ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বুলবুল, আম্পান ও বন্যার ক্ষতি পোষাতে ৬ হাজার কোটি টাকা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২০
বুলবুল, আম্পান ও বন্যার ক্ষতি পোষাতে ৬ হাজার কোটি টাকা ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত একটি ঘর, ফাইল ফটো

ঢাকা: ২০১৯ সালের ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপকূলের ১০ লাখ ৭০ হাজার লোক। অনেক প্রাণহানি ছাড়াও সড়কসহ উপকূলীয় বিভিন্ন অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এতে।

 

এর পরেই ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ২৬ জেলার  ১ হাজার ১০০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া সারাদেশে বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ঘর-বাড়ি, সড়ক ও কালভার্টের। ৩টি প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতেই প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে।

সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী ও বরগুনা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আপাতত এসব জেলার ক্ষয়ক্ষতি পোষাতে এবং অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। চলতি সময় থেকে ২০২৩ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে এলজিইডি।
 
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠেয় একনেক সভায় সভাপতিত্ব করবেন।  

‘ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন’ প্রকল্পের মোট প্রস্তাবিত ব্যয় ৫ হাজার ৯০৮ কোটি টাকা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রস্তাবে দ্রুত প্রণয়ন করে প্রকল্পটি একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে।
 
পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) জাকির হোসেন আকন্দ বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৯ সালে দেশে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। এর পরে পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প প্রস্তাব করে এলজিইডি। পরে প্রকল্পটি আর পাস হয়নি। এর পরে আবার আম্পানের ছোবল। এর কিছু দিন পরেই বন্যা আমাদের সড়ক অবকাঠামোসহ জানমালের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। তখন এলজিইডিকে বললাম, আপনারা ৩টি ক্ষতি অ্যাসেস করেই প্রকল্প নিয়ে আসেন। ৩টি ক্ষতি অ্যাসেস করেই প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পটি মঙ্গলবার একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে।

আম্পানের প্রভাবে ২০০টি সেতু ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া বন্যায় ৩৩টি জেলার ১৫৪ উপজেলায় দীর্ঘস্থায়ী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাস্তাঘাট, সেতু ও কালভার্টের অবস্থা বেহাল। এজন্য প্রকল্পের আওতায় উপজেলা পর্যায়ে ৩৫৪, ইউনিয়ন পর্যায়ে সড়ক পুনর্বাসন করা হবে ২৬৭ কিলোমিটার।

এছাড়াও ১৮৯ কিলোমিটার গ্রামপর্যায়ে সড়ক সংস্কার করা হবে। প্রকল্পের আওতায় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামপর্যায়ে ১ হাজার ২১২ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করা হবে। এ ছাড়া আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু পুনর্নির্মাণ করা হবে ২৪৬ মিটার। কালভার্ট পুনর্নির্মাণ করা হবে ১২৮ মিটার।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলা সড়ক সংস্কার করা হবে ১ হাজার ২২৭ কিলোমিটার, ইউনিয়ন পর্যায়ে ১ হাজার ১০৬ কিলোমিটার। আর গ্রাম সড়ক উন্নয়ন করা হবে ৬৯৬ কিলোমিটার।
 
আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের ১৪টি জেলার ৬৯টি উপজেলায় এ সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। অন্যদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের ৭টি বিভাগের ২৮টি জেলার ১৮২টি উপজেলা এবং অতিবর্ষণে রাজশাহী, খুলনা, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২২টি জেলার ১৩৯টি উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। ৩টি প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি পোষাতে দেশের প্রায় সব জেলাতেই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২০
এমআইএস/এসআই

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।