ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

অসাধু প্রতিষ্ঠানের জন্য ই-কমার্স ব্যবসা বন্ধ করবে না সরকার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৬ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২২
অসাধু প্রতিষ্ঠানের জন্য ই-কমার্স ব্যবসা বন্ধ করবে না সরকার

ঢাকা: সরকার কিছু অসাধু প্রতিষ্ঠানের জন্য ই কমার্স ব্যবসা বন্ধ করবে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান।

তিনি বলেন, গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য যেসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ৩১ মার্চের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল কমার্স সেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইতিবাচক মনোভাব দেখাবে না তাদের তালিকা আমরা পুলিশের হেডকোয়ার্টারে পাঠাবো আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।

সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শ্রেষ্ঠ.কম এবং আলিফ ওয়ার্ল্ডের পেমেন্ট গেট ওয়েতে গ্রাহকদের আটকে থাকা টাকা ফেরত দেওয়া উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, শ্রেষ্ঠ.কম এবং আলিফ ওয়ার্ল্ডের পেমেন্ট গেট ওয়েতে গ্রাহকদের আটকে থাকা টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে আজকে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল কমার্স সেলের আয়োজনে গ্রাহকদের আটকে থাকা টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে শ্রেষ্ঠ.কম'র ১১ জন গ্রাহকের ১৭ লাখ টাকা এবং আলিফ ওয়ার্ল্ডের ২১ জন গ্রাহকের ২৬ টাকা ফেরত দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, ইকমার্স দেশের জন্যই চালিয়ে যাওয়া হবে। তবে এখন আর আগের মত কেউ এই ব্যবসা নিয়ে যাতে প্রতারণা করতে না পারে সে ব্যপারে নজরদারি রাখছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে যেসব ই কমার্স প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের টাকা ফেরত দিবেনা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমন প্রতিষ্ঠান আছে প্রায় ৩৯টি।

এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে কত টাকা আটকে আছে সেটার সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, সেই অভিযোগগুলো যাতে আমরা নিষ্পত্তি করতে পারি, সে জন্য আমরা একটা চেষ্টা করেছিলাম। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেকে মামলার মধ্যে আছেন। অনেকে লুকিয়ে আছেন, যারা সার্ভিসে আসতে চান না বিভিন্ন ভয়ভীতির কারণে। তাদেরকে আমরা আহ্বান করেছিলাম ৩১ মার্চের মধ্যে আপনারা আসেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ডিজিটাল কমার্স সেল এবং ই-ক্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমরা আপনাদের সাহায্য করতে চাই।

শফিকুজ্জামান বলেন, ৩৪-৩৫টি প্রতিষ্ঠান আছে যারা হয়তো গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারবে। তাদের হয়তো ২০ কোটি টাকার মতো পেন্ডিং আছে, তারা দুই কোটির মতো টাকা ফেরত দিতে পারবে। বাকি টাকা কিভাবে ফেরত দেবে, পরে হয় তো আর একটা জটিলতায় পড়বে, এই একটা ভয় হয়তো কাজ করছে। কিন্তু বিষয়টা হলো তাকে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতেই হবে। সে যদি কামব্যাক করত, বিজনেসে ফিরে আসার জন্য যে সাপোর্টগুলো দরকার আমরা দিতাম।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, ৩১ মার্চের মধ্যে যারা যোগাযোগ করে পজেটিভভাবে অংশগ্রহণ না করবে, আমরা তাদের তালিকাটা পুলিশের হেডকোয়ার্টারসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে দিয়ে দেব। তারা মানুষকে এখনো কোনো আশার বাণী শোনায়নি এবং তারা হয়তো দেশে লুকিয়ে আছে বা গা ঢাকা দিয়ে আছে।

তিনি বলেন, এপ্রিল মাসে আমরা টেকনিক্যাল কমিটির একটা মিটিং করে কঠিন একটা সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি। সেটা হচ্ছে- তাদের বিরুদ্ধে আইনগত যে ব্যবস্থা আছে তা আমাদের সংস্থাগুলো নেবে। কিন্তু যে টাকাগুলো আটকে আছে, পেমেন্ট গেটওয়েগুলোকে আমরা নির্দেশনা দিয়ে দেবে আটকে থাকা টাকা ৭ দিনের মধ্যে যেনে গ্রাহকদের কাছে চলে যায়। সে ক্ষেত্রে কোনো আপত্তি থাকবে না।  

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান পেমেন্ট গেটওয়ে অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করছে, কিন্তু তারা (পেমেন্ট গেটওয়ে অপারেটর) স্লো হয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে অতিরিক্ত সচিব বলেন, কি কারণে তারা কেন স্লো হয়ে যাচ্ছে, তাদের তো স্লো যাওয়ার কথা না। এখানে কি হচ্ছে দেখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে একটা চিঠি দিচ্ছি। আমার পে, সূর্য পে এবং বড় আরও একটি প্রতিষ্ঠান, তাদের বিষয়ে আমাদের দেখা দরকার। এই পেমেন্ট গেটওয়েগুলো যদি হাওয়া হয়ে যায় তাহলে তো আর কিছু থাকবে না। সে জন্য আমরা এ বিষয়ে সতর্ক আছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১২ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২২
জিসিজি/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।