ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাজারে এলেই দেখি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে!

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৭ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২২
বাজারে এলেই দেখি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে!

ঢাকা: কখন যে কোন পণ্যের দাম বাড়ে বোঝা যায় না। বাজারে এলেই দেখি জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে! এক লিটার তেল ৯৫ থেকে ১০০ টাকা দিয়ে কিনতাম, এখন ১৭৫-১৮০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে।

চালের দাম বেড়েছে, সবকিছুর দাম বেড়েছে—এমন হলে মানুষ তো আর চলতে পারবে না—ক্ষোভ প্রকাশ করে এসব কথা বলছিলেন রাজধানীর মতিঝিলের এজিবি কলোনি বাজারের এক ক্রেতা।

অন্যদিকে পাইকারি বিক্রেতা ও আড়তদারদের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন খুচরা বিক্রেতারা। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পাইকারি বিক্রেতারা জিনিসপত্র মজুদ রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ তাদের।

মজুতদারদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হলে নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে বলে খুচরা বিক্রেতারা মনে করেন।

শনিবার (১২ মার্চ) রাজধানীর মতিঝিল এজিবি কলোনি বাজারে কথা হয় ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে।

খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভালোমানের চাল প্রতি কেজি ৭৬ টাকা, মিনিকেট ৬৮ টাকা এবং নিম্নমানের চালও কেজি প্রতি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেল ৫ লিটারের বোতল ৮০০ টাকা এবং এক লিটারের বোতল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। ছোলা ৮০ টাকা, পেঁয়াজ ৬৫ টাকা কেজি। রসুনের দাম ১২০ টাকা থেকে বেড়ে ১৪০ টাকা হয়েছে। গত সপ্তাহে যে সাইজের মুরগির দাম ৩০০ টাকা ছিল, সেটা বেড়ে ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদি দোকানদার সালাউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, চালের পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, মিলে চাল সংকট, মিল থেকে দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে পাইকারি দামও বেড়ে গেছে বলে তারা আমাদের বলছেন। বেশি দামে কিনে তো আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। সয়াবিন তেল পাইকারি বিক্রেতারা অনেকে মজুদ করে ফেলেছেন। তেল আনতে গেলে তার সঙ্গে অন্য আরও একটা বা দুইটা জিনিস না কিনলে পাইকারি বাজার থেকে তেল কেনা যাচ্ছে না।

ওই দোকানদারের সঙ্গে কথা বলার সময় দেখা গেল, ৫ লিটারের এক বোতল তেল কিনলেন একজন ক্রেতা। এর পর তিনি জানান, আমার দোকানে এই এক বোতল তেলই ছিল, এখন আর সারাদিন আমি তেল বিক্রি করতে পারব না।

ওই ক্রেতা জানালেন, তিনি আরও দুটি দোকান ঘুরে এসেছেন, তেল পাননি।

আরেক খুচরা বিক্রেতা মমিনুল জানালেন, তার দোকানে কোনো তেল নেই। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, যেসব পাইকার ও আড়তদাররা তেল মজুদ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হলে এই ধরনের সংকট বা অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি আর কখনো হবে না।

তিনি আরও বলেন, সব সিন্ডিকেট করে মাল মজুদ করে রেখেছে। আমরা পাচ্ছি না। এদের ধরলে আর কোনোদিন এরকম হবে না।

আরেক বিক্রেতা নয়ন জানালেন, চাল, তেল, ডাল, পেঁয়াজ সবকিছুই আমরা পাইকারি মার্কেট থেকে আনি। কিন্তু সেখানে যদি দাম বাড়ায়, আমরা যারা খুচরা বিক্রি করি, তারা কী করবে।

মুরগি দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতা নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা কী করবো? আমরা পাইকারি বাজার থেকে আনি। তারা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, তারা বলে খামারিরা দাম বাড়িয়েছে।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস উঠছে ক্রেতাদের। পণ্যের দাম দেখে তারা হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। ক্রেতারা অভিযোগ করেন, ব্যবসায়ীদের কারণে এভাবে দিন দিন প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়ছে।

চাকরিজীবী রাকিব বলেন, কখন যে কোন পণ্যের দাম বাড়ে বোঝা যায় না। বাজারে এলেই দেখি জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে! এক লিটার তেল ৯৫ থেকে ১০০ টাকা দিয়ে কিনতাম, এখন ১৭৫-১৮০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। চালের দাম বেড়েছে, সবকিছুর দাম বেড়েছে—এমন হলে মানুষ তো আর চলতে পারবে না!

রুনা নামে আরেক ক্রেতা বলেন, কোন জিনিসের দাম বাড়ে নাই? সব জিনিসের দাম বেড়েছে। কিছুই কেনা যায় না; চাল-ডাল-তেল সবকিছুরই দাম বাড়ছে। সামনে রোজার মাসে পণ্যের দাম আরও বাড়বে। সবসময় রোজায় জিনিসের দাম বাড়ে। এবার আগে থেকেই বাড়া শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২২
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।