ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ইভ্যালির গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে চাই: বিচারপতি মানিক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২১
ইভ্যালির গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে চাই: বিচারপতি মানিক

ঢাকা: ইভ্যালির যেসব গ্রাহক পণ্য বা টাকা ফেরত পাননি তাদের টাকা ফেরতে ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছেন উচ্চ আদালতের নিয়োগপ্রাপ্ত কোম্পানিটির নতুন চেয়ারম্যান বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।

সোমবার (১৮ অক্টোবর) ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় বোর্ড গঠনের পর এমন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারপতি।

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমি মাত্র খবরটি পেলাম। এখনও কাগজপত্র পাইনি। তাছাড়া অন্য যে চারজন রয়েছেন তাদের সঙ্গেও আমার প্রাথমিক আলাপ হয়নি। তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে হবে। তারপর আমাদের মতামত ব্যক্ত করতে পারবো। ঠিক এ মুহূর্তে মতামত ব্যক্ত করার অবস্থানে আমি নেই।

‘তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে যেটা চাইবো, আমার মনে হয় অন্য চারজন বিজ্ঞ সদস্য যদি এগ্রি করেন তাহলে ইভ্যালিকে একটি ভায়াবল (টেকসই) বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করার চেষ্টা হবে সর্বোত্তম। পাশাপাশি যারা এখানে টাকা লগ্নি করেছেন, যাদের পয়সা হারিয়ে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা শুরু হয়েছিল তাদের পয়সা যতখানি সম্ভব রক্ষা করে ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা। এ বিষয়গুলো ভাবতে পারছি। পরে সবার সঙ্গে আলাপ করে বিস্তারিত জানাবো। ’ 

সোমবার ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনায় আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে (চেয়ারম্যান) বোর্ড গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।  

বোর্ডে থাকবেন, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো.রেজাউল আহসান, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফখরুদ্দিন আহমেদ ও আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ থাকবেন। আর সরকারি বেতনে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে থাকবেন অতিরিক্ত সচিব (ওএসডি) মাহবুব কবির।  

এর আগে, ইভ্যালির দুই কর্ণধার কারাবন্দি থাকার প্রেক্ষাপটে নতুন একটি বোর্ড গঠনে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, অবসরপ্রাপ্ত সচিব, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ও একজন আইনজীবীর সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিলেন হাইকোর্ট।

পরে সাবেক তিন সচিবের নাম আদালতে দাখিল করেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এম মাছুম ও সৈয়দ মাহসিব হোসেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও প্রতিযোগিতা কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তাপস কান্তি বল।  

এক গ্রাহকের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব ধরনের সম্পদ বিক্রি এবং হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর এক আদেশে ১২ অক্টোবরের মধ্যে ইভ্যালির নথিপত্র আদালতে দাখিল করতে রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী নথি দাখিল করা হয়।  

আবেদনের পর ২২ সেপ্টেম্বর আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন জানিয়েছিলেন, আবেদনকারী ইভ্যালি অনলাইন শপিংমলে মে মাসে একটি ইলেকট্রনিকস পণ্যের অর্ডার করেন।

অর্ডারের সময় তিনি মোবাইলফোন ভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবার মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করেছেন। এরপর কোম্পানিটি অনলাইনে তাকে একটি পণ্য কেনার রশিদও দিয়েছেন। কিন্তু এতদিনেও তারা পণ্যটি বুঝিয়ে দেয়নি। আবেদনকারী যোগাযোগ করার পর তাকে আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু পণ্যটি দেয়নি কিংবা টাকাও ফেরত দেয়নি ইভ্যালি। যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি আবেদনকারী। তাই তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। আবেদনে কোম্পানিটির অবসায়ন চাওয়া হয়েছে।

তার আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত আবেদনটি অ্যাডমিট করেন। এছাড়া আদেশে ইভ্যালির যত সম্পদ রয়েছে, সেটা যেন বিক্রি অথবা হস্তান্তর না করা যায়। আদালত একটি নোটিশ ইস্যু করেন, কেন ইভ্যালিকে অবসায়ন করা হবে না।

আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে-ইভ্যালি লিমিটেড, রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস, বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নগদ, বিকাশ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, ই-ক্যাব অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বেসিস, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য সচিবকে।

ইভ্যালির বোর্ডপ্রধান বিচারপতি মানিক

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২১
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।