ঢাকা: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারঘোষিত আটদিনের লকডাউনের প্রথম কার্যদিবসে ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকের ভিড় নেই। ব্যাংকে আসার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রাহক পাচ্ছেন সেবা।
১৪ এপ্রিল শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ব্যাংকের শাখা ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। তবে জনসাধারণ ও লেনদেনের গুরুত্ব বিবেচনা করে ব্যাংকগুলোর বিভিন্ন এলাকায় শাখা খোলা রয়েছে।
ব্যাংক এশিয়ার বসুন্ধরা শাখার অপারেশন্স ম্যানেজার এবিএম শাহিদুল হক বলেন, লকডাউনের মধ্যে ব্যাংক খোলা থাকলেও গ্রাহকের লম্বা লাইন নেই। ব্যাংকে আসার ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই সেবা পাচ্ছেন। ক্যাশ কাউন্টারের সামনে হাতে গোনা কয়েকজন গ্রাহক সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অপেক্ষা করছেন।
মতিঝিলে রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় টাকা জমা দিয়ে বের হয়ে আনিসুর রহমান বলেন, লকডাউন শুরুর আগের দিন যে পরিমাণ ভিড় ছিল আজ তার অর্ধেকও নেই। সাধারণ সময়ের মতো গ্রাহকের উপস্থিতি। কমও না আবার বেশিও না।
সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ কাউন্টারের সামনে কোনো গ্রাহক নেই। দু-একটি কাউন্টারে একজন করে গ্রাহক লেনদেন কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন।
সোনালী ব্যাংকের একজন ক্যাশ অফিসার বলেন, গ্রাহকের কোনো চাপ নেই। যে আসছেন সেবা নিয়ে চলে যাচ্ছেন। কাউকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে না।
রূপালী ব্যাংক মতিঝিল শাখার মহাব্যবস্থাপক খান মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গ্রাহক লেনদেন সম্পন্ন করছেন। শাখায় প্রবেশের আগে গ্রাহকের হাত স্যানিটাইজড করানো হচ্ছে।
এর আগে ১৩ এপ্রিল সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ব্যাংকের লেনদেন চালু রাখার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বলা হয়েছে, বিধি-নিষেধ চলাকালে ব্যাংকের স্থানীয় শাখাসহ সব অনুমোদিত ডিলার (এডি) শাখা ও জেলা সদরে অবস্থিত ব্যাংকের প্রধান শাখা খোলা রাখতে হবে।
সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতি দুই কিলোমিটারের মধ্যে একটি একটি (এডি শাখা না থাকলে) খোলা রাখতে হবে। এসময় উপজেলা পর্যায়ে কার্যরত প্রতিটি ব্যাংকের একটি শাখা রোববার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার খোলা রাখতে হবে। ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ অফিসে আনা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিধি-নিষেধ চলাকালে যে সব শাখা বন্ধ থাকবে সে সব শাখার গ্রাহকসেবা কার্যক্রম খোলা রাখা শাখার মাধ্যমে সম্পাদনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। বন্ধ শাখার গ্রাহকদের গ্রাহকসেবা প্রাপ্তির বিষয়ে অবহিত করতে উক্ত শাখার দৃশ্যমান স্থানে তা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রদর্শন নিশ্চিত করতে হবে।
গ্রাহকদের হিসাবে সব ধরনের জমা এবং উত্তোলন, ডিমান্ড ড্রাফট/পে-অর্ডার ইস্যু ও জমা গ্রহণ, ট্রেজারি চালান গ্রহণ, সরকারের বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের আওতায় প্রদত্ত ভাতা/অনুদান বিতরণ, বৈদেশিক রেমিট্যান্সের অর্থ পরিশোধ, অভ্যন্তরীণ ও আন্তঃশাখা অর্থ স্থানান্তর, এনআরবি বন্ডে এবং বিভিন্ন প্রকার জাতীয় সঞ্চয় সার্টিফিকেটের মেয়াদপূর্তিতে নগদায়ন ও কুপনের অর্থ পরিশোধ, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ইউটিলিটি (যথা: গ্যাস/পানি/বিদ্যুৎ/টেলিফোন) বিল গ্রহণসহ বাংলাদেশ ব্যাংক চালু রাখা বিভিন্ন পেমেন্ট সিস্টেমের/ক্লিয়ারিং ব্যবস্থার আওতাধীন অন্য লেনদেন সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
সমুদ্র/স্থল/বিমানবন্দর এলাকায় (পোর্ট ও কাস্টমস এলাকা) অবস্থিত ব্যাংকের শাখা/উপ-শাখা/বুথসমূহ সার্বক্ষণিক খোলা রাখার বিষয়ে ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট জারি করা ডিওএস সার্কুলার অনুসারে স্থানীয় প্রশাসনসহ বন্দর/কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাক্রমে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের লেনদেন সময়সূচি ও কার্যক্রম বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো নিজ বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেবে।
এটিএম ও কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন চালু রাখার সুবিধার্থে এটিএম বুথগুলোতে পর্যাপ্ত নোট সরবরাহসহ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা সার্বক্ষণিক চালু রাখার ব্যবস্থা ও এটিএম বুথগুলোতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা/স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ব্যাংকের সান্ধ্যকালীন ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সাপ্তাহিক ছুটিকালীন ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২১
এসই/এএ