ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মন্ত্রীর মতো ভাবটাব আমার হয়নি: টিপু মুনশি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০১৯
মন্ত্রীর মতো ভাবটাব আমার হয়নি: টিপু মুনশি বক্তব্য রাখছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আমি ৪৫ বছর ধরে ব্যবসা করি। রাজনীতি করি তার চেয়েও বেশি সময় আগে থেকে। কথাবার্তা আমার ব্যবসায়ীর মতো মনে হয়। মন্ত্রীর মতো ভয়েস (কণ্ঠস্বর), মন্ত্রীর মতো ভাবটাব আমার হয়নি।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) তিন দিনব্যাপী সিরামিক এক্সপো বাংলাদেশ-২০১৯ উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আট-নয় মাস আগে আমি নিজে পার্লামেন্টে (সংসদ) দাঁড়িয়ে বলেছি, ১২ থেকে ১৪ শতাংশ সুদ দিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব না।

আপনারা কর্মসংস্থান চান, বাণিজ্যের প্রসার চান। এত ইন্টারেস্ট (সুদ) দিয়ে কোনো ব্যবসায়ী সাকসেস (সফল) হতে পারবে না। একটার পর একটা কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে, ঋণখেলাপি বাড়বে। তখন প্রধানমন্ত্রী বললেন, ব্যাংকারদের অনেক ধরনের সুবিধা দিলাম। সুবিধাটা কিন্তু ব্যাংক মালিকরা নিল, ইন্টারেস্ট রেটটা (সুদহার) কিন্তু সিঙ্গেল ডিজিটে আনা হলো না।

তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী অনেকবার বলেছেন, আজ পর্যন্ত কোনো প্রাইভেট ব্যাংক (ঋণের সুদহার) সিঙ্গেল ডিজিটে আনেনি। আমাদের দেশই পৃথিবীর মধ্যে ব্যতিক্রম যেখানে ডিপোজিট ও ডিস্ট্রিবিউশনের মধ্যে স্প্রেড সর্বোচ্চ; পৃথিবীর কোথাও দুই-আড়াই-তিন শতাংশের বেশি নেই। বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতেই স্প্রেড পাঁচ শতাংশ, কোথাও কোথাও ছয় শতাংশও আছে। এটা ঠিক না, হওয়া উচিত না।

আইসিসিবিতে সিরামিক এক্সপো ঘুরে দেখছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।  ছবি: জিএম মুজিবুর

টিপু মুনশি বলেন, আমি একটা মিটিংয়ে বলেছিলাম, এটা রীতিমতো ডাকাতি। পরেরদিন পেপারে (পত্রিকা) আসলো আমি নাকি ব্যাংকারদের ডাকাত বলেছি। আমি যা বললাম তার উল্টোটা আসলো। সেদিন পেঁয়াজের ব্যাপারে বললাম, আমি পদত্যাগ করলে পেঁয়াজের দাম কমলে পদত্যাগ এক মিনিটের ব্যাপার। পরেরদিন পেপারে আসলো আমি বলেছি, আমি পদত্যাগ করবো।

মন্ত্রী বলেন, ব্যাংকারদের ক্ষেত্রেও একই কথা, তারা সবধরনের সুবিধা নিল, প্রধানমন্ত্রী বারবার বললেন, কাজের কাজ কিছুই হলো না। এই যদি অবস্থা হয়, তাহলে আমাদের ব্যবসায়ীরা যাবে কোথায়। আমার এই কথাগুলো আপনাদের কাছে মনে হবে, মন্ত্রী বলছে নাকি ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বিজনেসম্যান বলছে। আমি ৪৫ বছর ধরে ব্যবসা করি। রাজনীতি করি তারচেয়ে বেশি সময় আগে থেকে। কথাবার্তা আমার ব্যবসায়ীর মতো মনে হয়। মন্ত্রীর মতো ভয়েস, মন্ত্রীর মতো ভাবটাব আমার হয়নি।

তিনি আরও বলেন, এখনো ব্যবসায়ীর মতো কথা বলি। কথা যেটা বলা হয়, সেটা ইউটিলাইজড করা দরকার। আমরা অর্থমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকি। আমার দিকে তাকিয়ে থাকেন আপনারাও, এটাও সত্য। ইন্টারেস্ট রেট সিঙ্গেল ডিজিটে না আসলে কোনো ব্যবসা সাকসেসফুল করা যাবে না। জেনুইন ব্যবসা করা যাবে না। অন্য কিছু করা যায় কি-না আমি জানি না।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কয়েকদিন আগে অর্থমন্ত্রী ব্যাংকারদের নিয়ে বসলেন। জানুয়ারি থেকে এটা (সুদের হার কমবে) হবে। দেখি, আমাদের তো আশা করা ছাড়া আর উপায় নেই।

আইসিসিবিতে তিনদিন চলবে সিরামিক এক্সপো।  ছবি: জিএম মুজিবুর

ট্যাক্স আদায়ে রাজস্ব বোর্ডের ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, যারা রেগুলার ট্যাক্স দেয়, তাদের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করা হলে নাভিশ্বাস উঠে যাবে। নম্বর বাড়ছে না। যারা আছে তাদের ওপরই চাপ। ব্যবসার প্রসারটা হবে কেমন করে? তারপরও অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে আমরা এগিয়েছি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দিন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৯
এসই/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।