তিনি বলেন, রপ্তানি উপযোগী আলুর জন্য কন্ট্রাক্ট ফার্মিং ও টিস্যু কালচারে যেতে হবে। এই শিল্পকে লাভবান করতে বিএডিসি এখন থেকে শুধু বীজ উৎপাদন নয় আগামীতে আলু রপ্তানি করবে।
বুধবার (০৪ ডিসেম্বর) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আলু রপ্তানির বিষয়ে সার্বিক পর্যালোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিসচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় আলু উৎপাদনকারী, রপ্তানিকারক ও আলুবীজ উৎপাদনকারীরা অংশ নেন। এছাড়া সভায় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সংস্থার প্রধান, কৃষি বিজ্ঞানী ও গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন।
আলু রপ্তানিতে প্রণোদনা নিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আলু রপ্তানিতে ২০ শতাংশ প্রণোদনা দেই। এ বিষয়ে আমি গভীরভাবে চিন্তা করছি। উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করবো। আমি মনে করি, আন্তর্জাতিক বাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য ও ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে প্রণোদনা এক দুই বছর বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। বাজারে প্রবেশের পর তা আস্তে আস্তে কমিয়ে আনা হবে। এছাড়া আলু রপ্তানির উদ্দেশ্য আমদানিকারকদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) ডিসেম্বরের মধ্যে একটি অ্যাক্রিডেটেড ল্যাব স্থাপন করবে। বারি এ পর্যন্ত ৯১টি আলুর জাত অবমুক্ত করেছে। আলু প্রসেসিং করে রপ্তানির উদ্যোগ নিতে হবে।
‘ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ও চিপসের জন্য আলুর জাত আবাদ করতে হবে। আলু প্রক্রিয়াজাত করে মূল্য সংযোজন করে রপ্তানির মাধ্যমে এই শিল্পকে লাভবান করতে হবে। এজন্য আমাদের রপ্তানি উপযোগী আলু পেতে হলে কন্ট্রাক্ট ফার্মিং এ যেতে হবে। সরকার যে রপ্তানি উপযোগী আলুর বীজ অবমুক্তির সময়সীমা তুলে নিয়েছেন, এখন যে কেউ রপ্তানি উপযোগী আলুর জাত আবাদ করতে পারবে। তবে রোগ বালাইয়ের ক্ষেত্রে গবেষণা প্রতিষ্ঠান তদারকি করবে। যেকোনো মূল্যে আলু রপ্তানি করতে হবে। এ ব্যাপারে সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে কাজ করে এই শিল্পটিকে লাভজনক করতে হবে। আলুর উৎপাদন বছরে ৫ দশমিক ১৯ শতাংশ হারে বাড়ছে। ’
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, রাশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় আলু রপ্তানির জন্য যে পর্যবেক্ষণ রয়েছে তা পূরণ করে রপ্তানির ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আরও নতুন নতুন বাজার সৃষ্টি করতে হবে।
কোল্ডস্টোরেজ নিয়ে যে সমস্যা রয়েছে সে বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের ভালো কোল্ডস্টোরেজ নেই যেটা দিয়ে আলুর গুণাগুণ অক্ষুন্ন রাখা যায়। কোল্ডস্টোরেজ করার জন্য কেউ যদি এগিয়ে আসে তাহলে সরকার তাদের দেখবে। আর বীজ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে আমরা টিস্যু কালচারের ওপর গুরুত্ব দেবো। এজন্য বিএডিসিকে বলবো, তারা টিস্যু কালচার করবে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, এ বছর আমাদের আলু উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৯ লাখ টন। আমাদের বাৎসরিক চাহিদা ৭০ থেকে ৮০ লাখ টন। সে হিসেবে আমাদের ৩০ লাখ টন অতিরিক্ত থাকে। এ আলু কীভাবে বাজারজাত করতে পারি এবং যারা কৃষক বা উৎপাদনকারী তারা যেন ভালো দাম পায় সে নিশ্চয়তা আমাদের দিতে হবে।
সভায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, পাকিস্তানের আলুর মূল্য কম হওয়ায় তারা বাজার দখল করে রেখেছে, সেক্ষেত্রে কী উদ্যোগ গ্রহণ করা যায় সে বিষয়ে ভাবতে হবে। পরিবহন খরচ কমাতে হবে। আর আলু সংরক্ষণের পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকায় দাম না পেয়ে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পর্যাপ্ত কোল্ডস্টোরেজ এবং সংরক্ষণ প্রযুক্তির সহজলভ্যতার অভাব রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আলু আমদানিকারক দেশ যেসব শর্ত দিয়েছে তা মেনে ফাইটোস্যানিটারি সার্টিফিকেট বা উদ্ভিদ স্বাস্থ্য সার্টিফিকেট (পিসি) নিশ্চিত করতে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৯
জিসিজি/এইচএডি/