নীলফামারী: উত্তরের ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র নীলফামারীর সৈয়দপুর। হালকা প্রকৌশল থেকে শুরু করে এমন কোনো জিনিস নেই, যা এখানে তৈরি হয় না।
দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে কারখানা সৈয়দপুরে। ওই কারখানা থেকে অবসরে যাওয়া দক্ষ শ্রমিকরাই তৈরি করছেন বিভিন্ন পণ্য। তাদের কারণেই এ উপজেলায় এতো বেশি পণ্য তৈরি সম্ভব হচ্ছে। পণ্যগুলো দেখতে চমৎকার, টেকসই, তুলনামূলকভাবে দামও কম। এখন দরকার শুধু সরকারি সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা।
নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে পুলিশ ক্লাব চত্বরে শুরু হয়েছে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য ও প্রযুক্তি মেলা।
রোববার (২৭ মার্চ) শুরু হওয়া মেলাটি চলবে আগামী ২৯ মার্চ পর্যন্ত। বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতি (বাইশিমাস) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোডাক্ট বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল এ মেলার আয়োজন করেছে।
মেলায় স্থানীয় ছাড়াও দূর-দূরান্তের জেলা থেকে আসছেন শিল্প মালিক, ক্রেতা ও ব্যবহারকারীরা। কেউ আসছেন প্রযুক্তি জানার জন্য।
ঘাস কাটা মেশিন, চানাচুর তৈরির মেশিন, বোতল কর্ক সিলিং, জুস বানানোর মেশিন, নাড়ু বানানোর ডায়েস, সেমাই মেশিন, হাওয়াই মিঠাই বানানোর মেশিন, ময়দার খামির করার মেশিন, উড টার্নিং মেশিন, দাঁত পিনিয়াম, পুলি ও ফ্রাঞ্চ, ভাটার চুলা, বিয়ারিং ব্লক, স্কয়ার ব্লক, পপকর্ন মেশিন, নুডলস মেশিন, ভুট্টা সাইনিং মেশিন, সিট কাটা মেশিন, অফসেট রাবার রোলার, প্লাইউড রাবার রোলার, মিনি স'মিল, জুট মিল, রাইস মিল ও ময়দার মিলের নতুর রোলারসহ নানা ধরনের ক্রোকারিজসহ সৈয়দপুরে তৈরি নানা ধরনের পণ্য মেলায় স্থান পেয়েছে। এবার তৃতীয়বারের মতো এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
বাইশিমাস পরিচালক ও সৈয়দপুর শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি এরশাদ হোসেন পাপ্পু জানান, সৈয়দপুরে দক্ষ শ্রমিক থাকার কারণে এসব পণ্য তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। এ কাজে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও ব্যাংক ঋণের খুব প্রয়োজন। কিন্তু সৈয়দপুরে গড়ে ওঠা বেশির ভাগ শিল্প কারখানা রেলের জায়গায় কিংবা ভাড়া দোকানে গড়ে উঠেছে। ফলে ঋণ মিলছে না।
কথা হয় নিউ মাসুম ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসের মালিক নূরউদ্দিন দুলালের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা সৈয়দপুরের কয়েকটি হালকা শিল্প কারখানায় রেলওয়ের জন্য লুয়ার সিট, ডগ স্পাই, প্যান্ডেল ক্লিপ, রুয়ার সিট, সিগনাল লাইটসহ ট্রেনের হাতল, পাদানি, জানালা, বাথরুম ফিটিংস তৈরি করে সরবরাহ করে আসছি। এসব পণ্য না হলে ট্রেনের চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হতো। এখানে না পেলে বাইরে থেকে এসব পণ্য রেলওয়েকে বেশি দামে কিনতে হতো।
মেলায় ৩০টির মতো শিল্প কারখানা অংশ নিয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে আমেনা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, নাঈম ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, ঈসা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, টু স্টার ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, নিউ মডার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং, এসএমএল মেটাল, জাহাঙ্গীর ইঞ্জিনিয়ারিং, ঢাকা ফাউন্ড্রি, রাজু ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, মডার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং, রেড স্টার, মেসার্স মঈন ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, মেসার্স শামসুদ্দিন ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, মেসার্স আব্দুল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, রাজা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস ও স্টার টেকনিক্যাল ওয়ার্কস।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২২
এসআই