ঢাকা: আমার পরিচয়, অস্তিত্ব, অহংকার। আমার স্বপ্ন পূরণের স্থান।
দেশের শীর্ষ স্থানীয় একটি ব্র্যান্ড, যার উদ্যোক্তাও এ মাটির-ই সন্তান এবং এর পণ্যও তৈরি হয় এ দেশেই। যেখানে কাজও করেন দেশীয় শ্রমিকেরা। এ দেশের উদ্যোক্তারা যে ইলেকট্রনিক্সের মতো উচ্চ প্রযুক্তির গুণগত পণ্য উৎপাদন করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে দেশের সীমানা পেরিয়ে বাইরে যেতে পারেন, মানুষের আস্থা ও ভালোবাসার জায়গা দখল করতে পারেন, তা প্রমাণ করেছে মিনিস্টার- মাইওয়ান গ্রুপ।
শুরুটা হয়েছিল ২০০২ সালে। পাঁচ জন কর্মচারী নিয়ে সাদাকালো টেলিভিশনের মাধ্যমে মিনিস্টার ইলেকট্রনিক্স বাজারে যাত্রা শুরু করে। লক্ষ্য ছিল দেশের মানুষের আস্থাও ভালোবাসার ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে উঠা। আর সেই লক্ষ্য পূরণে বেশি সময় নিতে হয়নি প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা এম এ রাজ্জাক খান রাজকে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি, শুধু ছিল সামনে তাকানোর পালা। শুরুটা সাদাকালো টেলিভিশন দিয়ে হলেও বর্তমানে মিনিস্টারের প্রোডাকশন লাইনে রয়েছে রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এয়ার কন্ডিশনার, এলইডি টিভি, স্মার্ট এলইডি টিভি, ব্লেন্ডার, গ্রিন্ডার, রাইস কুকার, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ওয়াশিং মেশিন, ইলেক্ট্রিক ক্যাটলি, গ্যাস বার্নার, ইন্ডাকশন কুকার, ফ্রাইপেন, ফ্যান, আয়রন, স্ট্যাবিলাইজারসহ ২০ টিরও বেশি পণ্য। যার প্রতিটি ইলেকট্রনিক্স পণ্যই রয়েছে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী প্রযুক্তি এবং অধিক টেকসই এর নিশ্চয়তা। এছাড়াও সম্প্রতি কোম্পানিটি হিউম্যান কেয়ার ও টয়লেট্রিজ পণ্য বাজারজাতকরণ করা শুরু করেছে। যার মধ্যে রয়েছে “সেইফটি প্লাস”, “ব্রাইট ওয়াস”, "ওয়ান ওয়াস",“চাঁদ”, “হেক্সিন”, “কেয়ার অ্যান্ড কেয়ার” ও “ফ্ল্যাশ” ব্র্যান্ড নামে প্রোডাক্টসমূহ আলাদা করা হয়েছে। “সেইফটি প্লাস” এর মধ্যে হ্যান্ড ওয়াস, গ্লাস ক্লিনার, ফ্লোর ক্লিনার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ভেজি ওয়াস অন্তর্ভুক্ত। “ব্রাইট ওয়াস” এর অধীনে ডিটারজেন্ট পাউডার, লিকুইড ডিটারজেন্ট রয়েছে। “চাঁদ” এর অধীনে থাকবে ফেব্রিক ব্রাইটেনার (ব্লু), ডিশ ওয়াস লিকুইড, ডিশ ওয়াস বার। “হেক্সিন” এর মধ্যে থাকবে হ্যান্ড রাব, হ্যান্ড সেনিটেইজার স্প্রে। “কেয়ার অ্যান্ড কেয়ার”এর অধীনে থাকছে বডি ওয়াস, বডি লোশন, পেট্রোলিয়াম জেলি। “ফ্ল্যাশ” এর অধীনে থাকবে টয়লেট ক্লিনার, টয়লেট ক্লিন পাউডার, বাথরুম ক্লিনার।
গাজীপুরের ধীরাশ্রমে ও ময়মনসিংহের ত্রিশালে সবুজ অরণ্যে সুবিশাল পরিসরে গড়ে উঠেছে মিনিস্টার গ্রুপের ২টি কারখানা। যেখানে প্রতিনিয়তই চাহিদা মোতাবেক উৎপাদন হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের ফ্রিজ, টেলিভিশন ও এসি। মিনিস্টারের এসব পণ্যের রয়েছে আলাদা স্পেসিফিকেশন, আকৃতি, ডিজাইন যার প্রতিটি পণ্যের বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভর করেই দামের রয়েছে ভিন্নতা।
ফ্রিজ, টেলিভিশন, এসি, গৃহস্থালি বিভিন্ন সরঞ্জাম, ইলেকট্রিক পণ্যসহ মিনিস্টারের সব পণ্যই বাংলাদেশেই তৈরি হয়। স্বচক্ষে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মিনিস্টার নিজের পণ্যের নকশা ও উন্নয়ন নিজেই করে থাকে। গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগে রয়েছে তাদের বিশাল দক্ষ কর্মীবাহিনী। মিনিস্টারের কারখানায় পুরুষ কর্মীদের পাশাপাশি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন অসংখ্য নারী কর্মীরাও।
