খুলনা: শীতকালে পিঠার অন্যতম উপকরণ নারিকেল। পিঠা তৈরির জন্য নারিকেল কিনতে খুলনার গফ্ফারের মোড়ের ভাপা পিঠা বিক্রেতা মনির এসেছেন দোলখোলা বাজারে।
শনিবার (৯ জানুয়ারি) সকালে নারিকেল কিনতে এসে ক্ষোভ ঝেড়ে মনির বলেন, ৫০ থেকে ৬০ টাকার নারিকেল এখন আকার ভেদে প্রতি পিস ৯০ থেকে ১০০ টাকা। আর বড় এক জোড়া নারিকেলে দাম ২০০ টাকা। এত দাম হলে পিঠা বিক্রি করে লাভ করা কোনো ভাবেই সম্ভব না।
তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় নারিকেলের দাম এবার সবচেয়ে বেশি। এত দাম কোনো বছর হয়নি।
দোলখোলা বাজারের নারিকেলের দোকানগুলোতে পিঠা তৈরির অন্যতম উপকরণ বড় সাইজের নারিকেল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়, ছোট সাইজ ৬০ থেকে ৭০ টাকা প্রতি পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। আবার নারিকেল পাওয়া যায় এমন নির্ধারিত দোকানে নারিকেল শূন্য দেখা গেছে।
নারিকেল বিক্রেতারা বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে ডাবের দাম ও চাহিদা ছিল বেশি। যে কারণে অনেকে নারিকেল শুকাতে পারেনি। বেশি দাম পাওয়ায় ডাব বিক্রি করেছেন। এতে বাজারে শুকনো নারিকেলের সঙ্কট তৈরি হয়েছে।
শৈলেন্দ্র নাথ নামে দোলখোলা বাজারের নারিকেল বিক্রেতা বলেন, নারিকেলের দাম এবার সবচেয়ে বেশি। বড় সাইজের প্রতি পিস নারিকেল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়, ছোট সাইজ ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। আমরা যেভাবে কিনছি সেভাবেই বিক্রি করছি।
একই বাজারের রীনা সাহা নামে খুচরা নারিকেল বিক্রেতা বলেন, ব্যাপারীরা এবার নারিকেলের দাম বেশি নিচ্ছে। যে কারণে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। চাহিদা থাকলেও বাজারে নারিকেলের সরবরাহ কম।
নারিকেলের এবার রেকর্ড দাম প্রসঙ্গে নগরের তারের পুকুরপাড় এলাকার এক নারিকেল বিক্রেতা বলেন, করোনার কারণে এবছর ডাবের চাহিদা ছিল তুঙ্গে। যার কারণে শুকনা নারিকেল কম হয়েছে। অথচ শীতের এ পিঠার সময়ে নারিকেলের চাহিদা আগের মতো রয়েছে। যে কারণে দাম বেড়েছে।
জানা যায়, উপকূলীয় জেলা খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা তথা দক্ষিণাঞ্চলে মাটিতে লবণাক্ততা বাড়া, জলাবদ্ধতা, ঘূর্ণিঝড় আম্পানসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সঠিক পরিচর্যার অভাব, পোকা-মাকড়ের আক্রমণ, ভাইরাসের সংক্রমণসহ নানা কারণে নারিকেল উৎপাদন কমেছে। গত কয়েক বছরে এ অঞ্চলে নারিকেলের ফলন অর্ধেকে নেমে এসেছে। ফলে ডাব ও নারিকেলের মূল্য দ্বিগুণ বেড়েছে। দেশের তৃতীয় বৃহত্তম নগরী খুলনা এক সময়ে নারিকেল গাছের শহর হিসেবে পরিচিত থাকলেও এখন সেই শহরে নারিকেলের দাম আকাশ ছোঁয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০২১
এমআরএম/আরআইএস