ঢাকা: বিশ্বের ১৩৬টি দেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের রেমিটেন্স সেবা দেবে মাস্টারকার্ড ও হোমসেন্ড। প্রবাসী বাংলাদেশিদের হোমসেন্ডের মাধ্যমে পাঠানো অর্থ জমা হবে ডাচবাংলা ব্যাংক ও বিকাশ গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে দেশের আর্থিক সেবা খাতে ক্রস-বর্ডার অর্থ স্থানান্তর প্রক্রিয়া জোরদার করার লক্ষ্যে বিকাশ ও ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের (ডিবিবিএল) সহায়তায় রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয় সংক্রান্ত সেবা প্রদানকারী প্ল্যাটফর্ম হোমসেন্ডের কার্যক্রম শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে মাস্টারকার্ড।
এর ফলে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ডিবিবিএলের মাধ্যমে চার কোটিরও বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবাদানকারী (এমএফএস) দেশের বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান বিকাশের পাঁচ কোটি অ্যাকাউন্টে সরাসরি রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয় পাঠাতে পারবেন। এ এমএফএস সেবায় বিকাশের ব্যাংকিং ও সেটেলমেন্ট কার্যক্রমের পার্টনার হচ্ছে ব্যাংক এশিয়া।
মাস্টারকার্ড ও ওয়ামেজা এর একটি যৌথ উদ্যোগ হলো হোমসেন্ড। যেটি বিজনেস টু বিজনেস ক্রস বর্ডার ও ক্রস নেটওয়ার্কে সহজে লেনদেন করতে সক্ষম। ক্রস বর্ডার পেমেন্টের ক্ষেত্রে গোটা বিশ্বকে সংযুক্ত করার মাধ্যমে স্বল্প খরচে নিরাপদ ও সহজ উপায়ে অর্থ স্থানান্তরই এর লক্ষ্য।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেমিটেন্স অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। হোমসেন্ডের কার্যক্রম শুরু হবার ফলে দেশের ডিজিটাল রেমিটেন্স সেবা বাড়বে, যা এখানকার অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে গতিশীল করতে ভূমিকা রাখবে। এছাড়া চলমান করোনা মহামারির মধ্যে সশরীরে বাইরে না বের হয়ে ঘরে বসেই সহজ ও স্বচ্ছন্দ উপায়ে প্রাপক যাতে প্রবাসী স্বজনদের পাঠানো অর্থ দ্রুত ডিবিবিএল ও বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সরাসরি গ্রহণ করতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করাও এ সেবা কার্যক্রমের অন্যতম লক্ষ্য। হোমসেন্ড সেবা চালু করার ফলে দেশে টাকা পাঠাতে প্রবাসীদের আর অনানুষ্ঠানিক ও অনিরাপদ মাধ্যমের ওপর নির্ভর করতে হবে না। এটি মধ্যস্বত্বভোগী ও অনানুষ্ঠানিক মাধ্যমের পরিবর্তে সহজে ও স্বল্প ব্যয়ে রেমিটেন্স আনতে সাহায্য করবে। ফলে দেশে রেমিটেন্স পাঠানোর হার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।
হোমসেন্ডের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) স্টিফেন ডোয়েল বলেন, মাস্টারকার্ড, ডিবিবিএল ও বিকাশের (ব্যাংক এশিয়ার মাধ্যমে) সঙ্গে পার্টনারশিপের ভিত্তিতে মোবাইল ফোনে অর্থ স্থানান্তরের এ আন্তর্জাতিক সেবা চালু করতে পেরে আমরা অত্যন্ত গর্বিত। বাংলাদেশ এখন এমন এক দেশ যেখানে মোবাইল ফোন ব্যবহার এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা উচ্চ হারে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। আর আমরাও আজ যে সেবাটির উদ্বোধন করলাম সেটি আর্থিক অন্তর্ভুক্তি জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বিকাশের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) কামাল কাদীর বলেন, সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে স্বজনদের কাছে প্রিয়জনের পাঠানো রেমিটেন্স পৌঁছে দেওয়ার এ সেবার অংশীদার হতে পেরে বিকাশ অত্যন্ত আনন্দিত। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা মেনে চালু হওয়া এ সেবা দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী আয় বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একইসঙ্গে সবচেয়ে সহজতম উপায়ে ঘরে বসেই বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা গ্রহণ করবার সুযোগও সৃষ্টি করেছে এ সেবা।
মাস্টারকার্ডের সাউথ এশিয়ার চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) ভিকাস ভার্মা বলেন, বিদায়ী ২০২০ সালে অভিবাসী শ্রমিকরা সর্বাধিক পরিমাণ রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয় পাঠিয়েছেন। বর্তমানে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা ১০ মিলিয়ন বা এক কোটিরও বেশি, যারা পরিবারের জন্য অর্থ পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখেন। মাস্টারকার্ডের চালু করা হোমসেন্ড সেবা কার্যক্রম বাংলাদেশে রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয়ের প্রবাহ জোরদার করার পাশাপাশি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত অধিকসংখ্যক মানুষকে অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক ব্যবস্থায় সম্পৃক্ত করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন- মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের (ডিবিবিএল) ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) আবুল কাশেম মো. শিরিন, ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আরফান আলী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২১
এসই/আরবি