ফেনী: ফেনীর পরশুরামের বিলোনিয়া স্থলবন্দর দিয়ে দীর্ঘ এক যুগ পর দ্বিমুখী বাণিজ্য চালু হচ্ছে। কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারের কুমিল্লার কমিশনার মো. বেলাল হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা গেছে।
স্থল শুল্ক স্টেশন বিলোনিয়া দিয়ে আমদানি-নিষিদ্ধ পণ্য ছাড়া সব ধরনের পণ্য আমদানির অনুমতি সংক্রান্ত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিলোনিয়া শুল্ক স্টেশন একটি সম্ভাবনাময় কাস্টমস স্টেশন। বিলোনিয়া স্থলবন্দর থেকে পরিবহন উপযোগী সুপরিসর রাস্তা নির্মিত হয়েছে। বিলোনিয়ায় কাস্টমসের বড় স্থাপনা ও পর্যাপ্ত জমি রয়েছে।
অদূর ভবিষ্যতে এখানে রেল লাইন চালু হবে। তাই এ স্টেশন দিয়ে আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য ছাড়া সব ধরনের পণ্য আমদানির অনুমতির জন্য সব আমদানি ও রপ্তানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের বলা হয়েছে। ভবিষ্যতে বিলোনিয়া স্থলবন্দর দিয়ে বৃহৎ পরিসরে আমদানি-রপ্তানির জন্য এবং সব ধরনের পণ্য আমদানি করার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
গত ৪ নভেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য জাকিয়া সুলতানা ফেনীর বিলোনিয়া স্থলবন্দর পরিদর্শন করেছেন। এ সময় এনবিআর সদস্য জাকিয়া সুলতানা কাস্টমস, বন্দর, ইমিগ্রেশনসহ বিলোনিয়া স্থলবন্দরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন।
এ সময় তিনি বন্দরের অবকাঠামো, ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়ে খোঁজখবর নেন।
আমদানি-রপ্তানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফের সভাপতি ও কুমিল্লা চেম্বার অ্যান্ড কমার্সের সহ-সভাপতি জামাল আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, এ বন্দর দিয়ে নিষিদ্ধ পণ্য ব্যতীত সব ধরনের পণ্য আমদানির অনুমতির দাবি দীর্ঘদিনের।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে আমদানিকারকরা পণ্য আমদানি করার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।
বিলোনিয়া স্থলবন্দর চালুর পর থেকে একমুখী বাণিজ্য চলে আসছিল। বাংলাদেশ-ভারতের বাণিজ্য সুবিধা বাড়াতে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ফেনীর বিলোনিয়া শুল্কবন্দর ২০০৯ সালের ৪ অক্টোবর স্থলবন্দর হিসেবে কার্যক্রম শুরু করা হয়। দেশের ১৭তম স্থলবন্দর হিসেবে বিলোনিয়া স্থলবন্দর আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়।
স্থলবন্দরটিতে বর্তমানে একজন ল্যান্ড কাস্টমস কর্মকর্তা, একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও দু’জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। ইট, পাথর, সিমেন্ট, রড, রপ্তানি হচ্ছে ভারতে। অন্যদিকে ভারত থেকে গবাদিপশু, মাছের পোনা, তাজা ফলমূল, কাঠ, বীজ, কয়লা, গম, চুনাপাথর, পেঁয়াজ, মরিচ, হলুদ ও আদা আমদানির অনুমোদন থাকলেও দীর্ঘ এক যুগ ধরে শুধু একমুখী বাণিজ্য চলে আসছিল।
আমদানিকারকরা জানান, অবকাঠামোর দিক থেকে এ স্থলবন্দর এখনো ততটা পূর্ণতা অর্জন করতে পারেনি। এ কারণে ভারতের ব্যবসায়ীরা এ বন্দর দিয়ে বাণিজ্যের জন্য তেমন আগ্রহী হয়ে উঠছে না।
বিলোনিয়া স্থলবন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও ব্যবসায়ী মো. ইব্রাহিম জানান, দ্বিমুখী বাণিজ্যের কথা শুনে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। দ্বিমুখী বাণিজ্য শুরু হলে বন্দর পূর্ণতা পাবে।
ল্যান্ড কাস্টমস কর্মকর্তা মো. ইফতেখারুল আলম বাংলানিউজকে জানান, দ্বিমুখী আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চললে বন্দরের পরিপূর্ণতা আসবে। ইতোমধ্যে বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০২১
এসএইচডি/আরআইএস