ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

আন্তর্জাতিক চা দিবস

অক্টোবর পর্যন্ত চা উৎপাদন হয়েছে ৬৮ মিলিয়ন কেজি

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২০
অক্টোবর পর্যন্ত চা উৎপাদন হয়েছে ৬৮ মিলিয়ন কেজি বাগানে চায়ের পাতা তুলছে শ্রমিক। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: আন্তর্জাতিক চা দিবস ১৫ ডিসেম্বর। ২০০৫ সাল থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন চা উৎপাদনশীল দেশে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।

এ দিবসটির উদ্দেশ্য-চা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, চায়ের প্রতিষ্ঠান এবং চা শিল্পের নানা সমস্যাকে দূর করে সম্ভাবনাগুলো এক সুতোয় গাঁথা। বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যাপকভাবে চাষ করা হচ্ছে চা। উৎপাদন বৃদ্ধি করে উন্নতমানের চা উৎপাদনের লক্ষ্যে গ্রহণ করা হচ্ছে নানান কর্মপরিকল্পনা। চা-শিল্পের উন্নয়নের জন্য নেওয়া কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে চা চাষের আওতা বাড়ানো হচ্ছে। চলতি বছর আমাদের দেশে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৫ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন কেজি। ইতোমধ্যে অক্টোবর পর্যন্ত চায়ের মোট উৎপাদন হয়ে গেছে ৬৮ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন কেজি।  

বাংলাদেশ চা বোর্ড (বিটিবি) কর্তৃক পরিচালিত প্রতিষ্ঠান প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিট (পিডিইউ)।  

এ প্রতিষ্ঠানটি দেশের ১৬৬টি চা শিল্পাঞ্চলের নানা ধরনের উন্নয়নের অংশ হিসেবে উৎপাদন খরচ ঠিক রেখে গুণগত মানসম্পন্ন চা প্রস্তুত করার মাধ্যমে চায়ের রপ্তানি আরও বাড়ানোর লক্ষ্যেই বিভিন্ন চা-বাগানের ব্যবস্থাপক ও সিনিয়র টি প্লান্টারদের নিয়ে চায়ের বিভিন্ন কর্মশালার আয়োজনসহ নানান দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হয়ে থাকে।

পিডিইউর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. একেএম রফিকুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশে চায়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। এবার করোনা সংক্রমণজনিত প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও উৎপাদন ভালো হয়েছে। এ বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে আমাদের চায়ে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৫ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন কেজি। আশার কথা হচ্ছে, ইতোমধ্যে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ৬৮ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন কেজি হয়ে গেছে। আমরা আশা প্রকাশ করছি, লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করতে পারবো। ’ 

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের অভ্যন্তরীণর চাহিদা পূরণ করে আমরা এখন চা রপ্তানি করছি। মধ্যে তো আমাদের চা আমদানি করতে হয়েছিল। কিন্তু এই কয়েক বছর ধরে আমাদের দেশে চায়ের উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় আমদানি বন্ধ হয়েছে। চলতি বছর নভেম্বর পর্যন্ত চা রপ্তানির পরিমাণ ২ দশমিক ১৩ মিলিয়ন কেজি। বিগত বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ০ দশমিক ৬০ মিলিয়ন কেজি। যেহেতু আমাদের জনসংখ্যা বাড়ছে তাই চায়ের আভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়বেই। আমরা ভালো মানের চা উৎপাদন করে আমাদের দেশের চাহিদা পূরণের পর রপ্তানি করবো। ’

এক সময় বাংলাদেশে চামড়া ছিল প্রধান রপ্তানিজাত পণ্য। এই ধারাবাহিকতা যদি অক্ষুণ্ন থাকলে অদূর ভবিষ্যতে চা হবে প্রধান রপ্তানিজাত পণ্য। যা দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। রপ্তানি ক্রমবর্ধমান ধারাবাহিকতা বজায় রাখার লক্ষ্যে নতুন বাজার সৃষ্টিতে চা বোর্ড নানা ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ বছরও অনেক চা রপ্তানি হয়েছে।  

এই রপ্তানিটাকে আমরা আরো বাড়াতে চাচ্ছি। এজন্য আমাদেরকে গুণগতমানের ভালো চা উৎপাদন করতে হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।  

চায়ের লক্ষ্যমাত্রার কথা উল্লেখ করে ড. রফিকুল জানান, আমাদের চা উৎপাদন ২০১৪, ২০১৫ সালে ৬৩ মিলিয়ন কেজি কিংবা ৬৪ মিলিয়ন কেজির মধ্যে থাকতো। কিন্তু কয়েক বছর ধরে চায়ের সেই গড় উৎপাদন অনেক বেড়েছে। ২০১৬ সালে চা উৎপাদন ছিল ৮৫ মিলিয়ন কেজি, ২০১৭ সালে চায়ের উৎপাদন ছিল ৭৮.৯৫ মিলিয়ন কেজি, ২০১৮ সালে চায়ের মোট উৎপাদন ছিল ৮২ মিলিয়ন কেজি। ২০১৯ সালে চায়ের মোট উৎপাদন বেড়ে হয়েছে ৯৬ মিলিয়ন কেজি।  

৪ জুন জাতীয় চা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সরকার এই দিবসটি নতুনভাবে ঘোষণা করেছে। এই দিনে আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে জয়েন করেছিলেন। এই দিনটিকে বাংলাদেশের চা দিবস হিসেবে পালন করার জন্য আমরা প্রস্তাব করেছিলাম এবং এটি মন্ত্রিপরিষদের সভায় পাস হয়েছে বলে জানান ড. রফিকুল।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।