মিনিস্টার গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআই এর সহ-সভাপতি এম এ রাজ্জাক খান রাজ বলেন, দেশের বাজারে তাদের পণ্য বিক্রি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। দেশের মানুষ আমাদের ব্র্যান্ডকে ভালোবেসেছে। আমরাও তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমরা দেশের মানুষের এই ভালোবাসাকে ধরে রাখতে চাই। আসলে আমরা নিজেদের শীর্ষস্থানীয় ভাবি না, মনে করি এ দেশের আর পাঁচটি কোম্পানির মতোই। আমি মনে করি ‘একটি দেশে আপনি শুধু মুনাফা করে ব্যবসায় টিকে থাকতে পারবেন না। সমাজের সঙ্গে মিশে যেতে হবে, সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে। মানুষের ভালোবাসা পেতে হবে। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করেছি। আমার আত্মবিশ্বাস, মানুষকে সেবা করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমরা আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবো।
তিনি আরও বলেন, “আমরা সফলতার সাথে ১৯ বছর পার করলাম এবং এই সফলতার পেছনের সব থেকে বড় অবদান ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার। তার সহযোগিতায় আজ আমরা দেশীয় ভাবেই সব ধরনের পণ্য বাজারে নিয়ে আসতে পেরেছি। প্রতিষ্ঠার পর অল্পদিনেই দেশের সুপরিচিত ব্যান্ড হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করি এবং দেড় যুগ পেরিয়েও সেই জনপ্রিয়তা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে আমাদের কর্মীরা। ”
করোনার শুরু থেকেই মিনিস্টারের হাজারো কর্মী মাঠে নিরলস কাজ করে চলেছেন। তাছাড়া লকডাউনে থমকে গেছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সবাইকে ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে জনসমাগম এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আর সে কারণে মিনিস্টার গ্রুপ চালু করেছে অনলাইন বুকিং সুবিধা। সহজ কিস্তিসহ ক্যাশ অন ডেলিভারি ও অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে ঘরে বসেই অর্ডার করে পাওয়া যাচ্ছে মিনিস্টারের পণ্য।
মিনিস্টার গ্রুপ শুধু যে পণ্য উৎপাদন কিংবা বিক্রির কাজই করে না পাশাপাশি নানা ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কর্মসূচি পালন করে থাকে। যার একটি উদাহরণ হলো, করোনা প্রতিরোধে দেশের মানুষের মাঝে সচেতনতার বৃদ্ধির পাশাপাশি করোনা মহামারির শুরু থেকেই গরিব-দুস্থদের মধ্যে খাদ্য সরবরাহ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
এছাড়া মানুষের কাছে জরুরি চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সম্প্রতি মিনিস্টার গ্রুপের কর্ণধার এম এ রাজ্জাক খান রাজ চুয়াডাঙ্গায় তার নিজ বাসভবনকে (খান মহল) জরুরি মেডিক্যাল সেবাকেন্দ্রে রূপান্তর করেছেন। এই সেবা পর্যায়ক্রমে সারাদেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মিনিস্টার গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক খান রাজ।
বৈশ্বিক বাজারে ইলেকট্রনিক্সের অনেক বড় বড় কোম্পানির নাম রয়েছে। পৃথিবীর আনাচেকানাচে বিশ্বখ্যাত এসব ব্র্যান্ডের পণ্য সুপরিচিত, বাংলাদেশেও সহজলভ্য। কিন্তু এ দেশে বাজার দখলের লড়াইয়ে সবাইকে টেক্কা দিচ্ছে মিনিস্টার। অন্য ইলেকট্রনিক পণ্যেও কম যায় না তারা।
বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয়। পোশাক ছাড়াও নতুন যে ক'টি খাত উঠে আসছে, তার মধ্যে ইলেকট্রনিক্স অন্যতম। এ খাতে নতুন একটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড হয়ে উঠতে নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছে ভবিষ্যত সম্ভাবনাময় মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপ।
বাংলাদেশ সময়: ২৩২০ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২১
আরআইএস