ঢাকা: ভোজ্যতেল সয়াবিনের দাম লিটারে ৮ টাকা কমানো হয়েছে। নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৬০ টাকা হয়েছে, যা আগে ছিল ১৬৮ টাকা।
রোববার (২০ মার্চ) বিকেলে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে তেল আমদানিকারক ও রিফাইনারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
তিনি জানান, আজকে তেল রিফাইনারি ও আমদানিকারক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে সয়াবিন তেলের দাম কমানো হয়েছে। নতুন দাম প্রতি লিটার বোতলজাত তেল ১৬০ টাকা, ৫ লিটার বোতলজাত তেল ৭৬০ টাকা এবং খোলা সয়াবিন ১৩৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে পাম অয়েলের দাম আগামী ২২ তারিখে নির্ধারণ করা হবে বলে জানান তপন কান্তি ঘোষ।
নতুন দাম অনুযায়ী সয়াবিনের দাম, খুচরা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা কমিয়ে ১৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বোতলজাত ৫ লিটার তেলের দাম ৩৫ টাকা কমে হয়েছে ৭৬০ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের দাম ৭ টাকা কমিয়ে ১৩৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৬৮ টাকা, ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৭৯৫ টাকা এবং খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১৪৩ টাকা।
বাণিজ্যসচিব বলেন, আগামীকাল থেকে মিলগেটে এই মূল্য কার্যকর হবে। তবে ভোক্তা পর্যায়ে কার্যকর হতে আরও পাঁচ-ছয়দিন সময় লাগতে পারে। পবিত্র ঈদুল ফিতর পর্যন্ত এই দাম বহাল থাকবে। আমাদের রিফাইনারির সবাই এ বিষয়ে একমত হয়েছেন। আমরা আবার মে মাসে বসবো, বসে আন্তর্জাতিক বাজার দেখে এক মাসের গড় নিয়ে মূল্য পুনর্নির্ধারণ করা হবে।
তিনি বলেন, সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করতে সম্মত হয়েছি। পাম তেলের বিষয়ে আমাদের আরও কিছু তথ্য ও হিসাব নিকাশের দরকার আছে। পাম তেল ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে আসে। সুতরাং আসতে সময় কম লাগে। তাই আন্তর্জাতিক বাজারে যে বর্ধিত দাম সেই তেল বাংলাদেশের বাজারে চলে এসেছে। সেটা কীভাবে সমন্বয় করা যায়, এটার জন্য রিফাইনারি সমিতি এবং প্রতিনিধি যারা ছিলেন, তারা সময় নিয়েছেন। আগামী ২২ মার্চ বসে পাম তেলের দাম নির্ধারণ করা হবে বলেও জানান বাণিজ্য সচিব।
বাজারে যথেষ্ট সয়াবিন ও পাম অয়েল আছে জানিয়ে তপন কান্তি বলেন, ঈদ পর্যন্ত সরবরাহে ঘাটতি হওয়ার কথা নয়। তেল পাওয়া যাচ্ছে না, এটা হয়তো ৮-১০ দিন আগে ছিল। তেল যথেষ্ট এসেছে। গত তিনদিন আগেও ৭৫ হাজার টন তেল এসেছে চট্টগ্রাম বন্দরে। আমার জানা মতে এখন তেলের সংকট নেই। দামও কমে এসেছে এমনিতেও। এখন থেকে উৎপাদকরা ভ্যাটের চালানের পাশাপাশি সাপ্লাই অর্ডারে (এসও) তেলের দাম লেখা থাকবে।
তিনি বলেন, তেলের দামের বিষয়ে আমাদের তদারকি থাকবে এবং রমজান মাস সামনে রেখে আমরা তদারকি আরও বাড়িয়েছি। তেলের ভ্যাট কমানোর কারণে আমরা আজকে দাম অনেকটা কমাতে পারলাম। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম প্রতিনিয়ত বেড়ে যাচ্ছিল। ইদানীং একটু কমেছে। সেটার প্রভাবে আসতে হয়তো আরও সময় লাগবে।
এক কোটি মানুষকে সাশ্রয়ী দামে টিসিবির পণ্য দেওয়ার কারণে ভর্তুকি অনেক বেড়ে যাবে জানিয়ে সচিব বলেন, আমরা রমজানে যে পরিমাণ খাদ্যপণ্য অন্যান্য বছর দিয়ে থাকি, এবার আমরা তা তিনগুণ বাড়িয়ে দিয়েছি। আমরা টিসিবির অপারেশন এভাবে অব্যাহত রাখবো কিনা সেটাও চিন্তা করছি। আমরা সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি এবং তা অব্যাহত থাকবে।
টিকে গ্রুপের ডিরেক্টর মো. মোস্তফা হায়দার বলেন, সবার সঙ্গে সার্বিক আলোচনার মাধ্যমে একটা মূল্যতে এলাম। ঈদ উপলক্ষে সবাই ডিউটি ভ্যাট আগের হারেই দিয়ে দিয়েছি। আমাদের খরচটা হয়ে গেছে। সরকার যে ভ্যাট কমিয়েছে সেটার সাথে সামঞ্জস্য রেখে দাম কমানোর চেষ্টা করেছি। ফলে আমরা যে বাড়তি ভ্যাট ও ট্যাক্স দিয়েছি, ওটা যাতে আমাদের কোনভাবে রিফান্ড করা যায়, এটার প্রতি সরকারকে নজর দিতে বলবো। তাহলে আমাদের ক্ষতিটা হবে না। দেশে পর্যাপ্ত তেল রয়েছে। ঈদ পর্যন্ত কোনো ঘাটতি হবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এ সময় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এসএম শফিকুজ্জামান, এফবিসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট আক্তারুজ্জামান বাবু, সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিত সাহাসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২২/আপডেট: ১৯২৮ ঘণ্টা
জিসিজি/এমজেএফ