ঢাকা: ঋণের সুদহার অপরিবর্তিত থাকায় এবং আমানতের সুদ কমে যাওয়ার কারণে ২০২১ সালের মে স্প্রেড (ঋণ-আমানতের সুদহারের ব্যবধান) উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
চলতি বছরের মে মাসে তফসিলি ব্যাংকগুলোর ঋণ ও আমানতের সুদ হারের (স্প্রেড) গড় ব্যবধান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ২৬ শতাংশে, যা আগের মাস এপ্রিলে ছিল ৩ দশমিক ০৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ঋণের সুদ হার ৭ দশমিক ৪০ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকলে আমানতের সুদ হার ২০২১ সালের মে মাসে ছিল ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ। আমানতের সুদহার এপ্রিল মাসেও ছিল ৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
ব্যাংকাররা বলেছেন, ব্যাংকিং খাতে বিপুল পরিমাণ আমানত থাকার কারণে অধিকাংশ ব্যাংক তাদের সব ধরনের আমানতের সুদ হার কমিয়েছে। এতে আমানতকারীগণ বিশেষ করে ক্ষুদ্র আমানতকারীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
একটি শীর্ষস্থানীয় ঋণ বিতরণকারী ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, অর্থনীতির ওপর মুদ্রাস্ফীতির চাপ সমন্বয় করার কারণে আমানতের মোট মূল্য ধীরে ধীরে হ্রাস পেয়েছে।
অপর দিকে, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুসারে, ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) ২০২১ সালের মে মাসে বার্ষিক গড় ভিত্তিতে ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশে নেমে এসেছে, যা আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৬০ শতাংশ।
আমানতের সুদ হার কমার এই ধারা অব্যাহত থাকলে আমানত শেয়ার বাজারের পাশাপাশি জাতীয় সঞ্চয়পত্রের দিকেও চলে যাবে বলে ব্যাংকাররা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
তারা আরও পুর্বাভাস দিয়েছেন, সামনের দিনগুলোতে আমানতের সুদহার কমার ধারা অব্যহত থাকলে সার্বিক ভাবে ঋণ-আমানতের সুদহারের ব্যবধান (স্প্রেড) আরও বাড়তে পারে।
চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে ঋণের চাহিদা (বিশেষ করে বেসরকারি খাতে) কমার ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী মাসে নতুন আমানতের সুদের হার আরও কমবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন ব্যাংকাররা।
আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে ২০২১ সালের মে মাসে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশে। দেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আসার আগে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ।
ব্যবসায়ীরা সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে ধীরে চলো কৌশল অবলম্বন করায় বেসরকারি খাতে ঋণের পতনের ধারা অব্যাহত ছিল বলে ব্যাখ্যা করেছেন ব্যাংকাররা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২১
এসই