সমতলে পাহাড়ি জীবনের এ সমাবেশ দেখতে হলে যেতে হবে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির মাঠে পার্বত্য মেলায়। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে শুরু হওয়া চারদিনব্যাপী এ মেলা চলবে আগামী রোববার (৮ ডিসেম্বর) পর্যন্ত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরপরই মেলাপ্রাঙ্গণে শুরু হয় মানুষের আনাগোনা। খুলে যায় মেলায় অংশ নেওয়া সব দোকানের ঝাঁপি। বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ির বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির নানা উপাদানে ভরপুর এ চত্বর।
এবারই প্রথম পার্বত্য মেলায় স্টল নিয়েছে অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘ফিনারি’। কথা হচ্ছিল এর কর্ণধার ড চিং চিংয়ের সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি জানান, সাজতে কিংবা সাজাতে পছন্দ করেন না পৃথিবীতে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। নিজের রূপসজ্জা থেকে শুরু করে ঘরের দেয়াল কিংবা পড়ার টেবিল সবকিছুই হওয়া চাই অন্যের চেয়ে একটু আলাদা। আর তাতেই ব্যক্তিবিশেষের রুচিবোধের প্রকাশ পায়। ফিনারি মানুষের সেই প্রত্যাশায় সহযোগী হতে চায়।
কথা বলতে বলতেই তিনি হাতে ধরিয়ে দিলেন বিন্নি ধানের পিঠা ‘ফাহ্নক্য মুং’। পিঠা খেতে খেতে জানা গেল ফিনারিতে কী কী পাওয়া যায়। রিক্সা আর্টের ওয়াইন বোতল, গ্লাস, চশমা, কেটলি, ট্রাংক, গহনার বাক্স, টিস্যু বক্স, তেলের বাতি, মোবাইল কভার, কানের দুল, চুড়ি, চাবির রিং, স্লিপবক্স, কার্ড হোল্ডার, মাউস প্যাডসহ হরেক জিনিসে ভর্তি তার ফিনারির স্টল।
এর পাশাপাশি আছে আদিবাসি পয়সার মালা, কানি মালা, মারমা শালের তৈরি স্যান্ডেল, শাল, উলের কম্বল, মেয়েদের পিননের কোটি, থাবিন কাপড়ের প্লাজো, থামি ইত্যাদি।
ফিনারি ছেড়ে হাঁটতে হাঁটতে পাহাড়ি পিঠাঘরের সামনে যেতেই ডেকে নিলেন দোকানের কর্মীব উক্যমং মারমা। জানালেন তাদের কাছে পাওয়া যাচ্ছে পাহাড়ি যতো পিঠা। রিফ্রি মুং (চিরুনী পিঠা), ফাহ্নক্য মুং (কলার পাতার পিঠা), ছেসমা মুং, ক্যংদ মুং (বাঁশের পিঠা), কধ মুং (গোল কলাপাতার পিঠা) ও ঘিয়াং মুংসহ (লাটিম পিঠা) বাহারি নাম সেসব পিঠার।
মেলা ঘুরে দেখা গেলো পাহাড়ের লাল সূর্যমুখী কলা, কমলা, তেঁতুল, আনারস, পেঁপে, আঁখ, ভুট্টাসহ বিভিন্ন কৃষ্যিপণ্য। আরও আছে লাল, কালো, সাদা বিন্নি চাল। মিলছে পাহাড়ি কাঁচা হলুদ, আদা, যব, হলুদ বেগুন, আলু, শিম, কুমড়ো, নারকেল কচু ইত্যাদি। এছাড়া মেলায় বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে বিক্রি হচ্ছে পাহাড়ি কফি।
পোশাকের মধ্যে আছে- বাহারি খামি, লুঙ্গি, গামছা, গায়ের চাদর, ফতুয়া। অলঙ্কারের মধ্যে আছে-চোকার, হাঁসুলি, ঝুমকা ইত্যাদি।
অন্যদিকে হিল্স বাজার নামের এক স্টলে বিক্রি হচ্ছে চাপিলা, পামা, টেংরা, চিংড়ি, চেলা, রুই, কাতল, বোয়াল, আইড় ও গজালসহ কাপ্তাই লেকের বিভিন্ন প্রজাতির তাজা মাছ।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত সবার জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৯
ডিএন/এইচজে