রাজশাহী: রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। তাই শেষ সময়ে ভিড় বেড়েছে রাজশাহীর মসলার বাজারে।
আর ঈদুল ফিতরের দিনে সেমাই দিয়েই সবাইকে আপ্যায়ন করা হয়। তাই অতিথি আপ্যায়নে কমবেশি সবার ঘরেই বিভিন্ন ধরনের খাবারের সঙ্গে থাকে সেমাই, ফিরনিসহ অন্যান্য আয়োজন। রমজানের প্রথম দিক থেকে ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকেন ক্রেতারা। তবে এ করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও অনেকের ঈদের পোশাক কেনা শেষ। তাই শেষ মুহূর্তে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে মসলার বাজারে।
মসলা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রমজানের শেষ দিনে সেমাই চিনি ও মসলা ছাড়াও গুঁড়ো দুধ, ঘি, সয়াবিন তেল, নারকেল, সুগন্ধি চাল, কিসমিস, বাদাম, কাজু বাদাম, পেস্তা বাদামসহ বিভিন্ন আইটেমের পণ্য বিক্রি করছেন তারা। সকাল থেকেই বেচাকেনা দ্বিগুণ বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ মে) মহানগরীর সাহেব বাজারে গিয়ে দেখা যায়, লাচ্ছা সেমাইয়ের দোকানগুলোতে বিক্রি জমে উঠেছে। ভিড় বেড়েছে মসলার দোকানেও। চাহিদা বাড়ায় এসব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। রমজানের মধ্যে কিছুটা কমলেও ঈদকে সামনে রেখে শেষ দিনে আবারও কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে চিনির দাম। সঙ্গে পোলাওয়ের চালও বেশি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ক্রেতারা মাছ ও মাংসের বাজারেও যাচ্ছেন। এ বাজারে সাদা লাচ্ছা সেমাই কেজি ১২০ টাকা, লাল লাচ্চার কেজি ১৪০ টাকা, স্পেশাল লাচ্ছা ২২০ টাকা, প্যাকেটজাত লাচ্ছা সেমাই ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা, খিল সেমাই ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা প্রতি কেজি পোলাওয়ের চাল ৮৫ ও প্যাকেটজাত ১১০ টাকা। আর চিনির কেজি ৭০ টাকা।
এছাড়াও ঈদ উপলক্ষে সেমাইও বিক্রি হচ্ছে বেলীফুলের মিষ্টির দোকানে। ডালডা ভাজা সেমাই প্রতিকেজি ২২০ টাকা, ঘিয়ে ভাজা প্যাকেটজাত সেমাই ২০০ থেকে ২২০ টাকা, স্পেশাল ঘি সেমাই ৭২০ টাকা দরে বিক্রে হচ্ছে।
এদিকে ঈদের আগ মুহূর্তে রাজশাহীতে বেড়ে গেছে বিভিন্ন ধরনের মসলার দাম। অন্য পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকলেও খুচরা ও পাইকারি বাজারে বাড়তি মসলার দাম। বাড়তি দামে হতাশ ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, লকডাউনের কারণে আমদানি তুলনামূলক কম। তাই দাম বাড়তি।
খুচরা ও পাইকারি মসলার বাজার ঘুরে দেখা যায়, দারুচিনির দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৯০ টাকা। লংয়ের দাম কেজিতে ২০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা। এলাচের দাম কেজিপ্রতি ২০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকা। খুচরা বাজারে জিরার দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৮৫ টাকা।
সাহেব বাজারে মসলা কিনতে আসা ক্রেতা জহিরুল ইসলাম বলেন, লকডাউনের আগে এক দফা মসলার দাম বেড়েছে। এরপর রোজার আগে একবার বেড়েছে। আবার ঈদের আগ মুহূর্তে বাড়লো। এভাবে দাম বাড়ায় মধ্য ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষদের সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। তিনি নিজেই আগের চেয়ে মসলা খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন- বলেও মন্তব্য করেন এ ক্রেতা।
নগরের মেসার্স টনি ট্রেডার্সের মালিক টনি আহমেদ বলেন, লকডাউনের কারণে আমদানি কমে গেছে। আর আমদানি কমে যাওয়ার কারণে মসলার দাম বেড়েছে। এতে তাদের করার কিছু নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমদানি বাড়বে। তখন দামও কমবে বলে মন্তব্য করেন এ ব্যবাসয়ী।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৬ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২১
এসএস/আরআইএস