ঢাকা: চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৪ শতাংশ বেড়েছে।
তবে খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাজনিত লকডাউন শিথিল করার কারণে বিগত মাসগুলোতে পোশাকের ব্যবহার ও চাহিদা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো প্রকাশিত সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মাসের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মাসে পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২২ দশমিক ৯ শতাংশ।
২০২১ সালের নভেম্বর মাসে পোশাক রপ্তানি ৩২ দশমিক ৩৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে নিটওয়্যার খাতে প্রবৃদ্ধি ৩৩ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং ওভেন খাতে প্রবৃদ্ধি ৩১ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
গত তিন মাসের প্রবৃদ্ধির ধারা ইতিবাচক হলেও এই প্রবৃদ্ধি স্থায়ী নাও হতে পারে। কারণ করোনাজনিত লকডাউন শিথিল করার কারণে বিগত মাসগুলোতে পোশাকের ব্যবহার ও চাহিদা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২১ সালের নভেম্বর মাসের রপ্তানি আয়ের দিকে তাকালে দেখা যায়, এ সময়ে ৩ দশমিক ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের পোশাক রপ্তানি হয়েছে, অর্থাৎ ৩২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০২০ সালের নভেম্বরে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ২০২১ সালের অক্টোবরে ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করেছি এবং নভেম্বরে সেটি ৩ দশমিক ২ ডলারে নেমে এসেছে। যদিও সাধারণত একই বছরের পর পর মাসের রপ্তানির মধ্যে তুলনা করা হয় না, কেননা এটি অনেক সময় বিভ্রান্তির সৃষ্টি করতে পারে।
তিনি বলেন, টেক্সটাইল, ডাইস ও রাসায়নিকসহ অন্যান্য কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া দরকার। ফ্রেইট খরচ রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। এটা স্পষ্ট যে, রপ্তানি মূল্যের যে আপাত বৃদ্ধি হয়েছে, তা মূলত কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি জনিত ব্যয়কে সমন্বয় করেছে। সুতরাং যে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি আমরা দেখতে পাচ্ছি, তা কোনভাবেই প্রকৃত প্রবৃদ্ধি নয়।
বিজিএমইএ পরিচালক আরও বলেন, যদিও বিগত কয়েক মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে, এটি ভুলে গেলে চলবে না যে, আমাদের কারখানাগুলো অতিমারির ক্ষয়ক্ষতি এখনও পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ওমিক্রন নামক নতুন ভ্যারিয়েন্টের আগমনে বৈশ্বিক অর্থনীতি ইতোমধ্যেই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। করোনার প্রথম ঢেউ থেকেই ক্রেতারা সতর্ক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে, এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সময়ের সাথে সাথে এই কড়াকড়ি আরও বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলো তাদের খুচরা বাজারের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বেশ ভালো সময় নেবে, যা আমাদের জন্য বড় দুঃশ্চিন্তার কারণ।
তিনি বলেন, গত বছরের মতো এ বছরেও বড়দিনের বিক্রি ক্ষতিগ্রস্ত হলে কারখানাগুলো তাদের উৎপাদন চালিয়ে নিতে হুমকির মধ্যে পড়বে।
মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, এটি অবশ্যই অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে, বিগত কয়েক মাসে আমরা রপ্তানির প্রবৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু কোনভাবেই প্রকৃত অবস্থা ভুল ব্যাখ্যার কোনো সুযোগ নেই। বরং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সামনের দিনগুলোতে যেকোনো ধরনের ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আমাদের অতি সতর্ক হতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০২১
এসই/এমজেএফ