ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

২০ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার বিকল্প বাজেট পেশ অর্থনীতি সমিতির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৫ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২২
২০ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার বিকল্প বাজেট পেশ অর্থনীতি সমিতির অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত

ঢাকা: আগামী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য ২০ লাখ ৫০ হাজার ৩৬ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট পেশ করেছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি।

রোববার (২২ মে) অর্থনীতি সমিতির অডিটোরিয়ামে ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা ২০২২-২৩: একটি জনগণতান্ত্রিক বাজেট প্রস্তাব’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত এ প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম।

আবুল বারকাত বলেন, প্রস্তাবিত জনগণতান্ত্রিক ২০ লাখ ৫০ হাজার ৩৬ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট প্রস্তাব করছি। যা বর্তমান বাজেটের তুলনায় ৩ দশমিক ৪ গুণ বেশি। এতে অভ্যন্তরীণ উৎস রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১৮ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। যেখানে প্রত্যক্ষ করের ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি বৈদেশিক ঋণ ও ব্যাংক ঋণকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের বাজেটে মোট বরাদ্দে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে। এখানে মোট বরাদ্দ বাজেটের ২১ শতাংশ। দ্বিতীয় অগ্রাধিকার খাত হচ্ছে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাত, তৃতীয় হচ্ছে কৃষি। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ সব ধরনের বৈষম্য বেড়েছে। এসব পাল্টাতে হবে, ঝুঁকি হ্রাস করতে হবে। সেজন্য আমরা গবেষণা ও বিজ্ঞান চর্চায় অধিক গুরুত্ব দিয়েছি। গবেষণা উন্নয়নের গুরুত্ব বিবেচনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমরা নতুন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব করছি। যার নাম গবেষণা উদ্ভাবন বিচ্ছুরণ ও উন্নয়ন। এ মন্ত্রণালয়ের জন্য আগামী পাঁচ বছরে পাঁচ লাখ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা বলছি। আরেকটি মন্ত্রণালয়ের কথা আমরা বলেছি, সেটা হলো গণপরিবহন মন্ত্রণালয়।

আবুল বারকাত বলেন, আমরা প্রত্যক্ষ করের ওপর জোর দিতে বলেছি। কারণ পরোক্ষ করের কারণে মানুষে মানুষে বৈষম্য বাড়ে। আমরা প্রস্তাব করছি দরিদ্র, অতি দরিদ্রদের আগামী কয়েক বছরে নেটের বাইরে রাখার।

রাজস্ব আয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের বাজেটের আকার, যা বর্তমান বাজারের ৩.৪ গুণ বেশি। বিকল্প বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১৮ লাখ ৭০ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। যা প্রস্তাবিত বিকল্প বাজেটের ৯২ শতাংশের বেশি। প্রস্তাবিত বাজেটে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আয়ের ৭৭ শতাংশ আসবে প্রত্যক্ষ কর থেকে, বাকিটা পরোক্ষ কর। যেখানে প্রত্যক্ষ কর থেকে আসে মাত্র ৪৬ শতাংশ। বাজেট ঘাটতি ৭ শতাংশ, যা সরকারের চলতি বাজেটে ঘাটতির তুলনায় অনেক কম। বাজেট ঘাটতি পূরণে বৈদেশিক ঋণ কিংবা দেশীয় ব্যাংক থেকে ঋণের প্রয়োজন নেই। সমস্যাটা অর্থনৈতিক হলেও সমাধান তার রাজনৈতিক। বাজেট ঘাটতি পূরণে তিনি কালো টাকা ও বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরতের প্রতি জোর দেন।

মূল্যস্ফীতির প্রসঙ্গে আবুল বারকাত বলেন, বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ৫ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে রাখতে হবে। শর্ত হলো কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে। সরকার মূল্যস্ফীতির যে হিসাব দিচ্ছে তা বাস্তবসম্মত নয়। দ্বিতীয়ত খাদ্য মূল্যস্ফীতি কোনো অবস্থাতে বাড়ানো যাবে না।  

এদিকে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রাথমিকভাবে ছয় লাখ ৭৭ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাবনা তৈরি করেছে সরকার।

নতুন এ বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। আগামী ৯ জুন জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী। এর আগে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের আকার বা মোট ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছিল ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২২
জিসিজি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।