বরিশাল: দেশের বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেডের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীরকে একাধিকবার হত্যাচেষ্টায় গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন বরিশালের ব্যবসায়ী নেতারা। সেই সঙ্গে তারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে পরিকল্পনাকারীসহ জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
বরিশাল ডিস্ট্রিক্ট উইমেন বিজনেস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রেবেকা সুলতানা বাংলানিউজকে বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ হচ্ছে দেশের বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী। এ গ্রুপের এমডিকে হত্যার চেষ্টা খুবই দুঃখজনক। তার সঙ্গেই যদি এমন হয়, তাহলে আমাদের মতো ব্যবসায়ীরাও তো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে। আমি চাই এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় এনে প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বরিশালের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মিরাজ মাহমুদ বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ হলো বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী। তারা দেশে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, বিশেষ করে মুড়ি, টিস্যুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করে থাকে। এ কারণে বাংলাদেশে অনেকগুলো পণ্যের দাম আমাদের সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে আছে। আর এগুলো বিদেশি পণ্য হলে অনেক দাম পড়তো।
তিনি বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের কারণে সারাদেশে লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। যাদের রুটি-রুজি এ গ্রুপের মাধ্যমে। সরকারের উচিত ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দেওয়া। বিশেষ করে এ ধরনের বড় ব্যবসায়ী, যারা উন্নয়ন-অগ্রগতির সহায়ক, যারা দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে চালিকা শক্তি, তাদের নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের, তেমনি দেশের স্বার্থে, দেশের জনগণের স্বার্থে এ ধরনের বড় ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দেওয়াও সরকারের দায়িত্ব। সরকার যদি এ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তাহলে যারা বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক তারা ব্যবসায় অনাগ্রহী হবেন এবং ব্যবসা থেকে সরে দাঁড়াবেন।
তিনি বলেন, এ প্রতিষ্ঠানের যিনি কর্ণধার তিনি শুধু একজন শিল্প উদ্যোক্তাই নন, তিনি সাংবাদিক বান্ধবও। তিনি সংবাদপত্র জগতেরই লোক। বাংলাদেশে কয়েক হাজার সাংবাদিকের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করেছে এই গ্রুপ। সুতরাং দেশের কল্যাণে, জনগণের কল্যাণে এ গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীর- যিনি বাংলাদেশে অন্যতম শিল্প উদ্যোক্তা, যিনি ব্যবসায়ীক নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন, খেলাধুলার সঙ্গে ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে আছেন, অসহায় দুঃস্থদের পাশে দাঁড়ান তাকে হত্যাচেষ্টার সঠিক তদন্ত ও জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
তিনি আরও বলেন, করোনাকালীন বসুন্ধরা গ্রুপের যে কর্মকাণ্ড,অন্য কোনো গ্রুপ সাধারণ মানুষের পাশে এভাবে দাঁড়াতে পারেনি। বিশেষ করে তারা প্রত্যন্ত উপজেলা পর্যায়ে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন। আমরা মনে করি এই গ্রুপকে ধ্বংস করার জন্য যে বা যারা তৎপর রয়েছে, যে অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে তাদেরকে অবিলম্বে ধরা হোক, আইনের আওতায় আনা হোক। বাংলাদেশকে একটি ব্যবসা নির্ভর স্ব-নির্ভর দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা সর্বাগ্রে নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আবেদন ও অনুরোধ জানাচ্ছি।
বরিশাল মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি ও এফবিসিসিআইর পরিচালক মো. নিজাম উদ্দিন মৃধা বাংলানিউজকে বলেন, নিঃসন্দেহে এ ধরনের ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক। যারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকুক, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে। সেই সঙ্গে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ইউরোটেল বিডি অনলাইন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম জাকির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ একটি শিল্প গোষ্ঠী। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর একজন মেধাবী ও দক্ষ উদ্যোক্তা। তিনি বাংলাদেশের সম্পদ। তার হাত ধরে দক্ষতার সঙ্গে দেশে নতুন নতুন আরও ব্যবসা-শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রসার ঘটেছে। দেশের বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে এ ধরনের শিল্প উদ্যোক্তাদের সরকারের দেখভাল করা উচিত। যাতে তাদের মনোবল না ভাঙে। আর এমন একজন বিজনেস আইকন ও স্বনামধন্য ব্যক্তিকে হত্যার চেষ্টা খুবই দুঃখজনক। ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা না ঘটে সে জন্য জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।
আর ঘটনার তদন্ত করে এর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন লঞ্চ মালিক ও বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০২১
এমএস/এমএমজেড