ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

খুলনায় সবজির দামে ক্রেতা খুশি, হতাশ কৃষক

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২১
খুলনায় সবজির দামে ক্রেতা খুশি, হতাশ কৃষক সবজির বাজার। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: হঠাৎ শীতকালীন সবজির দাম অনেক কমে গেছে। যদিও এবার সবজি উৎপাদনে খরচ আগের তুলনায় বেশি হয়েছে।

বাজারে দাম কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছি। এখন উৎপাদন খরচ ওঠা নিয়েই চিন্তায় আছি।

সোমবার (০৪ জানুয়ারি) বিকেলে আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম।

খুলনার মহানগরীর সোনাডাঙ্গা পাইকারি কাঁচা বাজারে তিনি শীতকালীন সবজি বিক্রি করতে এসেছেন।

ডুমুরিয়া থেকে আসা অপর এক কৃষক আসাবুর রহমান বলেন, বর্তমানে বাজারে শীতকালীন সবজির দাম খুবই কম। অনেক স্বপ্ন নিয়ে কৃষকরা ফসল নিয়ে এই বাজারে এলেও দাম দেখে হতাশ। এতে ঋণ শোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন অনেক কৃষক।

তাদের মতো এ বাজারে আসা কৃষকরা বলেছেন, শুরুতে দাম ভালো পেলেও হঠাৎ দাম কমে যাওয়ায় লোকসানের শঙ্কা রয়েছে।

অনেকে বলছেন, নতুন বছরের শুরুর পরই সব ধরনের শীতকালীন সবজির দাম কমেছে। মাত্র ৩ দিনের ব্যবধানে পাইকারি সবজির বাজারে কোনো কোনো সবজি কেজিপ্রতি ১৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এতে কৃষকদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।

সোনাডাঙ্গা ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) পরিচালিত খুলনা বিভাগের সবচেয়ে বড় পাইকারি কাঁচাবাজার এটি। এ বাজারে বিভিন্ন জায়গা থেকে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা কাঁচামাল এনে আড়তে রাখেন।

এ বাজারে খুলনার বিভিন্ন উপজেলাসহ নড়াইল, যশোর, রংপুর, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, ফরিদপুর, বরিশাল, বগুড়া, ঢাকা, জামালপুর, সৈয়দপুর, ময়মনসিংহ, ঠাকুরগাঁও, বগুড়া, নীলফামারীসহ ২৫/৩০ জেলা থেকে প্রতিদিন কয়েকশ ট্রাক সবজি নিয়ে আসেন ব্যাপারীরা। একই সঙ্গে খুলনা, বরিশালসহ প্রায় ৩০ জেলার পাইকারি ব্যবসায়ীরা এ বাজার থেকে সবজি কেনেন।

এদিকে আড়তদারা বলছেন, বাজারে সরবরাহ বেশি হওয়ায় সবজির দাম কমছে।

সোনাডাঙ্গা পাইকারি বাজারের মিতা বাণিজ্য ভাণ্ডারের আড়তদার রাসেল বলেন, ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ও দুপুর ১টা থেকে রাত পর্যন্ত এখানে বাজার চলে। শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেশি হওয়ায় দাম একদম কমে এসেছে।

বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিকেজি  শিম ২৫ টাকা, লাউশাক ২০, টমেটো ২৮, বেগুন ২০, ফুলকপি ৮, মুলা ৬, লাউ ২০, ওলকপি ১২, মেটে আলু ৩০, পেঁয়াজের কলি ৮, খিরাই ৩০, কচুরলতি ১৫, লালশাক ১২ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে।  

বাজারে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে দাম। এতে কম দামে টাটকা সবজি কিনতে পেরে খুশি দূর-দূরান্তের পাইকার ও সাধারণ ভোক্তারা। তবে দাম কম থাকায় হাসি ফোটেনি কৃষকের মুখে।

নিয়ামুল নামের এক ক্রেতা বলেন, শীতকালীন শাক সবজির দাম এতো দিন খুব চড়া ছিলো। সাধারণ ক্রেতাদের কেনার মতো অবস্থা ছিলো না। এখন সবজির দাম অনেক কমে গেছে। এতে ভীষণ খুশি ক্রেতারা।
তবে পাইকারি বাজারে সবজির দাম কমলেও খুলনার খুচরা বাজারগুলোতে তার তেমন একটা প্রভাব পড়েনি।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২১
এমআরএম/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।