ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

যেসব শর্তে ভাঙা হচ্ছে বিজিএমইএ ভবন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২০
যেসব শর্তে ভাঙা হচ্ছে বিজিএমইএ ভবন

ঢাকা: বিভিন্ন অজুহাতে দীর্ঘ কালক্ষেপণের পর অবশেষে ভাঙা শুরু হয়েছে হাতিরঝিল প্রকল্পের বিষফোঁড়া বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ভবন। 

বুধবার (২২ জানুয়ারি) ভবন ভাঙার কাজের উদ্বোধন করা হয়। তবে পুরোদমে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) থেকে ভবন ভাঙার কাজ চলবে।

 

ভবন ভাঙার কার্যক্রম পরিচালনা এবং দুর্ঘটনা মোকাবেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে দুটি টিম। যারা  বিজিএমইএ ভবন ভাঙায় কাজ সার্বক্ষণিক দেখভাল করবে।  

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোনো স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির মাধ্যমে ভাঙা হচ্ছে না বহুতল এ ভবনটি। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেই (শাবল-হাতুড়ির) ব্যবহার থাকবে। স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির মাধ্যমে ভাঙা না হলেও একগুচ্ছ শর্ত দিয়ে ভাঙার কাজ দেওয়া হয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজকে।  

পড়ুন>>বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ মনিটর করবে দুই টিম

বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কার্যক্রমের আনিষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

সূত্র জানায়, ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে র‌্যাংস ভবন ভাঙার সময় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। প্রাণহানি এড়াতে দেশে প্রথমবারের মতো ডিনামাইট ব্যবহার করে ভবনটি গুড়িয়ে দেবার কথা ভাবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। তবে পরিবেশের ক্ষতি হবে এমন আশঙ্কায় ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে কর্তৃপক্ষ।  

ভবন ভাঙতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও বেঁধে দেওয়া হয়েছে একগুচ্ছ শর্ত। এসব শর্ত মেনে আগামী ৬ মাসের মধ্যে এ ভবন ভাঙার কাজ শেষ করতে হবে। সঙ্গে ভবন ভাঙার বজ্য অন্যত্র অর্থাৎ রাজধানীর বাইরে ফেলে দিতে হবে।

ভবন ভাঙায় মানতে হবে যেসব শর্ত:
ভবন ভাঙার কাজটি ৬ মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে, ভবন ভাঙার কাজ চলাকালে ভবনটি সেফটি নেটিং ও সেফটি কভার এবং স্টিল ব্র্যাকেট স্থাপন করে মালামাল ব্যবহার করতে হবে, মেশিনারিজ ব্যবহারের সময় যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হবে, ভবনের উপর অংশ থেকে নিচের অংশ ভাঙতে হবে, বর্জ্যসমূহ ডাম্পিংকালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা মেনে চলতে হবে, ছাদ, কংক্রিট, কলাম উপর থেকে নিচের অংশ ভাঙতে হবে।  

এছাড়া ভবন ভাঙার কাজ করার সময় কোনো ব্যক্তি আহত বা নিহত হলে এর দায় নিতে হবে সংশ্রিষ্ট কোম্পানিকেই, ভবন ভাঙার সময় রাষ্ট্রবিরোধী কাজ করা যাবে না এবং সার্বক্ষণিক অক্সিজেন মুখোশের ব্যবস্থা করতে হবে, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকতে হবে।

ভবন ভাঙার কাজে যে কাজ মেনে চলতে হবে: 
ভবনে কোনো বিপজ্জনক বস্তু থাকলে প্রথমেই তা শনাক্ত করে অপসারণ করতে হবে, ভবন সংলগ্ন বেইলি ব্রিজ অপসারণ করে রাস্তা তৈরি করতে হবে, ভারি যন্ত্রপাতি ও গাড়ি যথা স্থানে রাখতে হবে। বাইরের গ্যাস ফিটিং অপসারণ, বৈদ্যুতিক লাইন ও পানির লাইন অপসারণ করতে হবে, ডেকোরেশন ও ভূগর্ভস্থ ট্যাংক ইত্যাদি ভাঙা ও অপসারণ করা, সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের জন্য জেনোরেটর ব্যবহার করতে হবে।

ভবন ভাঙার কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি: 
ভবন ভাঙার কাজে থাকবে এক্সক্যাভেটর, বুলডোজার, কংক্রিট জ্যাকহ্যামার, দীর্ঘ ও উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ক্রেন, ড্রাম ট্রাক, গ্যাস কার্টারসহ আরও নানা যন্ত্রপাতি। ভবন ভাঙার সময় নিরাপত্তারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।  

ভবন ভাঙার কাজ তদারকি করবে দুই টিম: 
বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কার্যক্রম পরিচালনা এবং দুর্ঘটনা মোকাবেলায় দুটি টিম কাজ করবে। একটি হচ্ছে-টপ সুপারিভিশন কমিটি। এ টিমে রয়েছে রাজউক, বুয়েট, ফায়ার ব্রিগেড, প্রকল্প কর্মকর্তা (সেনাবাহিনী, ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড), অথোরাইজড অফিসার (রাজউক), হাতিরঝিল প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবং হাতিরঝিল প্রকল্প পরিচালক।  

এছাড়া সার্বক্ষণিক তদারকি কমিটিতে রয়েছেন- হাতিরঝিলের প্রকল্প পরিচালক, হাতিরঝিল প্রকল্প কর্মকর্তা (সেনাবাহিনী, ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড) এবং হাতিরঝিল প্রকল্পের ব্যবস্থাপক।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
ইএআর/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।