ঢাকা: জমে উঠেছে দেশের আবাসন খাতের সবচেয়ে বড় বাৎসরিক মেলা রিহ্যাব ফেয়ার-২০২১। মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান প্লট ও ফ্ল্যাটের ওপর বিশেষ ছাড় দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে।
এবারের মেলায় বড় ফ্ল্যাটের চেয়ে মাঝারি সাইজের ফ্ল্যাটের চাহিদা বেশি। মধ্যবিত্ত পরিবারের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মাঝারি সাইজের ফ্ল্যাট।
রোববার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত রিহ্যাব ফেয়ার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
ক্রেতা-বিক্রেতারা জানিয়েছেন, মেলায় মাঝারি সাইজের ফ্ল্যাটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান মাঝারি ফ্ল্যাট বেশি সংখ্যক নিয়ে এসেছে এবারের মেলায়। মধ্যবিত্ত পরিবারের চাহিদা মেটাতে এই আয়োজন বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
এ ব্যাপারে স্কাইভিউ ফাউন্ডেশন লিমিটেডের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাহি উদ্দিন সরকার বাংলানিউজকে বলেন, এবারের মেলায় সবচেয়ে বেশি অর্ডার বা বিক্রি হচ্ছে মাঝারি সাইজের ফ্ল্যাট। বিশেষ করে ১২০০ থেকে ১৫০০ এবং সর্বোচ্চ ২০০০ স্কয়ার ফুটের ফ্ল্যাট। মধ্যবিত্ত পরিবারের চাহিদা মেটাতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এই সাইজের ফ্ল্যাট মেলায় বেশি নিয়ে এসেছে।
মেলা শেষ হতে আর মাত্র একদিন বাকি থাকায় সকাল থেকেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ। মেলায় সামর্থ্যের মধ্যে পছন্দের ফ্ল্যাট খুঁজছেন ক্রেতারা।
মিরপুর ১ নম্বর সেকশন থেকে পরিবার নিয়ে মেলায় এসেছেন আমিনুল ইসলাম। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, দুই দিন আগে একা মেলায় এসে ফ্ল্যাট দেখে গেছি। আজ পরিবার নিয়ে এসেছি যাচাই-বাছাই করে ফ্ল্যাট বুকিং দেব।
তিনি আরও বলেন, ১২০০ থেকে ১৫০০ স্কয়ার ফুটের ফ্ল্যাট বুকিং দেব। ১০০০ স্কয়ার ফুটের ফ্ল্যাট দেখেছি, পছন্দও হয়েছে। তবে এটা তো আর বারে বারে কেনা সম্ভব নয়, তাই কষ্ট হলেও মাঝারি সাইজের ফ্ল্যাট কিনব।
প্রতি বছর মেলায় শেষের দিনগুলোতে ভিড় বাড়ে। তবে গত বছর করোনার কারণে রিহ্যাব ফেয়ার আয়োজন সম্ভব হয়নি। এ বছর তাই ক্রেতাদের ভিড় অনেকটা বেশি বলে জানালেন রাজবাড়ী হোল্ডিংস লিমিটেডের প্রতিনিধি শেখ সেজানুর রহমান। তিনি বলেন, মেলায় আমরা ভালো সাড়া পাচ্ছি। বরাবরের মতোই মাঝারি সাইজের ফ্ল্যাটের চাহিদা একটু বেশি।
রিহ্যাবের প্রথম সহ-সভাপতি কামাল মাহমুদ বলেন, গত দুই বছর আমরা মেলা আয়োজন করতে পারিনি। এ বছর প্রচুর ক্রেতা আসছেন। গত তিনদিনে ১২ হাজার প্রবেশ টিকিট বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ১০ হাজারই ক্রেতা। মেলায় ৮০ শতাংশ ক্রেতাই মাঝারি (১২০০-১৫০০) ফ্ল্যাট নিচ্ছেন। ৫০ লাখ টাকা থেকে ১ কোটি টাকার মধ্যে এই ফ্ল্যাট কিনতে পারছেন, যেটা মেলা ছাড়া সম্ভব না। এছাড়া একজন ক্রেতার মেলায় এসে ১০টা দেখে একটা নেওয়ার সুযোগ থাকে।
তিনি আরও বলেন, প্রতি বছরই মেলা থেকে আমরা ভালো সাড়া পাই, এবারো পাচ্ছি। করোনার মধ্যে এই সেক্টরে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছিল, এই মেলা থেকে আশা করছি আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব।
কামাল মাহমুদ বলেন, এবারের মেলায় প্রায় ১৫০টি আবাসন প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। মেলায় রয়েছে ২২০টি স্টল। এছাড়া মেলায় ১৫টি নির্মাণসামগ্রী এবং ৩০টি ব্যাংক ও আর্থিকপ্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। যতবার আয়োজন করি, সাড়া পাই। করোনাকালের সংকট কাটিয়ে উঠতে অনেক প্রতিষ্ঠান প্লট কিংবা ফ্লাট বুকিংয়ে দিচ্ছে বিশেষ ছাড়।
মেলায় ঘুরে ঘুরে সাধ আর সাধ্যের মধ্যে ফ্লাট পছন্দ করেন দর্শনার্থীরা। কেউ কেউ বুকিংও দিচ্ছেন মেলায় এসে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকছে, চলবে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মেলায় প্রবেশের টিকিট মূল্য ৫০ টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২১
এসএমএকে/এমজেএফ