ঢাকা: বাংলাদেশে খুচরা বাজারের প্রায় ৯৮ শতাংশ কেনা-বেচা হয়ে থাকে দেশজুড়ে পাড়ায় পাড়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ৪৫ লাখেরও বেশি মুদি দোকানের মাধ্যমে। একাধিক সাপ্লাইয়ার, ডিস্ট্রিবিউটর এবং পাইকারদের কাছ থেকে পণ্য সংগ্রহের সময়ে এই দোকানগুলো প্রতিনিয়ত অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়।
পণ্যের স্বল্পতা, মূল্যমানের অনিশ্চয়তা, এবং পূর্ণাঙ্গ ডেলিভারি সহায়তার অভাবে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম ব্যাহত হয় প্রতিদিন। এছাড়া প্রায় ৭৩ শতাংশ খুচরা বিক্রেতা বাকিতে পণ্য বিক্রি করে কিন্তু মাত্র ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ঋণ সংগ্রহ করতে পারে। এই মৌলিক সমস্যাগুলো বাধা হয়ে দাঁড়ায় ক্ষুদ্র ব্যবসার পথচলায়। এসব সমস্যার সমাধানে খুচরা বিক্রেতাদের জন্য সব ধরনের পণ্য নিয়ে ডিসেম্বর ২০১৯-এ যাত্রা শুরু করে বিটুবি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম মোকাম।
মোকামে অর্ডারের পরদিনই পাড়ার মুদি দোকানের দোরগোড়ায় পৌঁছে যায় পণ্যের সমাহার। এটি সম্ভব করতে মোকাম দেশের বৃহত্তম উৎপাদনকারী এবং পরিবেশকদের সাথে চুক্তিতে গিয়ে নিশ্চিত করে ঠিক দামে সব পণ্য। এছাড়াও দোকারিরা একই অ্যাপের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ না করেই বাকিতে পণ্য ক্রয় করতে পারে।
বর্তমানে দেশের ৬০টির বেশি জেলায় নিরবচ্ছিন্ন পণ্য সরবরাহ করছে মোকাম। যেকোনো প্রাকৃতিক দূর্যোগ কিংবা লকডাউনেও মোকাম নিশ্চিত করে দোকানির দোরগোড়ায় কাঙ্ক্ষিত পণ্যের নিশ্চয়তা। আর এরই স্বীকৃতি স্বরুপ অতি সম্প্রতি, দেশের সেরা বিটুবি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের সম্মাননা অর্জন করে মোকাম। এছাড়া, গ্লোবাল ইকোনমিক্স থেকে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধমান বিটুবি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের স্বীকৃতিও পায় মোকাম।
এত কম সময়ে মোকামের এত অর্জনের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতা এবং মোকাম পার্টনারদের। তাই তাঁদের স্বীকৃতি দিতেই সম্প্রতি মোকাম পরিবার মেলা নামে একটি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মোকাম। ঢাকার পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা এবং মোকাম পার্টনারদের একটি ইয়ামাহা এফজেড, তিনটি ইয়ামাহা স্যালুটো, দুটি ১১০ ও ১৫০ সিসি বাইক, দুটি আইফোন ১৩, পাঁচটি ঢাকা-নেপাল-ঢাকা ট্যুর প্যাকেজ, পাঁচটি ৫জি স্মার্টফোন, এগারোটি ৪জি স্মার্টফোন, এবং পাঁচ তারকা হোটেলে ডিনারসহ, প্রাইজবন্ড তুলে দেওয়া হয়। ২৭ জানুয়ারি গুলশানের স্পেকট্রা কনভেনশন সেন্টারে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে ৩৯জন খুচরা বিক্রেতা, পাইকারি বিক্রেতা এবং মোকাম পার্টনারদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
বাইক জেতার অনুভূতি জানাতে গিয়ে মোকামের মিরপুর এলাকার ব্যবসায়িক পার্টনার মোহাম্মদ সুমন আহমেদ বলেন, মোকামের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করার পর আমার ব্যবসা আগের চেয়ে লাভজনক হয়ে উঠেছে। মোকামের উত্তরোত্তর ব্যবসায়িক সমৃদ্ধি কামনা করি। এমন আয়োজন আমাদের আরও ভালোভাবে ব্যবসা করে যাওয়ার অনুপ্রেরণা যোগাবে।
উল্লেখ্য যে, মোকাম দেশীয় স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান শপআপের একটি উদ্যোগ। শপআপের মোট বিনিয়োগ ১১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা দেশের ইতিহাসে স্টার্ট-আপে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ। গতবছর, শপআপ ৭৫ মিলিয়ন ডলারের ‘সিরিজ বি’ বিনিয়োগ পায় যা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রযুক্তি ভিত্তিক বিটুবি প্ল্যাটফর্মের জন্য সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ।
মোকামের চিফ অব স্টাফ জিয়াউল হক বলেন, খুচরা বিক্রেতাদের জীবনকে বদলে দেওয়ার যে প্রত্যয়ে মোকামের যাত্রা শুরু তা বাস্তবায়নে আরও এগিয়ে যেতে চাই আমরা। খুচরা, পাইকারি বিক্রেতা আর মোকাম পার্টনার সবাইকে নিয়েই আমাদের মোকাম পরিবার’।
মোকাম দেশীয় স্টার্টআপ শপআপের একটি উদ্যোগ মোকাম। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে যাত্রা শুরু হয় মোকামের। বর্তমানে দেশের ৬০টি জেলায় বিস্তৃত মোকামের কার্যক্রম। করোনা মহামারিতে মোকামের সেবার ফলে মুদি দোকানিরা তাদের স্বাভাবিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পেরেছিল এবং দেশব্যাপী অসংখ্য কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। মোকাম সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://mokam.com.bd/
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২২
এএটি