ঢাকা: কোভিড-১৯ মহামারি ও অন্যান্য কারণে গ্রামে ফিরে যাওয়া জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনে ‘ঘরে ফেরা’ নামে ৫০০ কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তিন বছর মেয়াদে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ সুদে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করতে পারবে ব্যাংকগুলো।
তবে গ্রাহক পর্যায় থেকে আদায় কার্যক্রম স্কিমের মেয়াদ পরবর্তী সময়েও অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব অর্থায়নের এই তহবিলের পরিমাণ প্রয়োজনে আরও বৃদ্ধি করা হবে।
স্বল্প পুঁজির স্থানীয় ব্যবসা, পরিবহনখাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি যানবাহন ক্রয়, ক্ষুদ্র প্রকৌশল শিল্প, মৎস্য চাষ, গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি পালন, তথ্য প্রযুক্তি সেবাকেন্দ্র ও অন্যান্য সেবা উৎসারী কার্যক্রম, বসতঘর নির্মাণ বা সংস্কার, সবজি ও ফলের বাগান, কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় ও ফসল বিপণন ছাড়াও গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতিসঞ্চার করে এমন কার্যক্রম; যেমন ছোট ছোট ব্যবসা, বিশেষ করে ধান ভাঙানো, চিড়া ও মুড়ি তৈরি, নৌকা ক্রয়, মৌমাছি পালন, সেলাই মেশিন ক্রয়, কৃত্রিম গহনা তৈরি, মোমবাতি তৈরি, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও দরিদ্র মহিলাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় এমন ক্ষেত্রে এই স্কিমের আওতায় ঋণ পাবে। তবে সরকারি সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা অগ্রাধিকার পাবেন।
সোমবার (৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংক এবিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করে দেশে কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছে।
২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও গ্রাহক পর্যায় থেকে আদায় কার্যক্রম স্কিমের মেয়াদ পরবর্তী সময়েও অব্যাহত থাকবে। রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংক, বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে যেসব ব্যাংক আলোচ্য কর্মসূচিতে অংশ নিতে ইচ্ছুক তারাও কৃষি ঋণ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আগেই আবেদন করতে হবে।
ঋণ বিতরণকারী ব্যাংকগুলো শাখা, উপশাখা, এজেন্ট, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণ ও আদায় করতে পারবে। প্রয়োজনে আউটসোর্সিং ফেসিলিটেটর (শাখা প্রতি একজন) নিয়োগ করে তাদের মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ মঞ্জুরীর জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা গ্রহণসহ ঋণ আদায় কার্যক্রমে ফেসিলিটেটরের সহায়তা নিতে পারবে। তবে, এ ঋণ প্রদান কার্যক্রমে এনজিও, ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠান বা অনুরূপ অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে ফেসিলিটেটর এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করতে পারবে। এই স্কিমের আওতায় ঋণ গ্রহণকারী খেলাপি না হলে ঋণ পরিশোধের পর পুনরায় নতুন ঋণ নিতে পারবে। এ স্কিমের আওতায় গৃহীত ঋণ কোনোভাবেই গ্রাহকের পুরাতন ঋণ সমন্বয়ের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।
এ স্কিমের আওতায় অংশগ্রহণকারী ব্যাংকসমূহ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নির্ধারিত ০.৫ শতাংশ সুদে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে। গ্রাহক পর্যায়ে সুদহার হবে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ (সরল সুদহারে)। ওই সুদহার সব গ্রাহকের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। এ স্কিমের আওতায় ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো নিরাপত্তা জামানত নেওয়া যাবে না। এই স্কিমের আওতায় বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে নারী ঋণ গ্রহিতা, উদ্যোক্তাদেরকে ন্যূনতম ১০ শতাংশ ঋণ দিতে হবে। ২ লাখ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণে ৩ মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ পরিশোধের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ২৪ মাস। ২ লাখ টাকার বেশি তবে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণে ৬ মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ পরিশোধের সময় হবে সর্বোচ্চ ৩৬ মাস।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০২২
এসই/এমজেএফ