ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

খুলনায় চুইঝালের দাম দ্বিগুণ!

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২১
খুলনায় চুইঝালের দাম দ্বিগুণ! চুইঝাল। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: খুলনার সব থেকে ঐতিহ্যবাহী মসলা চুইঝাল। এবার কোরবানির ঈদের বাজারে চুইঝালের দাম আকাশছোঁয়া।

স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে মসলাটি। চুইঝালের এত মূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষিপ্ত সাধারণ ক্রেতারা।

তারা বলছেন, খুলনাঞ্চলের চুই সারা দেশে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। যার কারণে দিন দিন চাহিদা বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে দামও। যদিও রসনা বিলাসের এ মসলাটির দাম বৃদ্ধির পরও দেদারছে কিনছেন ভোজন রসিকরা।

সোমবার (১৯ জুলাই) সকালে বড় বাজারে আসা হেলাল হোসেন নামের এক ক্রেতা বলেন, রসনাবিলাসী খুলনাবাসীর কোরবানি ঈদ চুইঝাল ছাড়া চলেই না। ঈদকে সামনে রেখে চুইঝালের দাম চড়া। ব্যবসায়ীরা এই মৌসুমে চুইঝালের দাম বাড়িয়ে দেয় দ্বিগুণ। তারপরও আছে ভেজাল। খুলনার চুই বলে পাহাড়ি ও মিয়ানমারের চুই দিয়ে দেয়। খুলনাঞ্চলের চুইয়ের চেয়ে ভালো স্বাদের চুই আর কোথাও হয় না। তাই অনেকে না জেনে ভুল চুই কিনছে। জানা যায়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর, নড়াইল ও বাগেরহাট, এলাকায় জনপ্রিয় একটি মসলা হলো চুইঝাল। বর্তমানে দেশের অন্যান্য জেলাতেও মসলা হিসেবে এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এ অঞ্চলে মাংস রান্নার এক অন্যতম অনুষঙ্গ চুই ঝাল। গরু কিংবা খাসির মাংসে যেন এক আলাদা স্বাদ এনে দেয় চুই ঝাল। নামেই বোঝা যায় এটি স্বাদে ঝাল, কিন্তু এই ঝাল একটু আলাদা। এর রয়েছে একটি আলাদা গন্ধ যা তরকারি বা রান্না মাংসে আনে আলাদা এক আমেজ। মাংসের স্বাদ বাড়ানোর জন্য চুই ঝাল ব্যবহারের প্রচলন যুগ যুগ ধরে। যে কারণে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চুই ঝালের দাম বেড়ে যায়। খুলনার সবচেয়ে বেশি বাণিজ্যিকভাবে চুই ঝালের চাষ হয় ডুমুরিয়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকায়।


চুইঝাল মূলত তিন ধরনের হয়ে থাকে,

এঁটো চুই: গাছের মোথা বা মূলের অংশটিকে এঁটো চুই বলে। এটি সব থেকে ভালো এবং সুস্বাদু, গালে দিলে একদম গলে যায়। এর দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় শহরাঞ্চলে খুব বেশি পাওয়া যায় না।

গাছ চুই: মোটা ডাল বা কাণ্ডগুলোকে গাছ চুই বলে। এটাও বেশ সুস্বাদু। সহজে গলে যায় বিধায় এই চুইয়েরও রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা।

ডাল চুই: গাছের সরু ডাল বা কাণ্ডকে ডাল চুই বলে। এগুলোতে আঁশের পরিমাণ বেশি থাকে। স্বাদের ভিন্নতার কারণে অনেকেই এই ধরনের চুই পছন্দ করেন।
খুলনার বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনাঞ্চলের চুইঝাল ৪০০-১৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সন্ধ্যাবাজারের চুইঝাল বিক্রেতা আবু বক্কর সিদ্দীক বলেন, কোরবানি ঈদ এলে সবচেয়ে বেশি চাহিদা বাড়ে চুইঝালের। তার ব্যতিক্রম নেই এবারও। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দামও বেড়ে গেছে।  

অনলাইনেও খুলনার চুইঝাল বিক্রি চলছে। এ প্রসঙ্গে অনলাইনে চুইঝাল বিক্রেতা উড়ার স্বত্বাধিকারী শরিফুল ইসলাম হিরণ বাংলানিউজকে বলেন, কোরবানির সময় চুইঝালের চাহিদা অনেক গুণ বেড়ে গেছে। খুলনার চুইঝালের সুনাম সুখ্যাতি রয়েছে সারা দেশে। যে কারণে বিভিন্ন জেলা থেকে চুইঝালের অর্ডার পেয়ে সরবরাহ করেছি।

তিনি বলেন, অন্যবারের তুলনায় এবার চুইঝালের চাহিদা বেশি। চুইঝালের দাম প্রকারভেদে ৮০০-১৬০০ টাকা কেজি। গতবছরের তুলনায় এবার দামও একটু বেশি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২১
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।