ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাগেরহাটে কোরবানির পশুর দাম নিয়ে শঙ্কায় খামারিরা

এস. এস সোহান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২১
বাগেরহাটে কোরবানির পশুর দাম নিয়ে শঙ্কায় খামারিরা

বাগেরহাট: আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির জন্য বাগেরহাটে ৩৭ হাজার পশু প্রস্তুত রয়েছে। শেষ মুহূর্তে পশুর যত্নে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা।

মোটাতাজাকরণের পাশাপাশি তরতাজা দেখতে বিভিন্ন খাবার খাওয়াচ্ছেন খামারিরা। তবে করোনা পরিস্থিতিতে ন্যায্য মূল্য নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা।  

অনেকে লোকসানেও বিক্রি করছেন পরম যত্নে লালিত পশুকে। তবে প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে শঙ্কার কিছু নেই গতানুগতিক হাটের পাশাপাশি অনলাইনেও পশু বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বাগেরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ সূত্রে জানা যায়, আসন্ন কোরবানি উপলক্ষে বাগেরহাট জেলায় ৩৬ হাজার ৯৮৫টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে ২৫ হাজার ৮৩১টি গরু, ৯ হাজার ৪৮৩ ছাগল, এক হাজার ৬২৩ ভেড়া, মহিষ ও অন্যান্য ৪৮টি। তবে প্রাণিসম্পদের পরিসংখ্যানের চেয়ে কোরবানির জন্য মোটাতাজাকরণ পশুর সংখ্যা আরো বেশি বলে দাবি করেছেন খামারিরা।

বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার শুকদেব মজুমদার বলেন, প্রতিবছরই কোরবানির জন্য দু একটি ষাঁড় লালন-পালন করি। একটি বড় গরু পালন করেছি তিন বছর ধরে, যার ওজন এখন ১২০০ কেজি। করোনা পরিস্থিতিতে বিক্রি করতে পারব কিনা জানি না।

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের সোহেল শেখ বলেন, কোরবানির জন্য প্রতিবছরই আমরা গরু পালন করি। এবারও আমার একটি গরু রয়েছে। অন্যান্য বছর কোরবানির এক মাস আগে থেকে ব্যাপারী ও ক্রেতারা দাম বলা শুরু করে। কিন্তু এ বছর এখনও কেউ দাম বলেনি।

বাগেরহাট সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের ফতেপুর এ্যাগ্রো ফার্মের মালিক ইলিয়াছ মোল্লা বলেন, আমার ফার্মে ৫ থেকে ৮ মণ ওজনের ১৫টি গরু রয়েছে। এখনো একটিও বিক্রি করতে পারিনি। ব্যাপারীও আসে না। অনলাইনে মোবাইল নাম্বার দিয়ে ছবি পোস্ট করেছি, কিন্তু কেউ ফোনও করে না। এই পরিস্থিতি থাকলে উপযুক্ত দামে গরু বিক্রি করতে পারব কিনা তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

বাগেরহাট সদর উপজেলার গোটাপাড়া এলাকার খামারি রুহুল আমিন গাজী বলেন, গরু লালন পালনই আমার পেশা। প্রতিবছর ৪-৫টি গরু বিক্রি করি। এ বছর বিক্রির উপযোগী ৬টি গরু রয়েছে। দুই একজন ক্রেতা আসেন, তা যে দাম বলেন তাতে খাবারের ব্যয়ও উঠবে না। উপযুক্ত দামে বিক্রি করতে না পাড়লে আমাদের পথে বসতে হবে।

শুধু ইলিয়াছ মোল্লা, রুহুল আমিন গাজী নয়, বাগেরহাট জেলার বেশিরভাগ পশুর খামারি একই রকম শঙ্কায় রয়েছেন।

বাগেরহাট জেলা প্রাণিসম্পাদ কর্মকর্তা ডা. লুৎফার রহমান বলেন, বাগেরহাটে ৩০ থেকে ৩২ হাজার কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে। চাহিদার থেকে প্রায় ৫ হাজার বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য জেলা ও বড়বড় শহরে বাগেরহাটের পশু বিক্রি হবে। খামারিদের সুবিধার জন্য প্রতি উপজেলায় আমরা অনলাইনে পশু বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছি। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী হাট বসানোর জন্যও আমাদের প্রস্তুতি চলছে। বাগেরহাট জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যত দ্রুত সম্ভব কোথায় কোথায় হাট হবে বিষয়টি খামারিদের জানিয়ে দেওয়া হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪২ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।