আর এ জন্য অন্যান্য বন্দরের ন্যায় সব পণ্য আমদানি-রপ্তানির অনুমতি না থাকা এবং বৈধ সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় কর্মকর্তাদের একচোখা নীতিকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে ভোমরা স্থলবন্দরের পরিবর্তে অন্যান্য বন্দর ব্যবহারে ঝুঁকছেন তারা।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বন্দর কর্তৃপক্ষের একচোখা নীতির কারণে ধীর গতিতে চলছে ব্যবসায়িক কার্যক্রম। এছাড়া অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোরও দাবি তাদের।
তারা বলছেন, ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে যেসব পণ্য ঢোকার অনুমতি রয়েছে, অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে তার সবগুলো ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। একই সঙ্গে পোর্ট বিল ঠিকমত নেওয়া হলেও বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে না। পচনশীল পণ্যে সববন্দরে ১০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়। কিন্তু ভোমরা বন্দরে তা দেওয়া হচ্ছে না।
আবার শুল্ক বিভাগের অসাধু কর্মকর্তারা ‘স্পিড মানি’ (ঘুষ) নিয়ে মুষ্ঠিমেয় ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ফলে অন্যান্য ব্যবসায়ীরা এ বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের অর্থ-সম্পাদক মাকসুদ খান বাংলানিউজকে জানান, ভোমরা স্থলবন্দরে ৬৭টি পণ্য আমদানির অনুমতি থাকলেও ২২টি আইটেম ঢোকে। একটি অশুভ চক্রের কারণে সব পণ্য ঢুকতে পারছে না। এ বন্দর দিয়ে যেসব পণ্য ঢুকতো, দ্বৈতনীতির কারণে এসব পণ্য আমদানিকারকরা অন্যান্য বন্দরের দিকে ঝুঁকছেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা (এসআরও) অনুযায়ী ফল আমদানিতে ১০ শতাংশ ছাড় রয়েছে। কিন্তু সেটা আমাদের দেওয়া হচ্ছে না। অন্যান্য বন্দরে দেওয়া হচ্ছে। একদিন লোকসান হলেও ব্যবসায়ীরা সিলেটসহ অন্যান্য বন্দর, যেখানে সুবিধা পাচ্ছে সেখানে চলে যাচ্ছে। একটি অশুভ চক্র চাচ্ছে না এ বন্দর সচল থাকুক। এ অশুভচক্র থেকে দূরে থাকতে পারলে বন্দরের উন্নয়ন হবে।
তবে, কমিশনারের নিষেধ আছে এমন অজুহাতে এসব অভিযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা শেখ এনাম।
১৯৯৬ সালের ১৫ এপ্রিল ১৬ পণ্য আমদানির অনুমতি নিয়ে এলসি (আমদানি ঋণপত্র) স্টেশন হিসেবে যাত্রা শুরু করে ভোমরা স্থলবন্দর। ২০১৩ সালে ওয়্যার হাউজ নির্মাণের পর পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরের মর্যাদা পায় ভোমরা। ভোমরা থেকে কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৬০ কিলোমটার হওয়ায় সম্ভাবনাময় হয়ে ওঠে বন্দরটি। এখন ৬৭টি পণ্য আমদানির অনুমতি থাকলেও অবকাঠামোগত সংকটের কারণে এ বন্দর দিয়ে সব পণ্য আমদানি করা যাচ্ছে না। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীরা মুখ ঘুরিয়ে নেওয়ায় ও সীমিতসংখ্যক পণ্য আমাদানি-রপ্তানি হওয়ায় রাজস্ব ঘাটতিতে পড়েছে বন্দরটি।
২০১৯-২০ অর্থবছরে এ বন্দর থেকে এক হাজার ১৮৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে এনবিআর।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯
ওএইচ/