ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

শেফ’স টেবিলের ৩৬টি রেস্টুরেন্টে ভ্যাট ফাঁকির মহোৎসব

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২১
শেফ’স টেবিলের ৩৬টি রেস্টুরেন্টে ভ্যাট ফাঁকির মহোৎসব

ঢাকা: রাজধানীর মাদানি অ্যাভিনিউর ফুডকোর্ট শেফ’স টেবিলের ৩৬টি রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়ে ভ্যাট ফাঁকির মহোৎসব দেখতে পেয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর।

সোমবার (২৯ মার্চ) ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

জানা যায়, অধিদপ্তরের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা গত ২২ মার্চ শেফ’স টেবিলে অভিযানটি পরিচালনা করেন। সংস্থার সহকারী পরিচালক মুনাওয়ার মুরসালীন অভিযানে নেতৃত্ব দেন।  

রাজধানীর ভোজনরসিকদের একটি প্রিয় খাবারের স্থান এটি। এই ফুডকোর্টে বিভিন্ন ব্রান্ডের ৩৬টি খাবারের দোকান রয়েছে। এটি উদ্বোধন করা হয় ২০১৯ এর ডিসেম্বর মাসে।  

অভিযানের সূত্রে জানা যায়, শুরু থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত ১১ মাসে মোট ১৭.৫৯ কোটি টাকার বিক্রি তথ্য গোপন করা হয়েছে। করোনার কারণে ফুডকোর্টটি এপ্রিল ২০২০ থেকে জুন ২০২০ তিন মাস বন্ধ ছিল।  

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওই ১১ মাসে ৩৬টি রেস্টুরেন্টে প্রকৃত বিক্রয় ছিল ২৩.৪৯ কোটি টাকা এবং ভ্যাটযোগ্য মূল্য ছিল ২০.৪২ কোটি টাকা।  

এই ৩৬টি রেস্টুরেন্ট আলাদাভাবে ভ্যাট রিটার্নে প্রদর্শন করেছে ২.৮৩ কোটি টাকার বিক্রি। তাদের অপ্রদর্শিত সেলসের পরিমাণ ১৭.৫৯ কোটি টাকা।

এসব রেস্টুরেন্টের এই গোপন বিক্রির উপর ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ২.৬১ কোটি টাকা। রেস্টুরেন্টগুলো খাবার বিক্রির সময় ক্রেতাদের কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করেছিল। কিন্তু জনগণের কাছ থেকে আদায় করা ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি।  

অভিযানে গোয়েন্দা দল ইউনাইটেড গ্রুপের শেফ’স টেবিলের কম্পিউটারের তথ্য ও অন্য বাণিজ্যিক দলিলাদি জব্দ করে আনে। শেফ’স টেবিল প্রতিটি রেস্টুরেন্ট থেকে ১৮ শতাংশ রেভিনিউ শেয়ারিং করে। এই তথ্যাদি ও রেস্টুরেন্টের রিটার্ন যাচাই করে এই হিসাব বের করা হয়েছে।  
প্রতিষ্ঠানভিত্তিক তালিকাও সংযুক্ত।

এই তালিকা অনুযায়ী দেখা যায় সবচেয়ে ফাঁকি দিয়েছে আফগান গ্রিল  ২৩ লাখ ৭১ হাজার টাকা, দরবার ক্যাটারিং ১৫ লাখ ৭৪ হাজার টাকা, টরকা এক্সপ্রেস ২৪ লাখ ৬০ হাজার, পাঞ্জাব কিচেন ১৪ লাখ ৪ হাজার, থাই এমারেল্ড ১৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকা, এবসলিউট থাই ১২ লাখ ৫৩ হাজার, সিলান্ট্রো ১২ লাখ ৫৯ হাজার, পিৎজা গাই ১২ লাখ ১৯ হাজার এবং আলফ্রেসকো ১১ লাখ টাকা।

মোট ৩৬টি রেস্টুরেন্ট ২ কোটি ৬০ লাখ ৫৫ হাজার ৯৬০ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছেন।

ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে প্রত্যেকটি রেস্টুরেন্টকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা দায়েরের কার্যক্রম চলমান।  

একই সঙ্গে ভবিষ্যতে ভ্যাট ফাঁকি রোধে শেফ’স টেবিলের প্রতিটি রেস্টুরেন্টে ইলেকট্রনিক ফিসকাল ডিভাইস প্রবর্তনের জন্য ভ্যাট গোয়েন্দা ঢাকা উত্তর কমিশনারেটকে অনুরোধ করেছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৫১ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২১
এসএমএকে/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।