ঢাকা, শনিবার, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রোহিঙ্গা কল্যাণে ৮৫০ কোটি ডলারের অনুদান দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২০
রোহিঙ্গা কল্যাণে ৮৫০ কোটি ডলারের অনুদান দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক 

ঢাকা: কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় হোস্ট কমিউনিটির বিদ্যুৎ, পানি, স্যানিটেশন ও দুর্যোগ সহনশীল অবকাঠামো সুবিধা বাড়াতে আরো ১০ কোটি ডলারের অনুদান দিচ্ছে বিশ্ব ব্যাংক।  

প্রতি ডলার সমান ৮৫ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা।

সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে তারা একটি চুক্তি সই করেছে।  

বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্বব্যাংক) মো. শাহাবুদ্দিন পাটোয়ারী ও বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন এই চুক্তিতে সই করেন।  

পরে বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সেখানে বলা হয়, চলমান ইমার্জেন্সি মাল্টি-সেক্টর রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স প্রকল্পে অতিরিক্ত এই অর্থায়ন করা হবে। এর ফলে স্থানীয় প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার ৮০০ জনসহ প্রায় সাত লাখ ৮০ হাজার ৮০০ জন উন্নত অবকাঠামোগত সুবিধা পাবে।

এতে বলা হয়, ‘প্রকল্পের আওতায় পানির উৎস তৈরি, পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ, বৃষ্টির পানি সংগ্রহের ব্যবস্থা স্থাপন এবং বাসায় ও কমিউনিটিভিত্তিক টয়লেট স্থাপন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রায় তিন লাখ ৬৫ হাজার ৮০০ জনকে পানি সরবরাহ এবং এক লাখ ৭১ হাজার ৮০০ জন উন্নত স্যানিটেশন ব্যবহার করতে পারবে। ’

‘এছাড়া ৮১ হাজার লোকের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ৪০টি বহুমুখী দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, রাস্তায় চার হাজার সৌরবাতি লাগানো, ৯৭৫টি বজ্রপাত নিরোধক ব্যবস্থা তৈরি এবং সরকারি সংস্থাগুলোকে সংকট ও জরুরি পরিস্থিতিতে পরিকল্পনা, সমন্বয় ও সাড়াদানে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা ও সক্ষমতা জোরদার করা হবে। ’

বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর থেকেই বিশ্বব্যাংক রোহিঙ্গাদের সহায়তা করে আসছে। পাশাপাশি স্থানীয় হোস্ট কমিউনিটিরও চাহিদা পূরণ হচ্ছে।

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় ‘মাল্টি-সেক্টর প্রকল্প’র বাস্তবায়ন ব্যয় বেড়ে ১ হাজার ৯৮৭ কোটি হচ্ছে। মূল প্রকল্পের ব্যয় ছিল ১ হাজার ৫৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। ফলে প্রথম সংশোধনীতে বাড়ছে ৯৩০ কোটি টাকা।
 
জরুরিভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় ‘মাল্টি-সেক্টর প্রকল্প’ (ইমার্জেন্সি মাল্টি-সেক্টর রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেন্সপন্স প্রজেক্ট) ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সাল মেয়াদে বাস্তবায়নের সময় নির্ধারিত ছিল। এখন প্রকল্পের মেয়াদ বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। ফলে প্রকল্পের মেয়াদও আড়াই বছর বাড়ছে।  

বাড়তি সময়-ব্যয় বাড়ার ফলে কক্সবাজারের নতুন ছয়টিসহ মোট আটটি উপজেলায় উন্নয়ন কার্যক্রম নেওয়া এবং কাজের পরিমাণ বাড়ানো হবে বলে দাবি প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি)।
  
প্রকল্পের আওতায় সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ, সড়ক উন্নয়ন, সেতু নির্মাণ, কালভার্ট, মাল্টিপারপাস কমিউনিটি সেন্টার, সড়ক প্রশস্ত ও মজবুতকরণ হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি, পরিচালন ও মিনি পাইপে পানি সরবরাহ, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ, কমিউনিটি ল্যাট্রিন, রক্ষণাবেক্ষণসহ বায়োগ্যাস ল্যাট্রিন, ওয়াটার অপশন স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণসহ পয়ঃনিষ্কাশন ও কঠিন ময়লা নিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন হবে। এছাড়া বিদ্যমান টয়লেট সংস্কারসহ বাসা-বাড়িতে বায়োফিল টয়লেট স্থাপন করা হবে প্রকল্পের আওতায়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার ৩২টি ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য পাইপড এবং নন-পাইপড পানির উৎসের মাধ্যমে নিরাপদ ও সুপেয় পানি সরবরাহ করা যাবে। পাশাপাশি এ ক্যাম্পগুলোতে ফিক্যাল স্ল্যাজ ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। এই লক্ষ্যেই অনুদান দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক।

বাংলাদেশ সময়: ০১০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২০
এমআইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।