ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

এক দশকে বিনিয়োগকারীদের স্বস্তির ঈদ

এস এম এ কালাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৫ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২১
এক দশকে বিনিয়োগকারীদের স্বস্তির ঈদ

ঢাকা: করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশ যখন ‘লকডাউনের’ মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ঠিক সেই সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে গত এক দশকের মধ্য সবচেয়ে ভালো ঈদ উদযাপন করছেন পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। রমজান মাসে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো সময় পার করেছেন বিনিয়োগকারীসহ বাজার সংশ্লিষ্টরা।

বুধবার (১২ মে) একাধিক বিনিয়োগকারী ও বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

তারা বলছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ এবং মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেও ব্যবসা-বাণিজ্য অনেকটাই স্থবির থাকলেও পুঁজিবাজারের চিত্র ছিল পুরোটাই উল্টো।

শুধু তাই নয়, পুঁজিবাজারের মূল সমস্যা ছিল আস্থার সংকট। আস্থার সংকটের কারণেই বাজার এতো দিন ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নিয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বেশকিছু সাহসী পদক্ষেপ নেয়। বিএসইসির এমন ভূমিকায় পুঁজিবাজারের ওপর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসে। এতে করে বাজার স্থিতিশীল রয়েছে।

এ ব্যাপারে মা সিকিউরিটিজ হাউজের বিনিয়োগকারী মশিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ২০১০ সালের পর থেকে কোনো রমজানেই বাজার ভালো ছিল না। বিনিয়োগকারীরা প্রফিট করতে পারেনি। সেল প্রেসার থাকায় মার্কেট বরাবরই নেতিবাচক ছিল। যা বিনিয়োগকারীদের হতাশ করেছিল, কিন্তু ব্যাংকের সুদ হার কমে যাওয়ায় মানুষ বিনিয়োগের জায়গায় হিসেবে পুঁজিবাজারকে বেঁছে নিয়েছে। একইসঙ্গে বর্তমান কমিশনের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা থাকায় লকডাউন ও রমজানেও রমরমা ছিল বাজার।

বিএসইসির নানা পদক্ষেপের ফলে পুঁজিবাজারে সুদিন ফিরে এসেছে এবং লোকসান কাটিয়ে বিনিয়োগকারীরা মুনাফার মুখ দেখছেন। ২০১০ সালের পর কোনো ঈদে বিনিয়োগকারীর জন্য স্বস্তির ছিল না। এবারের ঈদ হবে বিনিয়োগকাীদের স্বস্তির ঈদ, স্বপ্নের ঈদ বলে জানালেন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেন, এক দশক পর বিনিয়োগকারীরা পরিবার নিয়ে আনন্দের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করবে। শুধু তাই নয় রমজানে শেয়ারবাজারে টানা উত্থান হয়েছে। এতে করে কমিশনের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরো বেড়েছে। পুঁজিবাজার নিয়ে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন বিনিয়োগকারীরা বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এদিকে বাজার ইতিবাচক থাকায় সিকিউরিটিজ হাউজের কর্মকর্তা, কর্মচারীদেরও ভালো ঈদ কাটবে বলে জানিয়েছেন একাধিক ব্রোকারেজ হাউজের প্রতিনিধিরা। ঈদের আগে প্রত্যেকটি হাউজ তাদের কর্মচারীদের বেতন ও বোনাস পরিশোধ করেছেন।  

এ ব্যাপারে মা সিকিউরিটিজের ট্রেডার হুমায়ুন বলেন, আমাদের হাউজের সবার বেতন ও বোনাস নির্ধারিত সময়ে হয়েছে। পরিবার নিয়ে আমরা এবার ঈদটা ভালোভাবে উদযাপন করবো বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এদিকে বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২ রমজান (১৫ এপ্রিল) লেনদেন শুরুর আগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ২৫৮ পয়েন্ট। ঈদের আগে শেষ কার্যদিবসে (১২ মে) সেটি ৫ হাজার ৭৫০ পয়েন্টে অবস্থান করে। অর্থাৎ ১৯ কার্যদিবসে সূচকটি ৫০২ পয়েন্ট বেড়েছে। এ সময়ের অন্য সূচকের মধ্যে ডিএসইর শরীয়াহ সূচক ৭৭ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৮৯ পয়েন্ট বেড়ে যথাক্রমে ১২৭৫ ও ২১৮৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

শুধু তাই নয়, রমজান মাসে ১৯ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৩১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা। ২ রমজান (১৫ এপ্রিল) লেনদেন শুরুর আগে ডিএসই বাজার মূলধন ছিল ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকা। ঈদের আগে শেষ কার্যদিবসে (১২ মে) সেটি বেড়ে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৯৪০ কোটি টাকায় অবস্থান করছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেও ব্যবসা-বাণিজ্য অনেকটাই স্থবির থাকলেও শেয়ারবাজারে ইতিবাচক রয়েছে।

তারা বলছেন, শেয়ারবাজারের মূল সমস্যা ছিল আস্থার সংকট। আস্থার সংকটের কারণেই শেয়ারবাজার এতো দিন ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নিয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বেশকিছু সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিএসইসির এমন ভূমিকায় শেয়ারবাজারের ওপর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরেছে এ কারণেই লকডাউন ও রমজানের মধ্যেও রমরমা ছিল পুঁজিবাজার।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৪ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২১
এসএমএকে/ওএইচ/
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।