মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে প্রকল্পটি। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
প্রকল্পের আওতায় মিয়ানমারের নাগরিকদের বসবাসের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলা, বনায়ন এবং দ্বীপটির নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি ডিসেম্বর ২০১৭ থেকে নভেম্বর ২০২১ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৯৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
নানা কারণে ভাসানচরের প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়েছে। পরামর্শকের অনুসন্ধান ও পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে দ্বীপ রক্ষাকারী বাঁধের উচ্চতা ১০ ফুট বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্পের কিছু কাজ গুচ্ছগ্রাম ও শেল্টার স্টেশন নির্মাণ, পানি নিষ্কাশন অবকাঠামো নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণ, শোর প্রটেকশন ওয়ার্ক, ভূমি উন্নয়ন কাজের পরিমাণ বেড়েছে।
প্রায় ৪৩টি নতুন অঙ্গ, যেমন- জেটি নির্মাণ, জাতিসংঘ প্রতিনিধিদের জন্য ভবন নির্মাণ, কালভার্ট নির্মাণ, ছোট আকারের লেক খনন, আরসিসি র্যাম্প নির্মাণ, চুলা স্থাপন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্তিসহ প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করায় প্রথম সংশোধনীর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
প্রকল্পের আওতায় ৩ হাজার ৬৮০ রানিং মিটার শোর প্রোটেকশন ওয়ার্ক, ৫৮ লাখ ৯০ হাজার ঘনমিটার বাঁধ নির্মাণ, ১ হাজার ৪৪০টি ব্যারাক হাউস, ১১১টি শেল্টার স্টেশন ও নয়টি মডিফাইড শেল্টার স্টেশন নির্মাণ (ঘ) জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের জন্য একটি চারতলা ভবন এবং প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য একটি চারতলা ভবন নির্মাণ করা হবে।
এছাড়াও, দু’টি হাসপাতাল ও চারটি কমিউনিটি ক্লিনিক, উপাসনালয়, দ্বীপের নিরাপত্তার জন্য নৌবাহিনীর অফিস ভবন ও বাসভবন, অভ্যন্তরীণ সড়ক, পানি নিষ্কাশন অবকাঠামো, নলকূপ ও পানি সরবরাহ অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। পেরিমিটার ফেন্সিং ও ওয়াচ টাওয়ার, একটি মাইক্রোবাস, দু’টি ডাবল কেবিন পিকআপ, ১২টি মোটরসাইকেল, ২৩টি হিউম্যান হলার, ৪৩টি ঠেলাগাড়ি, ৪০টি ভ্যানগাড়ি, চারটি এলসিইউ (ল্যান্ডিং ক্র্যাফট ইউটিলটি) এবং আটটি হাইস্পিড বোট কেনা হবে।
গুদাম ঘর, জ্বালানি ট্যাঙ্ক, হেলিপ্যাড, চ্যানেল মার্কিং ও মুরিং বয়, বোট ল্যান্ডিং সাইট, মোবাইল টাওয়ার, রাডার স্টেশন, সিসি টিভি, সোলার প্যানেল, জেনারেটর ও বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন ইত্যাদি নির্মাণ করা হবে প্রকল্পের আওতায়।
সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ভাসানচরে সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকবে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, দ্রুত সময়ে রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যাবে। তখন এখানে আমরা অন্য উন্নয়নের কথা ভাববো। হয়তো ভাসানচরে একসময়ে বিনোদনকেন্দ্র অথবা অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হতে পারে। আমরা পর্যায়ক্রমে অন্য দ্বীপের উন্নয়ন করতে পারি।
বাংলাদেশ সময়: ২২০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯
এমআইএস/একে