ঢাকা: খসড়া জাতীয় শিল্পনীতি ২০২১-এ অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা এসএমই উদ্যোক্তদের আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করতে ‘এসএমই ব্যাংক’ স্থাপনসহ ২৫টি সুপারিশ শিল্প মন্ত্রণালয়ের বিবেচনার জন্য জমা দিয়েছে ডিসিসিআই।
বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শিল্পসচিব কে এম আলী আজমের কাছে ডিসিসিআই’র সুপারিশমালা হস্তান্তর করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান।
ডিসিসিআইয়ের সুপারিশে বলা হয়েছে, বিদ্যমান নীতিমালায় ‘এসএমই’ খাতের সংজ্ঞা সংশোধন, ‘মধ্যম’ ক্যাটাগরিকে কুটির, অতিক্ষুদ্র এবং ক্ষুদ্র থেকে পৃথক করে বৃহৎ শিল্পের সঙ্গে সংযুক্ত করার প্রস্তাব করছে। এর ফলে কুটির, অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র খাতের উদ্যোক্তাদের আর্থিক ও নীতি সহায়তা প্রাপ্তির বিষয়টি আরও সহজতর হবে।
সুপারিশে আরও বলা হয়েছে, এসএমই খাতের ক্লাস্টারের উন্নয়ন, পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি ও বহুমুখীকরণের লক্ষ্যে ‘ন্যাশনাল এসএমই ক্লাস্টার ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ গঠন করতে হবে। পণ্যের বহুমুখীকরণ ও গুণগতমানসম্মত পণ্য উৎপাদন নিশ্চিত করতে টেকনোলজি অ্যাডাপশন ও ডিসিমিনেশন সেন্টার স্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া ই-কমার্স খাতের সার্বিক সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লজিস্টিক খাতের বিকাশে একটি সমন্বিত দিক-নির্দেশনা প্রণয়নেরও প্রস্তাব করা হয়েছে।
ঢাকা চেম্বার মনে করে, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে আমদানি বিকল্প এসএমই শিল্প স্থাপনের প্লট বরাদ্দে বিশেষ বিবেচনা এবং আর্থিক প্রণোদনা সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা এসএমই উদ্যোক্তদের আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করতে চেম্বার ‘এসএমই ব্যাংক’ স্থাপনেরও প্রস্তাব করেছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে একটি ‘ক্রাইসিস মিটিগেশন ফান্ড’ তৈরি সুপারিশ করেছে।
এছাড়া প্রস্তাবিত শিল্পনীতিটি যেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বেপজা, বিডা, বেজা এবং বাংলাদেশ ব্যাংক প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা সমূহের সাথে সমন্বয় থাকার বিষয়ে আরো বেশি মাত্রায় গুরুত্ব প্রদানের আহ্বান জানাচ্ছে ডিসিসিআই।
ডিসিসিআই মনে করে, স্বল্পন্নোত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণের পরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশ শুল্ক ও কোটা মুক্ত সুবিধা হারাবে, যা কিনা আমাদের রপ্তানিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এ অবস্থা মোকাবিলায় ঢাকা চেম্বার মনে করে, রপ্তানির সম্ভাবনাময় দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ)’ অথবা ‘অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ)’ স্বাক্ষরের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে, এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কারণে প্রায় ৩.৯ মিলিয়ন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে এবং এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য চাহিদা মাফিক আমাদের মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি পুনঃদক্ষ করে তুলতে হবে। দেশে স্থানীয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিদ্যমান শুল্ক কাঠামোতে ভারসাম্য আনা খুবই জরুরি বলে মনে করে ডিসিসিআই।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২১
জিসিজি/এআই