিকারকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের পেঁয়াজ আমদানি বাড়ানো এবং নৈতিকতার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনার অনুরোধ করা হয়েছে। এরপরও কোনো ব্যবসায়ী অবৈধ পেঁয়াজ মজুত, কৃত্রিম উপায়ে দাম বাড়ানোর চেষ্টা, স্বাভাবিক সরবরাহে ব্যাঘাত সৃষ্টি করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিনই অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের অনুরোধে দেশের বেশ কয়েকটি বড় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মিশর ও তুরষ্ক থেকে বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি করছে। দু’একদিনের মধ্যে এ সব পেঁয়াজের বড় ধরনের চালান দেশে পৌছাঁলে দ্রুত দাম কমে আসবে। এছাড়া নভেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের গৃহিত পদক্ষেপগুলো হলো- আমদানিকারকদের উৎসাহিত করতে পেঁয়াজ আমদানি ক্ষেত্রে এলসি মার্জিন এবং সুদের হার কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক পদক্ষেপ নিয়েছে। স্থল ও নৌ বন্দরগুলোতে আমদানি করা পেঁয়াজ দ্রুত ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খালাসের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছে। সে মোতাবেক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমদানি করা পেঁয়াজ খালাস করা হচ্ছে। এলসি’র মাধ্যমে মিয়ানমার, মিশর ও তুরস্ক থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বন্দরে খালাস করা হচ্ছে। এছাড়া মিয়ানমার থেকে বর্ডার ট্রেডের মাধ্যমে টেকনাফ বন্দর দিয়ে আমদানি করা পেঁয়াজ এবং দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারি হাটগুলোতে বিক্রিত পেঁয়াজ দ্রুত সারাদেশে নির্বিঘ্নে পৌঁছে যাচ্ছে।
জানা যায়, দেশে পেঁয়াজের দাম ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বাণিজ্যমন্ত্রণালয় ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ট্রাক সেলে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ন্যায্য দামে পেঁয়াজ বিক্রয় জোরদার করা হয়েছে। ৩৫টি ট্রাকের মাধ্যমে প্রতিকেজি ৪৫ টাকা মূল্যে এ পেঁয়াজ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিক্রয় চলছে। এতে করে স্বল্প আয়ের মানুষ ন্যায্য দামে পেঁয়াজ ক্রয় করার সুযোগ পাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন হাট-বাজারে পেঁয়াজ দ্রুত ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পৌঁছানোর জন্য সরকার সবধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। পেঁয়াজ দ্রুত পরিবহন নির্বিঘ্নে করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে পেঁয়াজ আমদানি নির্বিঘ্নে করতে সব পদক্ষেপ দেওয়া হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি মনিটরিংয়ের জন্য বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের ১০জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের চারটি টিম প্রতিদিন ঢাকা শহরের বাজারগুলো মনিটরিং অব্যাহত রেখেছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদফতর ও প্রতিটি জেলা প্রশাসন জেলার বাজারগুলোতে মনিটরিং জোরদার করেছে। ঢাকার শ্যামবাজার ও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মতো বড় পাইকারি বাজারগুলোতে অভিযান জোরদার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৯
জিসিজি/ওএইচ/